জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নাতনি খিলখিল কাজী। তিনি একজন সংগীত শিল্পী এবং সংগঠক। দাদু নজরুলের সঙ্গে তার ছেলেবেলার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। স্মৃতির কথা বলেছেন খিলখিল কাজী।
তিনি বলেন,’আমার দাদু জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিনের সুন্দর সুন্দর স্মৃতিগুলো কখনো ভুলতে পারব না। তখন আমি আমি খুব ছোট ছিলাম,কিন্তু স্মৃতিগুলো আজও চোখের সামনে ভেসে ওঠে। দাদুর জন্মদিনে আমাদের কলকাতার বাড়িটি ফুলে ফুলে ভরে যেত। সেদিন পুরো ভারত থেকে শিল্পীরা আমাদের বাড়িতে আসতেন। কলকাতা পৌরসভা আমাদের বাড়িতে প্যান্ডেলের ব্যবস্থা করত।’
খিলখিল কাজী বলেন,’শুধু যে নজরুল সংগীতের শিল্পীরা আসতেন তা নয়, সব ধরনের সংগীতের শিল্পীরা আসতেন। সবাই ফুল নিয়ে আসতেন। তারা দাদুকে শুভেচ্ছা জানাতেন। ফুলে ফুলে ভরে যেত আমাদের বাড়ি। আর ফুলের সুবাসে ভরে থাকত চারদিক।’
‘সারাদিন গান হত। ফুল ও গান এ ২ ছিল জন্মদিনের মূল আকর্ষণ। বাবা আমাকে কোলে বসিয়ে রাখতেন। আমি আবৃত্তি করতাম খুকি ও কাঠবিড়ালি বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন,’যখন দাদুর গান হত তখন তিনি খুব খুশি হতেন। দাদুর জন্মদিন তো মধু মাসে। তাই প্রচুর ফলও আসত বাড়িতে। জন্মদিন উপলক্ষে উৎসব উৎসব ভাব থাকত জ্যৈষ্ঠ মাস জুড়ে। নামি দামি দোকান থেকে দাদুর জন্য পোশাকের অর্ডার আসত। দামি জুতা আসত, আমরাও নতুন পোশাক পেতাম।’
খিলখিল কাজী বলেন,’দাদুর জন্মদিনে ছোট চাচার পরিবার আমাদের বাসায় চলে আসত। চুরুলিয়া থেকে সব আত্মীয়রা আসতেন। এখনো সেই দিনগুলো মনের মধ্যে ছবির মতো ভাসে। তাই জন্মদিন এলে দাদুকে ভীষণ মিস করি। এমনিতেও করি। কিন্তু, জন্মদিনে দাদুকে খুব মনে পড়ে।’
তিনি বলেন,’তাকে আমি ছুঁতে পেরেছি। ছোটবেলা আমি তার কাছে ছিলাম। তখন তিনি কথা বলতে পারতেন না। কিন্তু তার সঙ্গে খেলাধুলা করতাম, লুকোচুরি করতাম। নির্বাক হলেও মাকে খুব চিনতেন। আমার মা উমা কাজী দাদুকে খুব যত্ন করতেন। আর বাবা দাদুর চুল কেটে দিতেন,সেভ করে দিতেন। আজ আমার মা বেঁচে নেই,বাবাও চলে গেছেন আগে।’
২৬ মে ২০২২
এজি