বাচ্চা কার, কার বাচ্চা? অফিস ফেরত মানুষের প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে আর সব যান্ত্রিক গর্জনকে উপেক্ষা করে এমন চিৎকার হঠাৎই থমকে দেয় পথচারীদের। টেনে নিয়ে যায় বায়তুল মোকারমের সামনের রাস্তা থেকে ফুটপাতে। তখন সন্ধ্যা, যানজটকে উপেক্ষা করে গাড়ি থেকে নেমে অস্থির চিত্তে হেঁটেই যেন বাড়ি ফিরছেন সবাই।
এমন চিৎকার শুনে কার বাচ্চা হারালো-এ প্রশ্ন জাগতেই পারে। আর সেই প্রশ্নের জের ধরেই কার বাচ্চা হারালো তা দেখার জন্য হাঁকডাককারীর কাছে উৎসুক জনতা ঢু মারছেন। কেউ বা গলা বাড়িয়ে দেখার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এ কি! উৎকণ্ঠা-উদ্বেগ নিমিষেই রূপ নিল বিস্ময়ে। সবাইকে অবাক করে দিয়ে তখনো, চিৎকার করে হাঁকডাক করছেন এক কাপড় বিক্রেতা। তিনি হাতে উঁচিয়ে ধরেছেন বাচ্চাদের শীতের পোশাক।
ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই মূলত তার এ অভিনব ‘হাঁকডাক’। তিনি সমানে চিৎকার করে চলেছেন, ‘বাচ্চা কার, কার বাচ্চার, লইয়া যান, শীত আইছে…’
তার উপস্থাপনভঙ্গি এমন ছিলো যেন, ছুটন্ত রাজধানীবাসীকে হঠাৎ থমকে দিয়ে তাদের কাছে শীতের বার্তা পৌঁছে দেয়া কেবল তার দায়িত্ব। তাও আবার এমন কৌশলে!
তাকে এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। তার নাম ইয়াসিন। জিজ্ঞেস করতেই সোজাসাপ্টা জবাব, ‘নইলে তো কেউ আমার দোকানের দিকে ফিরেও চাইবো না, যেমন আপনি। বাচ্চা কার কইছি দেইখাইতো কাছে আইছেন। শীত আইসা গ্যাছে, কি লাগবো লইয়া যান স্যার… বাচ্চাদের জন্য ইসপেশাল আইটেম আছে… দিমু?
সত্যিইতো এ মৌসুমে ঢাকা শহরে অস্বাভাবিকভাবেই শীতের আমেজ জাগিয়েছে প্রকৃতি। দুপুরের রোদ না বললেও সকাল বিকাল সন্ধ্যা বলছে- শীত এসে গেছে রাজধানীতে। ভোররাতে শীত তার আগমণী জানান দিয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু ডিসেম্বরের শুরু থেকেই রাজধানী সেজেছে কুয়াশার সাজে। দুপুর গড়াতেই এখন তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। প্রকৃতিতে জোরালো হচ্ছে শীতের আমেজ। সে আমেজে প্রত্যহ সকালে ঘুম ভাঙ্গছে নগরবাসীর।
নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট : ০১:১৪ পিএম, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৫, শুক্রবার
ডিএইচ