চাঁদপুর

ফিল্মের অভাবে কাজে আসছে না চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালের এক্সরে

এক্সরে ফিল্মের কারণে উদ্বোধন করার দু মাস পর থেকেই ৩ মাসেরও অধিক সময় ধরে কাজে আসছে না আড়াইশ’ শয্যা চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের নতুন ডিজিটাল এক্সরে মেশিন।

জানা যায়-গেলো বছরের ১২ অক্টোবর প্রধান অতিথি হিসেবে হাসপাতালের নতুন ডিজিটাল এক্সরে মেশিনটি উদ্বোধন করেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা.দীপু মনি। তারপর থেকে রোগীদের সুবিধার্থে ৫শ’ফিল্ম দিয়ে চালু হয় ডিজিটাল এক্সরে। আর ওই ৫শ’টি ফিল্ম দিয়ে দু মাস ধরে হাসপাতালের ডিজিটাল এক্সরে চলছে। শুরুতে দেয়া ৫শ ফিল্ম শেষ হওয়ার পর থেকেই বন্ধ হয়ে যায় হাসপাতালের ডিজিটাল এক্সরে সেবা। বাধ্য হয়েই রোগীদেরকে অধিক টাকা ব্যয় করে হাসপাতালের কাছে থাকা বিভিন্ন প্রাইভেট ডায়াগণস্টিক সেন্টার থেকে ডিজিটাল এক্সরে করাতে হচ্ছে।

চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালের এক্সরে বিভাগে সরজমিনে দেখা যায়,জনসাধারণের চিকিৎসাসেবার জন্য লাখ লাখ টাকার দামি ডিজিটাল এ এক্সরে মেশিনটি হাসপাতালে দেয়া হলেও সেটি মূল্যহীন ভাবেই অনাদরে পড়ে আছে। প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে ঢাকা তেঁজগাও কেন্দ্রিয় ঔষধাগার থেকে এ ডিজিটাল এক্সরে মেশিনটি চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।

কর্তৃপক্ষের অবজ্ঞা আর অবহেলার কারণেই হয়তো বা মূল্যবান মেশিনটি আজো অমূল্য হয়েই পড়ে আছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন ৮-৯ মাস ধরে মেশিনটি পাঠানো হয়েছে।

প্রতিদিন জেলার বিভিন্নস্থান থেকে সেবা গ্রহণকারীগণ বিভিন্ন ভাবে দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসা সেবার জন্য সরকারি হাসপাতালে আসেন। অধিকাংশ লোকজনের হাড় ভেঙ্গে গেলে অথবা হাড়ে কোনো ধরনের সমস্যা দেখা দিলে কিংবা শরীরে কোনো না কোনো সমস্যার কারণে চিকিৎসকরা তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য রোগীদেরকে এক্সরে করানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

এসব এক্সরের মধ্যে বেশির ভাগই ডিজিটাল এক্সরে করানোর পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। আর রোগীরাও চিকিৎসকের কথামতো এক্সরে করানোর জন্য হাসপাতাল কিংবা তার পাশ্ববর্তী প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে এক্সরে পরীক্ষা করে থাকেন। বাহিরে থেকে এক্সরে করতে গিয়ে দেখা যায় রোগীদের অনেক অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।

অনেক সময় যাদের সামর্থ্য কম তারা বাধ্য হয়েই অল্প খরচে হাসপাতালের নরমাল মেশিনে এক্সরে পরীক্ষা করিয়ে থাকেন। চিকিৎসকদের কাছে সে এক্সরে পরীক্ষাটি গ্রহণযোগ্য হয়নি বলে পুনরায় আবার বাড়তি টাকা খরচ করে এক্সরে করাতে হয়। ফলে একদিকে যেমন রোগীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন অন্যদিকে ব্যয় করতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। তাই রোগীদের অনেক দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।

হাসপাতালের প্রধান সহকারী কাম-হিসাব রক্ষক মো. সফিউল আলম জানান, মেশিনটি চালু করার সময় কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে ৫’শ ফিল্ম দিয়েছে। সেগুলো শেষ হয়ে যাওয়ার পর থেকে ফিল্ম পাওয়া না যাওয়ার কারণে ডিজিটাল এক্সরে বন্ধ রয়েছে। মেশিনটির যে কোম্পানীর ফিল্ম দরকার সে কোম্পানী ছাড়া অন্য কোনো কোম্পানীর ফিল্ম তাতে কাজ হচ্ছে না। আমরা বেশ কয়েকবার ওই কোম্পানীর সাথে যোগাযোগ করেছি

এ ব্যাপারে আইপ্রো এক্সরে ফিল্ম কোম্পানীর সেলস ও সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার মো. মুক্তার হোসেনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন,‘ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন কিনা তা আমি জানিনা। সাইথ আফ্রিকা থেকে ফিল্মগুলো আসে। চট্টগ্রাম ফোর্টে ফিল্ম এসছে ক’দিনের মধ্যে তা পাওয়া যেতে পারে। ’

প্রতিবেদক : কবির হোসেন মিজি

Share