চাঁদপুর

‘ফাইনালে দু’দলকে বিজয়ী হতে জীবনেও দেখি নাই’

চাঁদপুর স্টেডিয়াম মাঠে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার গোল্ডকাপ কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা দেখতে এসেছিলেন বাবুর হাট এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক।

খেলা শেষে পশ্চিম পাশের গ্যালীর প্রায় সহস্রাধিক দর্শকের মতো তিনিও হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।

এসময় অন্য এক দর্শকের সাথে তাকে ক্ষোভ নিয়ে বলতে শোনা যায়, ‘এটা কেমন খেলা হলো ভাই? ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে দুটি দলকে যৌথভাবে বিজয়ী হতে আমার জীবনেও দেখি নাই।’

আব্দুল মালেকের সাথে তাল মিলিয়ে অন্যান্য দর্শকরাও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘খুব আশা নিয়ে খেলা দেখতে এসেছিলাম। আলো স্বল্পতার দোহাই দিয়ে খেলাকে অমীমাংসিত রেখে দু’টি দলকেই যৌথ ভাবে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়েছে। যা এর আগে কোনো ফুটবল টুর্নামেন্টে আমরা দেখি নাই।’

কেউ কেউ অভিযোগ করে বলেন, একটি দলকে বিজয়ী করতে এমন এমনটা করা হয়েছে।

শনিবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে চাঁদপুর স্টেডিয়াম মাঠে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার গোল্ডকাপ কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে অংশ নেয় চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল দল।

খেলায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো দলই গোল করতে না পারায় পরে সেটি ট্রাইবেকারে গড়ায়। তবে এর আগে রেফারীর শেষ বাশী বাজার পর দীর্ঘ সময় ধরে মাঠ নিরব থাকে।

এসময় মাঠের ভেতর খেলোয়ারদের সাথে রেফারিকে কথা বলতে দেখা যায়। গ্যালারী ভর্তি দর্শক তখন কিছুই বুজতে না পেরে খেলার শুরু করার জন্য চিৎকার করতে থাকে।

প্রায় ১৫/২০ মিনিট পর ট্রাইব্রেকার শুরু হয়। এতে প্রথমে কিক নিয়ে চাঁদপুর জেলা দলের খেলোয়র গোল দিতে সক্ষম হয়। পরে চট্টগ্রাম দলের খেলোয়ার কিক নেয়ার প্রস্তুতি নিতে গেলে চাঁদপুর দলের খেলোয়ারকে গোলপোস্ট ছেড়ে রেফারীর কাছে ছুটে আসতে দেখা যায়।

এরপর ম্যাচ রেফারি উভয় দলের খেলোয়া, কর্মকর্তা ও টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটির সাথে আলাপ করে আলো সল্পতার কারনে যৌথ ভাবে চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও চট্রগ্রাম জেলা দল কে চ্যাম্পিয়ান ঘোষণা করে।

এই ঘোষনার সাথে সাথেই গ্যালারি থেকে দর্শক চিৎকার চেচামেটি শুরু করে দেয়। যৌথভাবে বিজয়ী দু’দলের মাঝে ট্রফি বিতরণকালে ক্ষুব্ধ দর্শকরা তখনও গ্যালীতে অবস্থা নিয়ে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে চিৎকার করতে থাকে।

এসময় দর্শকদের শান্ত করতে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. দীপু মনি এমপি বলেন, ‘খেলাটি অমীমাংসিত ভাবে শেষ হওয়ায় আপনাদের মতো আমিও কষ্ট পেয়েছি। যে কোনো একটি দল বিজয়ী হলে আমরা সবাই খুশি হতাম।’

এসময় জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মন্ডল, পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার পিপিএম, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাবুুসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১১: ৫৫ পিএম, ২৯ এপ্রিল ২০১৭, শনিবার
ডিএইচ

Share