Home / বিশেষ সংবাদ / ফাঁসির মঞ্চে ওঠে যা বলেছিলেন নিজামী
ফাঁসির মঞ্চে ওঠে যা বলেছিলেন নিজামী

ফাঁসির মঞ্চে ওঠে যা বলেছিলেন নিজামী

কারাগারের জেলের কক্ষের পাশের কক্ষে স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীকে কনডেম সেলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। তখন রাত ৯টা ৫৫ মিনিট।

ততক্ষণে টেলিভিশন কিংবা ইন্টারনেটে সংবাদ পোর্টালের মারফত দেশের মানুষ জেনে গেছে, নিজামীর ফাঁসির রায় কার্যকর হতে আর দেরি নেই। ঠিক রাত ১২টা ১০ মিনিটে তাঁকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়।

মঙ্গলবার রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি দেওয়ার আগের মুহূর্তগুলো কিভাবে কেটেছে নিজামীর, সেটা জানা গেছে কারাগারের বিভিন্ন সূত্রে।

ওই সূত্রগুলো বলেছে, ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার আগে নিজামী ছিলেন অনেকটাই স্বাভাবিক। পরিবারের সদস্য ও কারা কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে কথা বলেছেন তিনি।

কারা সূত্র জানায়, নিজামীর এক মেয়ে দেখা করার সময় তাঁকে একটি নতুন ফ্রেমের চশমা দেন। নিজামী সেই চশমা পরেন। স্বজনরা তাঁর জন্য কিছু খাবারও আনেন। নিজামী সামান্য খাবার খেয়েছেনও। ফাঁসির আগে তিনি কারা কর্তৃপক্ষকে বলেছেন, তাঁর ব্যবহৃত সব জিনিসপত্র যেন তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর রাত ৯টা ৫৫ মিনিটে নিজামীকে কনডেম সেলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর তাঁকে গোসল করানো হয়। গোসলে সহায়তা করেন কারাগারের পেশ ইমাম মাওলানা মনির হোসেন। গোসল করার পর নিজামী নামাজ পড়েন। এরপর কোরআন তিলাওয়াতও করেন তিনি।

১১টা ৫৫ মিনিটে জল্লাদ রাজুর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের জল্লাদদল কনডেম সেলে যায়। তাদের মধ্যে আবুল হোসেন, মাসুম-১ ও মাসুম-২ ছিল। এ সময় সেখানে সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির, জেলর নেছার আলম, সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল মালেক মৃধা ও কারাগারের অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তখন সিনিয়র জেল সুপার নিজামীকে বলেন, ‘আপনার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে।’ নিজামী বলেন, ‘আমার প্রতি অবিচার করা হচ্ছে।’ পরক্ষণেই দোয়া পড়ে চোখের চশমা খুলে টেবিলে রাখেন। এরপর জল্লাদ রাজু বলে, ‘হুজুর হাত পেছনে নেন।’ হাত পেছনে নিতেই হাতকড়া পরানো হয়। এ সময় তিনি নিজেই তওবা পড়বেন বলে জানান। এরপর সেলের ভেতরে তাঁকে জমটুপি পরানো হয়।

১২টা ৫ মিনিটে নিজামীকে সেল থেকে বের করে ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তিনি উচ্চ স্বরে দোয়া পড়ছিলেন। এরপর রশি পরানোর সময় তিনি বলেন, ‘আমি ব্যথা পাব। আমি নিজেই রশিটি দিই।’ দোয়া পড়ার পর ১২টা ১০ মিনিটে জল্লাদ রাজু লিভার টানে।

এরপর ফাঁসির দড়িতে পাঁচ মিনিট নিজামীকে ঝুলিয়ে রাখা হয়। পরে পায়ের রগ কাটাসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। রাত দেড়টার দিকে তাঁর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। (সূত্র- দেশকাল)

: আপডেট ৬:০০ এএম, ১২ মে ২০১৬, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ