Monday, 01 June, 2015 03:44:24 AM
নোয়াখালী করেসপন্ডেন্ট:
এসএসসি পরীক্ষায় ফলাফল খারাপ করায় চাটখিল উপজেলার হাঁটপুকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছে অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনার সময় প্রধান শিক্ষক উপস্থিত না থকলেও বিক্ষুব্ধ লোকজনের চাপের মুখে বিদ্যালয় ত্যাগ করে চলে যান সহকারী শিক্ষকরা।
রোববার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এরপর কাউকে ওই তালা খুলতে দেখা যায়নি। অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন বিদ্যালয়ের খারাপ ফলাফলের পাশাপাশি ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগও তুলেছে।
স্থানীয় ও অভিভাবকরা জানান, এসএসসির টেস্ট পরীক্ষায় হাঁটপুকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাত্র ১৫ জন পরীক্ষার্থী পাস করে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা এক হয়ে অতিরিক্ত ফি নিয়ে অতিরিক্ত ৩৫ শিক্ষার্থীকে অংশগ্রহণ করায়। এর মধ্যে ৬ জনই ছিল যারা আগের বছরে এক বিষয়ে ফেল করেছিল।
শনিবার এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের পুরাতন ৬ জনের মধ্যে ৫জনসহ মোট ১৫ জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে, তাও কোনো রকমে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে অভিভাবক ও স্থানীয় জনতা। তারা রোববার সকালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা লাগিয়ে দেয়। এসময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উপস্থিত না থকলেও স্থানীয়দের চাপের মুখে অন্য শিক্ষাকরা দ্রুত বিদ্যালয় ত্যাগ করে চলে যান।
অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, বিগত বছরগুলোতেও বিদ্যালয়টি ভালো ফলাফল করতে পারেনি। তারপরও এইবার মোটা অংকের টাকা নিয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার শিক্ষকরা। গ্রীষ্মকাল উপলক্ষে বিদ্যালয় ১৩দিনের ছুটি দেয়া হয়। কিন্তু শিক্ষকরা ওই দিনগুলোতে মাত্র দুই ঘণ্টা করে কোচিং করিয়ে প্রতি শিক্ষার্থী থেকে সাড়ে ৩শ টাকা করে ফি নিয়েছে।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল বারেক চাঁদপুর টাইমসকে জানান, টেস্ট পরীক্ষায় ১৫ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হওয়ার পর আমাদের চাপ প্রয়োগ করে আরো ৩৫জন শিক্ষার্থীকে ফরম পূরণ করতে বাধ্য করে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। যাতে আমাদের কোনো ভূমিকা ছিল না। অকৃতকার্য ৩৫জনের মধ্যে ৩২জন পরীক্ষার্থী গণিতে ফেল করেছে। তারপরও আমরা গণিত বিষয়ের শিক্ষককে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করব। কিন্তু আমার অনুপস্থিতিতে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালীসহ বখাটেরা স্কুলে হামলা চালিয়ে বিভিন্ন কক্ষে তালা লাগিয়ে দেয়। এ বিষয়ে আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকে জানিয়েছি। পরবর্তীতে প্রশাসনকে জানাবো।
ছুটির দিনে কোচিং করিয়ে টাকা আদায়ের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, ছাত্র-ছাত্রীরা বাড়িতে পড়ালেখা না করার কারণে শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত মতে কোচিং’এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাদের যতটুকু সম্ভব তারা তা ফি দেবে। কিন্তু এর জন্য তাদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট কোনো ফি ধরা হয়নি।
চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসিম উদ্দিন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি।
উল্লেখ্য, আগামীকাল ১ জুন থেকে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু বিদ্যালয়ে তালা দেয়ার ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না শঙ্কিত শিক্ষার্থীরা।
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/ডিএইচ/২০১৫
নিয়মিত ফেসবুকে নিউজ পেতে ক্লিক লাইক দিন : www.facebook.com/chandpurtimesonline/likes
চাঁদপুর টাইমস’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।