শহীদ নওজোয়ান ওয়ালিউল্লাহ সড়ক তথা চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়ালপুর চৌরাস্তা মোড় থেকে শুরু হয়ে আইলের রাস্তা মোড় পর্যন্ত একাধিক স্কুল কলেজ মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষকদের যাতায়াতের একমাত্র অবলম্বন এ সড়কটি।
আইলের রাস্তা মোড় থেকে চাঁদপুর সদর পশ্চিম চান্দ্রা চৌরাস্তা মোড় এবং শহীদ নওজোয়ান ওয়ালিউল্লাহ সড়কের পাশে একধিক স্কুল কলেজ মাদ্রাসা ও কিন্ডার গার্টেন অবস্থিত।
এ সকল প্রতিষ্ঠানের ছাত্র শিক্ষকদের যাতায়াতের একমাত্র ব্যবস্থা হলো ভাটিয়ালপুর চৌরাস্তা মোড় থেকে শুরু হয়ে হরিণা ফেরিঘাট পর্যন্ত এ সড়কটি।
তাছাড়া এ সড়ক দিয়েই অনবরত যাতায়াত করে থাকে চট্রগাম খুলনা মংলা বরিশাল দিনাজপুর যশোর পূর্ব ও পশ্চিমঅঞ্চলের শত শত যানবাহন। মালবাহী লরী যা এ সড়ক দিয়ে পাড়ি দেয়ার পরে জেলায় গিয়ে জনমানুষের অন্যের / খাদ্যের যোগান দেয়। কিন্তু সড়কের এ নাজেহাল দশায় সবার জন্য এটি মরার ওপর খাড়ার গা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
খুলনাগামী একটি মালবাহী লরীর চালকের সাথে এ প্রতিবেদকের আলাপকালে চালক জানান, ‘আমি খুলনা থেকে গ্যাসের চিলিন্ডার বোঝাই করে চট্রগ্রামের উদ্দ্যেশ্য রওনা হয়েছি। খুলনা থেকে চট্রগ্রাম যাওয়ার বিপরীত রাস্তা থাকলেও ওই পথে যাতায়াত করতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তাই হরিণা ফেরিঘাট এ সড়কটি দিয়েই যাতায়াত করে থাকি। তবে এ সময় কালে এ সড়কের অবস্থা এতটাই নাজোহাল যে, যদি সড়কে থাকা খানা খন্দ গর্ত পাড়ি দিতে যাই, তবে লড়ির গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যে কোনো সময় রাস্তায় মাঝখানেই থেমে যেতে হয়।
এ চালক আরো জানায়, রাস্তার এরকম বেহাল দশায় আমরা নির্ধারিত সময়ে চট্টগ্রামে যেতে অসুবিধা হয়। এছাড়া মালবাহী লরিটি চাঁদপুর সদর হয়ে ঘুরিয়ে নিতে গেলেও বাড়তি খরচ ও সময়ের ঝামেলা পোহাতে হয়। চাঁদাবাজের খপ্পরে পড়ে গেলে চাঁদা দিয়ে সড়ক পাড়ি দিতে অনেক অসুবিধা পোহাতে হয়।’
এ রকম ভাবে প্রতি নিয়তেই প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ টি মালবাহী লরি ট্রাক ও অন্যন্য শত শত যাত্রীবাহী জান চলাচল করে থাকে। অথচ এ লরিতে থাকা বোঝাই করা পণ্যই দেশের সকল সাধারণ জনতার জন্য ভাগ্যে থাকা একমাত্র অবলম্বন।
রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করে কিছু ছবি ক্যামেরাবন্দি করতে গিয়ে দেখা যায়, একটি গর্ত আইলের রাস্তা যাওয়ার ১০ গজ সামনে থেকে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বর্তমান ইউপি সদস্য মো. বিল্লাল হোসেনের বাড়ির সামনে। গর্তটিতে যানবাহনের চাকায় প্রতিনিয়ত পিষ্ট হয়ে এখন ছোটো প্রকৃতি কুয়ায় পরিণত হয়েছে।
তবে এরকম গর্ত শুধু এ খানেই নয়, ভাটিয়ালপুর চৌরাস্তা মোড় থেকে শুরু করে নয়ারহাট বাজার হয়ে চাঁদপুর সদর চান্দ্রা চৌরাস্তা মোড় পর্যন্ত এরকম অসংখ্য ছোট বড় খানা খন্দ রয়েছে। যেখানে একটু বৃষ্টি হলেই ছোট খাটো পুকুর রূপ ধারণ করে।
শহীদ নওজোয়ান ওয়ালীউল্লাহ ও শহীদ আবু হানীফা নামে সড়কে নামকরণ করা থাকলেও কাজের বেলায় তেমন মুল্যায়ন করা হয়নি। এসব ত্যাগি নেতাদের, শুধু নামফলকেই কোনোরকম ঝুলে আছে। এ সড়কটি যখন কাঁচা থেকে পাকাকরণ তখন কিছু যাত্রীবাহী বাস চলাচল করেছিল। কিন্তু সড়কের বেহাল দশার কারণে ক্রমেই যাত্রীবাহি বাসের মালিকরা সড়ক থেকে গাড়িগুলো উঠিয়ে নেয়। তবে এখনও দু’একটি যাত্রীবাহী বাস এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে।
একধিক সিএনজি স্কুটারের মালিক ও চালকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আগে সড়কটি দিয়ে ফরিদগঞ্জ সুপার নামে একাধিক যাত্রীবাহী বাস চলাচল করতো। বিরামপুর থেকে বাসটি ছেড়ে আইলের রাস্তা পর্যন্ত যাওয়ার পথেই বাসটি আটকে যেতো যে কোন সময় দেখা যেত বাসের চাকা খুলে গেছে অথবা দেখা গেছে যে কোন একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্স নষ্ট হয়ে গেছে। এভাবে একসময় অসহ্য হয়ে সেগুলো উঠিয়ে এখন দু একটি সিএনজি স্কুটার সড়কে চলাচল করছে।
স্কুটার ক’জন চালকের সাথে আলাপাকালে জানা যায়, ক’বছর পূর্বে এ সড়কে থাকা যাত্রীবাহী বাসে হেলপারি যারা তারাই এখন সিএনজি স্কুটার চালাচ্ছে। একসময় সন্ধ্যা হলে হাজার বারশো টাকা পকেটে নিয়ে বাড়ি ফিরতো। কিন্তু এখন মালিক জমা দেওয়ার পরে ২ থেকে ৩শ’ টাকা থাকতেই কষ্ট হয়।
তাই ভুক্তভোগীদের দাবি, এ সড়কটি যেনো দ্রুত সংস্কার করে হাজারো মানুষের জীবনযাত্রার পরিবর্তনে সহায়তা করা হয়।
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৩:৫০ পিএম, ১০ অক্টোবর ২০১৬, সোমবার
ডিএইচ
প্রতিবেদক- সানাউল হক, ফরিদগঞ্জ করেসপন্ডেন্ট