ফরিদগঞ্জ

ফরিদগঞ্জ পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে প্রথম স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

চাঁদপুরে ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো.মাহফুজুল হকের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার প্রথম স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা সোনিয়া আক্তার।

১৪ ডিসেম্বর সোমবার দুপুরে চাঁদপুর প্রেস ক্লাবে নিজ সন্তান, বাবা ও বোনদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন তিনি।

কান্নাভেজা চোখে পুরো সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সোনিয়া আক্তার।

তাদের ঘরে মারুফা ইসলাম মুমু (১০), সোয়ানুল হক ওমর (৭) ও মরিয়ম আক্তার (৪) নামের তিন সন্তান রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সোনিয়া আক্তার অভিযোগ করেন, ২০১০ সালের ২৫ এপ্রিল মাহফুজুল হকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসার প্রথমদিকে ভালো চলে।

মাহফুজুল হক ৫ বছর আগে ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন।

এরপরই তার চারিত্রিক পরিবর্তন শুরু হয়। নেশায় জড়িয়ে পড়া এবং বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মেয়েদের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। দিনে দিনে নির্যাতনের মাত্রা বাড়ে তার। বিভিন্ন সময়ে ব্যবসা ও অন্যান্য সমস্যার কথা বলে শ্বশুর ও ভায়রার কাছ থেকে ৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা ধার নেন কয়েক দফায়। কিন্তু সেসব টাকা ফেরত দেননি।

আরও পড়ুন… ফরিদগঞ্জে স্ত্রী দায়ের করা মামলার বিষয়ে মেয়রের সংবাদ সম্মেলন

সোনিয়া আক্তার আরও জানান, তার স্বামী মাহফুজুল হক পরনারীতে আসক্ত। বিশেষ করে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ক্ষমতার দাপটে তিনি মাদকাসক্ত ও পরনারীতে আসক্তি বাড়িয়ে দেন। এর প্রতিবাদ করলেই সোনিয়ার উপর নির্যাতন আরও বেড়ে যায়। মাদকাসক্ত অবস্থায় প্রায়ই তাকে মারধর করে তাকে। কিন্তু ৩ সন্তানের কথা চিন্তা করে তিনি এসব নির্যাতন সহ্য করে আসলেও বর্তমানে নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে গেছে। তার অমতে কয়েক মাস আগে দ্বিতীয় বিয়েও করেছেন মাহফুজুল হক।

এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে তিনি তার স্বামীর বিরুদ্ধে চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছেন। এরপর থেকে সোনিয়া ও তার বাবা, দুলাভাইসহ পরিবারের সকলকে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

এত কিছুর পরও ৩ সন্তান এবং বর্তমানে গর্ভের সন্তানের কথা চিন্তা করে মাহফুজের সঙ্গেই সংসার করতে চান সন্তান সম্ভবা সোনিয়া আক্তার। এ ব্যাপার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সোনিয়া আক্তারের বাবা মো. বাচ্চু মিজি বলেন, প্রতিনিয়তই আমাদের হুমকি দিয়ে আসছে। আমার মেয়েসহ আমাদের পরিবারের সদস্যদের ক্ষতি করবে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

অভিযোগ অস্বীকার করে ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. মাহফুজুল হক বলেন, আমি কাউকে নির্যাতন কিংবা হুমকি-ধমকি দিইনি। আমার পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেই যৌতুকের অভিযোগ তুলেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বরং সে তার বাড়িতে গেলে তাকে ২০ হাজার, ৩০ হাজার টাকা দিয়ে তারপর আমার বাড়িতে আনা লাগত। সে উচ্ছৃঙ্খল ও লোভী প্রকৃতির মেয়ে। তার পরিবারটাই লোভী প্রকৃতির।

মাহফুজ বলেন, আমি যদি মাদকাসক্ত হতাম, এত দিনে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মানুষ কথা বলতো। থানায় অভিযোগ করতো। কিন্তু আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখুন এমন কোন খবর পান কিনা। সে আমার নির্বাচনী প্রতিপক্ষদের কাছে টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়ে এই মনগড়া অভিযোগ করছে। গত নির্বাচনের আগেও সে (স্ত্রী) এই ধরনের মিথ্যা অভিযোগ করেছিল।

স্টাফ করেসপন্ডেট, ১৪ ডিসেম্বর ২০২০

Share