ফরিদগঞ্জ পৌর বাজার ও বাসষ্ট্যান্ড গোপন টেন্ডারে ইজাড়া

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ পৌরসভার বাজার ও বাসষ্ট্যান্ড গোপন টেন্ডারে ইজাড়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে সরকার মান সম্মত রাজস্ব পাওয়া থেকেও বঞ্চিত হয়েছে।

ইজাড়া বিজ্ঞপ্তি সম্পূর্ণ গোপনীয়তা রেখে ও গুপচি করে বিএনপি নেতার নামে আনার ফলে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে। পৌর পরিষদের কোন সভায়ই এ বিষয়ে কোন ধরণের আলোচনা হয়নি বলে একাধিক কাউন্সিলর নিশ্চিত করেছেন। পৌর সভার নোটিশ বোর্ডে দায় এড়ানোর জন্য টেন্ডার বিজ্ঞপ্তির সকল কাজ সম্পন্ন করার পর নোটিশটি সাঁটানো হয়েছে। বিগত ৩ বছরের সর্বোচ্চ ইজাড়া গড় মূল্য (সরকারী মূল্য) ফরিদগঞ্জ বাজার ২৬ লাখ ও বাসষ্ট্যান্ড ৩৬ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে। তবে বর্তমান অর্থ বছরে কত টাকায় ইজাড়া দেওয়া হয়েছে তা জানাযায়নি।

ইজাড়া বিজ্ঞপ্তি গুপচি করায় পৌরসভার কাউন্সিলররা ক্ষোভ প্রকাশ করছে। তাছাড়া ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বে স্থানীয় অনেকেই নিয়ম বর্হিভূত হওয়ার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

সম্প্রতি নোটিশ বোর্ডে সাঁটানো নোটিশে দরপত্র খোলার তারিখ ১ম পর্যায় ২৩/০২/২০২২ইং, ২য় পর্যায় ০২/০৩/২০২২ইং ও ৩য় পর্যায় ০৯/০৩/২০২২ইং দেখানো হলেও কার্যত: সময়মত না টানানো ও পৌর পরিষদের মিটিংএ আলোচনা না করে সুবিধা ভাগাভাগি গুপচিতে টেন্ডার কাজ সম্পন্ন করায় ঠিকাদাররা অংশ নিতে পারেনি। এমনকি কোন পত্রিকায় কত তারিখে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ পেয়েছে তাও জানতে পারেনি কেউ।

গোপন টেন্ডারের বিষয়ে পূর্বের টেন্ডারে অংশ গ্রহন কারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, পৌরসভা খ শ্রেনী থেকে ক শ্রেনীতে উপন্নিত হওয়ার পর এই টেন্ডার গোপনে করায় পৌরসভার বিশাল অর্থ ক্ষতি হয়েছে।

এ বিষয়ে সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: মাহফুজুল হক জানান, সরকারী নিয়মানুযায়ী টেন্ডার কাজ সম্পন্ন হওয়া উচিত। তিনি আরোও জানান, আমার সময়কালে সাংবাদিক ও ঠিকাদার এবং প্রশাসনের লোকজনকে উপস্থিত রেখে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। এখন তা রক্ষা হচ্ছে না বলে অনেকেই জানান। এদিকে অনেক ঠিকাদার আমাকে ফোন দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

ইজাড়ার বিষয়ে ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: আমিন মিজি ও ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন টিটু জানান, আমরা পৌর পরিষদের সবগুলো মিটিংএ উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কোন মিটিংএ বাজার ও বাসস্ট্যান্ড ইজাড়ার বিষয়ে কোন ধরণের আলোচনা করতে শুনিনি।

ইজাড়ার বিষয়ে পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আ: মান্নান পরানের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকল নিয়ম কানুন রক্ষা করেই বাজার ও বাসষ্ট্যান্ড ইজারা সম্পন্ন করা হয়েছে। কোন পত্রিকায় এবং কত তারিখে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে জানতে চাইলে বলতে চাননি তিনি।

কত টাকা পৌরসভার হাট বাজার ও বাসষ্ট্যান্ড ইজারা হয়েছে জানতে চাইলে পৌরসভার ক্যাশিয়ার গিয়াস উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারবো না যা জানার সচিব ও ইঞ্জিনিয়ারের কাছ থেকে জানেন।

এ বিষয়ে পৌরসভার সচিব মো: খোরশেদ আলম জানান, আমার জানামতে গড় মূল্য ২৬ লক্ষ টাকা দেখানো হয়েছে। তবে আমাকে এ সকল বিষয়ে জিজ্ঞেস করে লাভ নাই। আমি অসুস্থ এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবোনা। আপনি মেয়র মহোদয় ও ইঞ্জিনিয়ারের সাথে কথা বলেন।

এ বিষয়ে পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার কামরুল হাছানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছি। হাট বাজার ও বাসষ্ট্যান্ড কত টাকায় হয়েছে তিনি জানেন না বলে জানান। তিনি আরো জানান, ইজারার বিষয়টি সচিব সাহেব জানেন এবং এই টেন্ডার কমিটির একজন সদস্য এসিলেন্ট স্যার ও রয়েছেন, ইজারার বিষয়টি সমন্ধে আমার সম্পন্ন বাভে জানা নেই।

ইজাড়ার বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আবুল খায়ের পাটওয়ারী বলেন, নিয়মতান্ত্রিকতা রক্ষা করেই বাজার ও বাসস্ট্যান্ড ইজাড়া দেওয়া হয়েছে। আমি অসুস্থ পরে কথা বলুন।

প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ৬ মার্চ ২০২২

Share