চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগ দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে তাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। সম্প্রতি পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ গ্রুপিং আরও মজবুত অবস্থানে যাচ্ছে।
পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৫ ডিসেম্বর শনিবার বিশেষ বর্ধিত সভা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বর্তমান পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হক আয়োজন করেন। সভায় আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী ১/২ জন ছাড়া সকলেই উপস্থিত ছিলেন। তাছাড়া সকলেই বক্তব্য রাখার পাশাপাশি এ মর্মে একমত পোষণ করেন যে, যাকেই নৌকা প্রতীক দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা পাঠাবেন তার বিজয় নিশ্চিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবো। কোন ধরনের দ্বন্ধ থাকবেনা না।
সভায় পৌর আওয়ামী লীগের চলতি দায়িত্ব পালনের সভাপতি হিসাবে উল্লেখ্য করা হয়েছে, মো: লেয়াকত পাটওয়ারীকে। আয়োজিত সভায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওযামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো: আবু সাহেদ সরকার। এছাড়া সভায় পৌর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরাও উপস্থিত ছিলেন।
এ দিকে পৌর কমিশনার ও ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দাবী করেন মো: মজিবুর রহমান ৭ ডিসেম্বর সোমবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী বাসভবনে পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আয়োজিত বর্ধিত সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এসময় সভায় উপস্থিত ছিলেন,উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারীসহ পৌর আওয়ামী লীগের একাংশের নেতারা।
পৃথক পৃথক সভায় নৌকার প্রর্থীর পক্ষে একমত পোষণ করেছেন উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতারা। এখানে প্রশ্ন হচ্ছে, নৌকার পক্ষে একতম হলে দুভাগে ভিন্ন ভিন্ন বর্ধিত সভার আয়োজন করার কারণ কি? তাও আবার উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বস্থানীয় দু’নেতার আলাদা আলাদা উপস্থিতির মধ্যে দিয়ে।
এদিকে মেয়র মাহফুজুল হকের বর্ধিত সভায় সংসদ সদস্য শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে পৌর নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিতের ঘোষনা দেওয়া হয়েছে। তবে এমপির আস্থাভাজন নেতাদের দুটি সভার কোনটিতেই উপস্থিতি দেখা যায়নি।
পৌর নির্বাচনের বিষয়ে সাংসদ মুহম্মদ শফিকুর রহমান চাঁদপুর টাইমসকে জানান, আমি এখনও কাউকে একক সমর্থন দেয়নি। এদিকে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজেদেরকে এমপির আর্শ্বীবাদ পুষ্ট বলে দাবী করে গনসংযোগ ও সভা-সমাবেশ করে চলছে। অপর দিকে উপজেলা চেয়ারম্যান এড.জাহিদুল ইসলাম রোমানের অনুসারী সম্ভাব্য দুই মেয়র প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন।
আসন্ন পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দ্বিধা দ্বন্ধ বাড়ার আশঙ্কা করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাই সবাই যেহেতু নৌকার বিজয় চাচ্ছেন সেহেতু সবাই এক মঞ্চে এসেই ঘোষণা দেওয়া উচিত। তাহলে গ্রুপিং ব্যবস্থা নিস্ক্রীয় হয়ে পড়বে। ঐক্য হবে দৃঢ় ও মজবুত।
সকল নেতা ও সম্ভাব্য নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের একই কথা আমরা সবাই প্রধাণমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে সকল বেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে পৌর নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিজয় আনবো।
এ বিষয়ে পৌর আওয়ামীলীগের কমিশনার মো: মজিবুর রহমান জানান। আমি পৌর আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি। তাই সভাপতির অনুপস্থিতিতে সাংগঠনিকভাবে সভাপতি হতে পারি। তাছাড়া এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অবগত আছেন।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হক জানান, জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশ ক্রমে আমি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাথে কথা বলে বিশেষ বর্ধিত সভা ডেকে সম্ভব্য প্রার্থীদের নামের তালিকা পঠিয়েছি।
তিনি আরও জানান, পৌর আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সভাপতির মৃত্যু জনিত কারণে সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: লেয়াকত পাটওয়ারীকে সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছে। অনুমোদিত কমিটিতে কমিশনার মজিবুর রহমান একজন সদস্য হয়ে কোন অদৃশ্য শক্তির বলে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসাবে ঘোষনা দিচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার জানান, যখন কমিটি হয়েছে তখন আমাদের কাছে দুইটি কমিটির কাগজই এসেছে। কোন কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে তা কমিটির কাগজ দেখা ছাড়া বলা যাবে না। তিনি আরো বলেন, পূনাঙ্গ কমিটির কাগজ সভাপতি আবুল খায়ের পাটওয়ারীর কাছে রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী জানান, মজিবুর রহমান পৌর কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি তাই সেই সভাপতির অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হয়। আয়োজিত জরুরী বর্ধিত সভায় মেয়র প্রার্থীদের তালিকা পাঠানো হয়েছে।
প্রতিবেদক:শিমুল হাছান,১০ ডিসেম্বর ২০২০