গা ঢাকা দিয়েছে ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ক্যাশিয়ার, গড়েছেন সম্পদের পাহাড়

চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলা পৌরসভার এসোসর /ক্যাশিয়ার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) গিয়াস উদ্দিন সম্পদের পাহাড় গড়লেন । আছে নগদ টাকাসহ রায়পুরে বিলাশবহুল বাড়ি ও দোকানপাটসহ ক্রয়কৃত সম্পত্তি। বিভিন্ন সময় নৌকা মার্কা ভোট চেয়ে, মৃত কর্মচারির প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা নয়-ছয়, পৌরসভা কর্মচারিদের বেতন ও মাস্টাররোলের কর্মচারিদের ছাটাই করে বেতন আত্মসাৎ করে, পৌরসভার দুই উদ্যোগতাকে ষড়যন্ত্র করে ছাটাই, বিভিন্ন সময় দলীয় প্রভাব খাটিয়ে আলোচনায় আসেন, বিভিন্ন নামে বেনামি সাধারণ মানুষ ও কর্মচারীরা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করলেও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে চলছেন ভিআইপি হিসেবে।

তার ২ ছেলে, স্ত্রীসহ ছোট একটা পরিবার, ছোট ছেলে ফরিদগঞ্জ এ আর হাইস্কুলে পড়াশোনা করে। ছোট ছেলে, স্ত্রী সহ থাকেন ফরিদগঞ্জ ভাড়া বাসায়।

বড় ছেলে ঢাকা আহসান উল্লাহ ইউনিভার্সিটিত পড়াশোনা করে। সেখানে ভর্তি হতে খরচ হয় ১ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা এবং প্রতি সেমিস্টার ফি ১ লক্ষ ২ হাজার টাকা করে খরচ। গড়ে প্রতি মাসে বড় ছেলের পিছনে মাসে ২০-২৫ হাজার খরচ হয়। ৪০ হাজার টাকা বেতনের মধ্যে বড় ছেলের পিছনে মাসে ২০-২৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। 

তার বাড়ি লক্ষীপুর জেলার রায়পুর উপজেলা কেরোয়া গ্রামের দেওয়ান্জি বাড়ি। বাড়ি থেকে সামনে এসে করেন ৪ তলা বিলাসবহুল বাড়ি, প্রধান সড়ক দিয়ে তার গ্রামে ডুকতে ডানপাশে মার্কেটসহ আছে আরো জমি। গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ করার পর গা-ঢা’কা দেন তিনি।

২০০৮ খ্রীঃ তিনি ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় যোগদান করেন। যোগদানের পরই তিনি ফরিদগঞ্জ পৌরসভার নিয়োগকৃত ক্যাশিয়ারের বদলী করান এবং তৎকালীন মেয়রের মাধ্যমে তিনি ক্যাশিয়ার (অঃদাঃ/ভারপ্রাপ্ত) এর দায়িত্ব গ্রহন করেন। অদ্যবদি তিনি উক্ত পদে বহাল আছেন। তিনি নিজেকে সকল ক্ষেত্রে ক্যাশিয়ার পরিচয় দিলে তিনি একজন ছায়া মেয়রের মত ফরিদগঞ্জ পৌরসভার জনসাধারন ও সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সাথে আচরণ করেন।

পৌরসভা, উপজেলা প্রশাসন সহ সকল প্রতিষ্ঠানের আয় ব্যয় এবং সকল কার্যক্রম অনলাইন পদ্ধতিতে সংরক্ষন করা হলেও ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় তা হয়না। অত্র পৌরসভায় সকল ব্যয়ের চেক বাহক চেকের মাধ্যমে ভাঙ্গানো হয়, সরকারি নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও কোন চেক একাউন্ট পে হয়না। এসকল কিছুর পিছনে কারসাজি তিনি সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জিম্মি করে রাখেন। যে কর্মচারী তার কথা না শুনবে না তার বিরুদ্ধে মেয়রের কাছে উল্টাপাল্টা নালিশ করে ওই কর্মচারীকে শোকজ, সাময়িক বরখাস্ত এমনকি বেতন বন্ধের ব্যবস্থা করা হয়।

২০২১ সালে নতুন পরিষদ গঠন হওয়ার পর সরকারি নির্দেশ মোতাবেক মাষ্টাররোল কর্মচারী ছাটাই করা হয়। বেশীর ভাগের ১০-২০ মাসের বেতন বকেয়া ছিল।বর্তমান পরিশোধের কযেকজন মাস্টাররোল ছাটাই করেন তারা ৩-৬ মাস পযর্ন্ত বকেয়া ছিল। সেটাকাও দেন না তিনি। এমনি চকিদার মৃত আবুল কাশেমের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা,মেয়র নির্দেশ অমান্য করে ৬ বছরেও দেন নাই ,অফিস সূত্রে জানা যায়, কিছু টাকা বাজার খরচের মত দেয় ক্যাশিয়ার।এখনো ৪ লক্ষ টাকা পরিবার পাবে,দিচ্ছি এমন করে ঘুরাচ্ছেন ক্যাশিয়ার।

২০২১-২২ইং অর্থবছরের শেষ সময়ে সরকারি অনুদানকৃত ২৮,০০,০০০.০০ (আটাশ লক্ষ) টাকা উত্তোলন করে কর্মচারীদের আনুতোসিক ও ভবিষ্য তহবিলে জমা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলেও তিনি তা করেন নি। সরকারি বিধির তোয়াক্কা না করে ছোট ছোট ভুয়া বিল ভাউচার (পঁচিশ হাজার টাকার প্রজেক্ট) করে তিনি পৌরসভার অর্থ আত্তশাত করেন বলে জানা যায়।নগর উন্নয়ন প্রকল্পের ৩৫,০০,০০০.০০ (পঁয়ত্রিশ লক্ষ) টাকা গরমিলের অভিযোগ ও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সকল ক্ষেত্রে তার কমিশন বানিজ্য আছে, পৌরসভার বিল আনতে গেলে মানুষ তার কাছে ভিক্ষুকের মত বসে থাকতে হয়। পৌরসভার ব্যাংক একাউন্ট কয়টি জানতে দেন না কাউকে,এমন কি একাউন্টে সকালে টাকা জমা দিলে বিকালে থাকে না, সব সময় একাউন্ট খালি থাকে,বিভিন্ন সময় প্রকল্পের টাকা চেক দিলে, ব্যাংকে গেলে বাহকরা দেখেন একাউন্টে কোন টাকা নেই।

আবুল কাশেম, লুৎপুর রহমান,ইসমাইল হোসেন,আব্দুল খালেক, আব্দুল মান্নান,হাবিব উল্ল্যা,আফসার উদ্দিন মোল্লা এই কর্মকর্তাদের নামে রাজস্ব তহবিল থেকে ২ লক্ষ টাকা করে গোপনে লোন নেন ক্যাশিয়ার এই কর্মকর্তারা লোনের ব্যাপারে জানেন বলেও অভিযোগ উঠেছে,পরবর্তীতে এই কর্মকর্তারা যখন নিজেদের প্রয়োজনে রাজস্ব থেকে লোন চাইলে এইগুলো প্রকাশ পায়।

মাস্টার রুলের চাকরি ছেড়ে দেওয়া রোজিনা আক্তার জানান , গত বছর জুলাই মাসের ২৪ তারিখে চাকরি ছেড়ে দিছি, ৬ মাসের বেতন পাবো ক্যাশিয়ার বেতন দেয়না,দেবো দেবো বলে আর খবর থাকে না।পিংকি নামে আরেক মাস্টার রুলের কর্মচারি ২ মাস ও আছমা আক্তার ৮ মাসের বেতন পাবে,তারা পাচ্ছে না তাদের বেতন।

আবু তাহের নামে আরেকজন মাস্টার রুলের কর্মচারি (ড্রাইভার পদে) বলেন আমি ১১ মাসের বেতন পাবো ক্যাশিয়ার বেতন দিচ্ছে না।

পৌরসভার প্রশিক্ষিত দুই উদ্যোগতা ফখরুল আলম,ফারজানা আক্তার কে চাকরিচ্যুত করেন ষড়যন্ত্র করে ক্যাশিয়ারসহ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এই বিষয় জাতীয় ও স্হানীয় বিভিন্ন পত্রিকায় ৩০ মে ২৪ খ্রীঃ নিউজ হয়।

একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দলীয় প্রোগ্রামে গিয়ে নৌকা মার্কায় চাইছেন এই নিয়ে এনটিভিসহ বিভিন্ন পত্রিকায় নিউজ প্রকাশিত হয়।

ক্যাশিয়ারের বিরুদ্ধে স্হানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আজিজ নামে এক যুবক অভিযোগ করলেও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ছাড় পেয়ে যান বলেও অভিযোগ রয়েছে।সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে গত ১৮ বছরের সকল কিছু ক্ষতিয়ে দেখার আহ্বান জানান ছাটাইকৃত কর্মচারি ও সাধারণ জনতা

এই দিকে ক্যাশিয়ার গিয়াস উদ্দিন ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরে পালিয়ে রয়েছেন,তার মোবাইলে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

নিজস্ব প্রতিবেদক,১২ আগস্ট ২০২৪

Share