ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদর বাজারের পশ্চিম মাথা হতে কালির বাজার সড়কের মাথা পর্যন্ত মাত্র ৮শত ১০ মিটার সড়কের ভঙ্গুর দশায় চরম দূর্ভোগে পড়তে হয়েছে পথচারীদের। বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে যানচলাচল বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। প্রতিদিন ছোট-বড় দূর্ঘটনা ঘটছেই। যেকোন মুহুর্তে বড় ধরণের প্রাণ হানির আশংকা করছে পথচারীরা। পথচারিদের পাশাপাশি নিধারুণ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীদেরকে।
ওই সড়কের ৪শ’ মিটারের মাথায় রয়েছে ,১টি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও ফরিদগঞ্জ উত্তর প্রাথমিক বিদ্যালয়। তাছাড়া উপজেলা সদরের সাথে চাঁদপুর ও কালির বাজারের বিকল্প সড়ক হিসাবে ব্যবহারিত হয়ে আসছে এ সড়কটি।
বিশেষ করে বাজার ব্যবসায়ীদের খুবই বেকায়দায় পড়তে হয়েছে। মালামাল নিয়ে যাতায়াতে চরম বিপাকে পড়ছে ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলছে।
ব্যবসায়ী অধ্যাপক মোঃ জসিমউদ্দিন, ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন , মোঃ রুবেল ,মোঃ ছিদ্দিকুররহমান পাটওয়ারী, রিশিকেষ ,পরেশসহ অনেকেই জানান, সড়কটির এ বেহাল দশা দির্ঘদিন পড়ে থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। আমাদের প্রতিনিয়ত নিধারুণ কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। আমরা কাকে কি বলবো। আমাদের ভাগ্যের নির্মম পরিহাস বলা ছাড়া আর কি বলতে পারি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ড.জিয়াউল ইসলাম মজুমদার চাঁদপুর টাইমসকে জানান,সড়কটির পরিমান হচ্ছে ৮শ’ ১০ মিটার দৈর্ঘ্য। টেন্ডার পক্রিয়া শেষে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কাজ শুরু করা যাচ্ছেনা। বৃষ্টি কমলে আগামী সপ্তাহে কাজ শুরু করা হবে।
তিনি আরোও জানান, আজিজ এন্ড ব্রাদার্স ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি ১ কোটি ২১ লাখ টাকায় পেয়েছে। কাজটি চাঁদপুর নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে টেন্ডার ও কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। আমার উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর কাজটি দেখাশুনা করবে।
সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদার আঃ আজিজ মুঠোফোনে জানান, কাজটি ১ কোটি ৩৯ লাখ টাকার। বৃষ্টি ও বর্ষার কারণে কাজটি শুরু করা যায়নি। তাছাড়া বেশ কয়েকটি জায়গায় পুকুর পাড়ে গাইড ওয়াল রয়েছে সেখানে পানি নিস্কাশন ছাড়া কাজ করা সম্ভব নয়।
তিনি জানান, ওই সড়কের দু‘পাশে পানি জমে থাকায় সড়কটি নির্মাণের অল্প সময়ের মধ্যে নষ্ট হয়ে পড়ে। তাই এলকাবাসীর দাবীর প্রেক্ষিতে সংসদ সদস্য সড়কের কাজের সাথে দু‘পাশে ড্রেন নির্মাণের জন্য প্রধান প্রকৌশলী দপ্তরে ডিও লেটার দিয়েছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র মো. মাহফুজুল হক জানান, এ সড়কটির করুণ অবস্থা দেখে আমি অক্লান্ত পরিশ্রম করে এমপি মুহম্মদ শফিকুর রহমানের সহযোগিতায় উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরকে দিয়ে বরাদ্দ এনে ডেন্ডার সম্পন্ন করা হয়। টেন্ডার হওয়ার পর প্রায় ৬ মাস অতিবাহীত হলেও কাজটি শুরু করেনি ঠিকাদার।
তিনি জানান, একটি কু-চক্রীমহল পরিকল্পিতভাবে কাজটিকে ঠিকাদার দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে আমার সু-নাম ও সু-খ্যতি নষ্ট করার পাঁয়তারায়। আমি নিজে একাধিকবার ঠিকাদারকে বলেছি সড়কের কাজটি সম্পন্ন করার জন্য। তিনি আজ-কাল শুরু করছি বলে শুধু কালক্ষেপন করে চলছেন।
এদিকে তিনি আরোও জানান, আমার পৌরসভায় কোন কাজেরই গুণগত মান খারাপ হতে দেই নি। তাই পৌর এলাকায় কোন ঠিকাদার ১/২ পার্সেন্ট লেসে কাজ নিতে চায়না। অথচ এ কাজটি ১৭ পার্সেন্ট লেসে নেওয়া হয়েছে । এতে সংগত কারণেই বলাযায় কাজের গুণগত মান কতটা রক্ষা পাবে। এই কাজটি শেষ হলে পৌর বাজারের শতভাগ কাজ সম্পন্ন হবে।
জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইউনূছ হোসেন বিশ্বাস মুঠোফোনে জানান,জুলাই/২০২০ইং এর শেষের দিকে কাজটির কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। কাজ শুরু করতে বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, ফরিদগঞ্জের সংসদ সদস্য সড়কের দু‘পাশে ড্রেনসহ কাজটি সম্পন্ন করার জন্য ডিও লেটার এলজিইডির প্রধান কার্যালয়কে দিয়েছে বিধায় একটু বিলম্ব হচ্ছে। ড্রেন ইনক্লুড করা হলে কাজটি অচিরেই শুরু করা হবে।
প্রতিবেদক:শিমুল হাছান,৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur