ফরিদগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী ছিদ্দিকুর রহমান

‘মানুষের বিপদে মানুষ পাশে দাঁড়াবে এটাই স্বাভাবিক। তবে, বিপদে পাশে দাঁড়িয়ে তা ঢাক-ঢোল পিটিয়ে প্রচার করতে হবে এমন চিন্তায় আমি বিশ্বাসি নই। মানুষের পাশে থেকে ভালো কাজে সহায়তা করা দলমত নির্বিশেষে সবারই দায়িত্ব। আল্লাহ আমাকে যে সামর্থ্য দিয়েছেন সে অনুসারে ভালো কাজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আগামীতে আরও বেশি বেশি কাজ করার জন্য সবার দোয়া, ভালোবাসা ও সহযোগীতা চাই।’

মহানুভবতায় ভরপুর এ কথাগুলো বলছিলেন নিভৃতচারী সমাজসেবক, আওয়ামী লীগ নেতা মো. ছিদ্দিকুর রহমান পাটওয়ারী। ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে তিনি সভাপতি পদ প্রার্থী।

ফরিদগঞ্জে উপজেলা আ’লীগের সম্মেলনসহ রাজনীতির নানান বিষয় নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের চতুথ পর্বে রয়েছে আলহাজ্ব মো. ছিদ্দিকুর রহমান পাটওয়ারীকে নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন।

একজন নিভৃতচারী-সমাজসেবী ছিদ্দিকুর রহমান পাটওয়ারী। ব্যক্তি জীবনে তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। জনগণের কল্যাণে অসংখ্য ভালো কাজ করলেও তিনি সব সময় নিজেকে আড়ালেই রেখেছেন। ব্যবসায়ীক কাজে শত ব্যস্ততার মাঝেও গত দুই দশক ধরে ফরিদগঞ্জ আ’লীগের নেতা-কর্মীদের দুঃসময়ে পাশে থেকে সহযোগীতার চেষ্টা করেছেন। মানুষের কল্যাণে আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রে ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন এ নেতা। প্রচারবিমুখ ছিদ্দিকুর রহমান ব্যবসার পাশাপাশি নিজেকে জড়িত রেখেছেন আ’লীগের রাজনীতির সঙ্গে। দীর্ঘদিন ধরে ফরিদগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন তিনি। ২০০৫ সালে গঠিত উপজেলা আ’লীগের কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে ২০১২ সালে উপজেলা আ’লীগের কমিটিতে সহ সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে এখন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আমদানি-রপ্তানি, ঠিকাদারির পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন।

সম্প্রতি উপজেলা আ’লীগের সভাপতি পদে নিজেকে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা দিয়ে এলাকায় পোস্টারিং করেছেন। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সভাপতি পদে প্রার্থীতা নিয়ে সরগরম তার অনুসারী নেতা-কর্মীরা।

ফরিদগঞ্জে আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ উপমহাদেশের একটি প্রাচীন রাজনৈতিক দল। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকহানাদার বাহিনী ফরিদগঞ্জে যে ৬টি বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছিলো তার মধ্যে আমাদের বাড়িটিও ছিলো। মুক্তিযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সন্তান আমি। জাতির পিতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আ’লীগের একজন ক্ষুদ্রকর্মী হিসেবে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। সাংগঠনিকভাবে দায়িত্বশীল পদে থাকলে জনগণের কল্যাণে অনেক বেশি কাজ করার সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি। ফরিদগঞ্জ উপজেলা আ’লীগকে সুসংগঠিত করতে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছি।
দলীয় কার্যক্রম সর্ম্পকে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফরিদগঞ্জে আ’লীগের সকল সাংগঠনিক কার্যক্রমে গণতন্ত্রের পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে হবে। বিশেষ করে সম্মেলনের মাধ্যমে ইউনিয়ন থেকে ওয়ার্ড পর্যন্ত সকল কমিটিতে ত্যাগী ও যোগ্যদের স্থান দিতে হবে। কে কার লোক সেটি বিষয় নয়। সে আ’লীগ করে কিনা তা হচ্ছে দেখার বিষয়। আমি দলের মধ্যে কোনো গ্রুপিং বুঝি না। দায়িত্ব পেলে দলকে সুন্দরভাবে চালানোর শতভাগ চেষ্টা করবো।

অপরএক প্রশ্নের জবাবে ছিদ্দিক পাটওয়ারী বলেন, চাঁদপুর জেলা ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করেছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আ’লীগের সাবেক সভাপতি ড. শামছুল হক ভুঁইয়া। এখনো তিনি ফরিদগঞ্জে আ’লীগের একটি স্থায়ী কার্যালয় নির্মাণের পাশাপাশি দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখার চেষ্টা করছেন। তবে গত ৪ বছর ফরিদগঞ্জে আ’লীগ অনেকটাই হ-য-ব-র-ল হয়ে গেছে। এর মূল কারণই হচ্ছে দলের ত্যাগীকর্মীদের সঠিক মূল্যায়ন না হওয়া। তবে এখানে এমপি লীগ কিংবা ভাইলীগ আছে বলে আমি বিশ্বাস করি না। দলের সিনিয়র মুরব্বি হিসেবে একেকজনের সঙ্গে একেকজন সর্ম্পক রাখতেই পারেন। আর বড় দলের গ্রুপিং থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। জাতীয় নির্বাচনে নৌকার বিজয়ের স্বার্থে সকল মত পার্থক্য ভুলে সবাই একসঙ্গে কাজ করবে।

চাঁদপুরের বিভিন্ন উপজেলায় সম্মেলন হলেও এখানে কেন হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০১৭/১৮ সালে ফরিদগঞ্জে আ’লীগের বেশ কিছু ইউনিয়নের সম্মেলন হলেও এখনো অনেকগুলো বাকি আছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন না হওয়ার পিছনে এটি একটি কারণ হতে পারে। আর আমিতো দলের নীতিনির্ধারক না, সিনিয়র নেতারাই এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।

সামাজিক কার্যক্রম সর্ম্পকে ছিদ্দিক পাটওয়ারী বলেন, আমার সামর্থ্য অনুসারে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় অনেক বেকারকে গরু কিনে দিয়েছি, গৃহহীনের ঘর নির্মাণে ঢেউটিন প্রদান করেছি, অসহায়ের চিকিৎসা ক্ষেত্রে আর্থিক সহয়াতা ও গরীব-অসহায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগ্রহণে সহায়তা দিয়ে আসছি। রাজনীতিতে যে পর্যায়ে আমি থাকি না কেনো এ সহায়তা সব সময় অব্যাহত থাকবে। কারণ রাজনীতির প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে মানুষের কল্যাণ।

প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ৩০ নভেম্বর ২০২২

Share