রহস্যজনক আগুনে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে নিরাপদ মাতৃত্বের সেবাদান ও স্বাভাবিক প্রসব পক্রিয়া।
রোববার (৩মার্চ ) সকালে অগ্নীকান্ডের এই ঘটনা ঘটে । সংবাদ পেয়ে ফরিদগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস আগুণ নেভাতে উপস্থিত হলেও ততক্ষণে আগুণ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ইউএনও এবং জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক ও স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের প্রকৌশলী। এব্যাপারে থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আয়া নাছরিন আক্তার।
জানা গেছে, রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে রোববার (৩ মার্চ) সকাল ৭টার দিকে আগুণ লেগে যায়। আগুণের স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিচতলায় থাকা একটি মোটর সাইকেল পুঁড়ে যায় এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে যায়। পুরো নিচতলা আগুণের ধোঁয়ায় কালো হয়ে গেছে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সেবা প্রদান কার্যক্রম।
স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আয়া নাছরিন আক্তার বলেন, সকালে ছাদে পায়চারি করার সময়ে নিচতলা থেকে আগুণের ধোঁয়া উঠতে দেখি। তাৎক্ষনিক আমি দোতলায় থাকা স্টাফ ও তাদের পরিবারের সদস্যরা নিচে নামতে গিয়ে দোতলায় উঠার দরজা বন্ধ পাই। এসময়, সোনিয়া ও তানিয়াসহ পেচনের গাছ বেয়ে নিচে নেমে আসি। তাৎক্ষনিক বাইরে থাকা পিয়ন জামাল তালুকদারকে ফোন দিলে তিনি দৌঁড়ে এসে দরজা খুলে দিলে দোতলায় আটকে থাকা বাকিরা বেড়িয়ে আসেন। আগুনে আমার মোটরসাইকেলটি পুড়ে গেছে।
স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিয়ন জামাল তালুকদার জানান, তিনি সকালে কাজ শেষে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের একটু দুরে চায়ের দোকানে চা খেতে যান। আয়া নাছরিনের ফোন পেয়ে দ্রæত গিয়ে নিচতলায় আগুনের ধোঁয়া দেখতে পাই। পরে দোতলায় উঠার দরজা খুলে দিলে অন্যরা বেরিয়ে আসেন।
সংবাদ পেয়ে জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক ডা. নাছির আহমেদ, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জি এস তছলিম আহমেদ, উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মৌলি মন্ডল, স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের উপসহকারি প্রকৌশলী মাহফুজ হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক ফয়সাল হোসেন জানান, স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিকে তারা সুন্দর ভাবে সাজিয়ে ছিলেন। এই কেন্দ্রে প্রসব হওয়ার প্রসূতিকে তারা নিজেরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপহার দিতেন। কিন্তু আগুণে সেবা গ্রহণ বন্ধ হয়ে গেল।
জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক ডা. নাছির আহমেদ বলেন, পুরো উপজেলায় এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি স্বাভাবিক প্রসবের দিক থেকে সেরা। সেবাদানেও তারা অনেক এগিয়ে। কিভাবে আগুন লাগলো তার সঠিক তদন্তের বিষয়টি প্রশাসন দেখবে বলে বিশ্বাস করি। সংবাদ পেয়ে আমরাও দেখতে এসেছি।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জি এস তছলিম আহমেদ বলেন, অগ্নীকান্ডের ঘটনার সঠিক তদন্ত প্রয়োজন। স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সহযোগিতা থাকবে।
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ৩ মার্চ ২০২৪