ফরিদগঞ্জ

ফরিদগঞ্জে সরকারি গাছ কাটতে গিয়ে শুভঙ্করের ফাঁকি

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মাসিক সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে একটি মৃত সরকারি সেগুন গাছ কাটার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে শুভঙ্করের ফাঁকি দেখা দিয়েছে।

মাসিক সভার সিদ্ধান্তকে উপক্ষো করে উপজেলা প্রকৌশলী জিয়াউল ইসলাম মজুমদার একটি মাধ্যমে ৬টি মূল্যবান গাছ কাটার নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছেন। ইতোমধ্যে ওই গাছগুলো কাটা শুরু করেছেন জনৈক ঠিকাদার নাছির উদ্দিন হাজী। এই গাছ কাটার দ্বৈতনীতির যোক্তিকতা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।

প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ২০ সেপ্টম্বর ২০১৮ খ্রি. ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় প্রকৌশলী জিয়াউল ইসলাম চাঁদপুর টাইমসকে জানান, উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে একটি মৃত সরকারি সেগুন গাছ রয়েছে। উক্ত গাছটি অপসারণের বিষয়ে তিনি সভায় আলোচনা করেন। এই আলোচনার প্রেক্ষিতে বিধি মোতাবেক সর্বস্মতিক্রমে গাছটি অপসারণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরবর্তীতে ৪ অক্টোবর তা রেজুলেশনে অর্ন্তভুক্ত হয়।

কিন্তুু স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা প্রকৌশলী জিয়াউল ইসলাম মজুমদার গত ১১ নভেম্বর তার স্বাক্ষরিত একটি পত্রের মাধ্যমে একটি গাছের স্থলে উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে থাকা মূল্যবান ৪টি মেহগনি ও ২টি সেগুন গাছ কর্তন করতে উক্ত ঠিকাদারকে নির্দেশনা দেন। তিনি আরো উল্ল্যেখ করেন যে কর্তন করা গাছগুলো দিয়ে নবনির্মিত উপজেলা হলরুমের ফার্নিচার তৈরি করা হবে। একই সাথে কর্তন করা গাছগুলো ফাইল করার জন্য মের্সাস নাঈম ট্রেড্রার্সের স্বত্ত্বাধীকারি নাছির উদ্দিন হাজীকে অনুমতি প্রদান করেন।

এদিকে মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নাছির উদ্দিন হাজী তার লোকজন দিয়ে ওই গাছকাটা শুরু করেছেন। এসর্ম্পকে নাছির উদ্দিন হাজী চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, দৈনিক শ্রমিক হাজিরার ভিত্তিতে আমাকে ৬টি গাছ কাটার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এ সর্ম্পকে উপজেলা প্রকৌশলী জিয়াউল ইসলাম মজুমদার এ প্রতিনিধিকে বলেন, উপজেলা পরিষদের পূর্বের মাসিক সভায় একটি মৃত গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়। তবে হলরুমের আসবাবপত্র তৈরির জন্য ওই গাছটি সহ আরো ৫টি গাছ কাটার জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও স্যারের উপস্থিতিতে আরেকটি সভায় সিদ্ধান্ত হয়। সামনের সভায় তা রেজুলেশনভুক্ত করা হবে।

এবিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার একটি গাছ কাটার সত্যতা নিশ্চিত করে এ প্রতিনিধিকে বলেন, মূলত উপজেলা হলরুমের ফার্নিচার তৈরির জন্য আরো ৫টি গাছ কাটার আলোচনা হয়েছে। এবিষয়ে সামনের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়া রেজুলেশন হাতে পাওয়ার আগেই সরকারি গাছগুলোর সঠিক মূল্য নির্ধারণ ছাড়াই উপজেলা প্রকৌশলী একটি গাছের পরিবর্তে ৬টি গাছ কাটার সিদ্ধান্ত দেন কোন ক্ষমতা বলে। এমন প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

এছাড়া কর্তন করা এসকল বড় বড় গাছ দিয়ে কি ধরনের আসবাবপত্র তৈরি করা হবে তার কোন সঠিক নির্দেশনা নেই।

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,
১৩ নভেম্বর, ২০১৮

Share