Home / উপজেলা সংবাদ / ফরিদগঞ্জ / ফরিদগঞ্জে সম্পত্তি দখল করে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ
সম্পত্তি

ফরিদগঞ্জে সম্পত্তি দখল করে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়নের দক্ষিণ সন্তোষপুর এলাকায় পারিবারিক সম্পত্তি দখল করে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে আপন চাচা ও চাচাতো ভাইদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দক্ষিণ সন্তোষপুর হায়দার আলী বেপারী বাড়ির অভিমুখে গাছ কেটে সড়ক প্রশস্ত করার কাজ চলছে।

অভিযোগকারী আলাউদ্দিন বেপারী বলেন, “আমার ভাই গিয়াস উদ্দিনের ছেলে বিপ্লব হোসেন রাশেদ, রাসেল হোসেন, টুটুল হোসেন ও মাসুদ হোসেন আমার সম্পত্তি দখল করে রাস্তা নির্মাণ করছে। তারা বনজ ও ফলজ গাছ কেটে ফেলেছে। আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকে হুমকি-ধামকি দেয়। বিষয়টির সুষ্ঠু বিচার চাই।”

তিনি আরও জানান, “আমাদের সম্পত্তি নিয়ে আজ সালিশি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমাকে না ডেকেই তারা সালিশি শেষ করেছে। আমি এই বৈঠকের সিদ্ধান্ত মানি না।”

অন্যদিকে, সোহরাব বেপারী বলেন, “কয়েক মাস আগে আমি আমার ভাতিজাদের কাছে ১৫ শতাংশ জমি বিক্রি করি। তারা বলে আমি রাস্তার পাশের জমি বিক্রি করেছি, কিন্তু আসলে বিক্রি করেছি পেছনের দিকের জমি। এখন তারা আমার ভাইয়ের সম্পত্তি দখল করে রাস্তা প্রসারিত করছে।”

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হায়দার আলী বেপারী পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে প্রায় ২০–২৫ বছর ধরে বিরোধ ও মামলা চলমান। সম্প্রতি স্থানীয় আলম হোসেন বেপারীর আহ্বানে গত দুই মাসে ছয় দফা সালিশি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সর্বশেষ বৈঠকে স্থানীয় আমিন দিয়ে মাপজরিপ শেষে বিরোধপূর্ণ জমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এর পরপরই আলাউদ্দিন বেপারীর ভাতিজারা গাছ কেটে রাস্তা প্রশস্তের কাজ শুরু করে।

অভিযুক্ত গিয়াস উদ্দিন বেপারীর ছেলে রাসেল হোসেন বলেন, “এই জায়গা আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি। চাচা সোহরাব ও চাচির কাছ থেকে আমরা ১৫ শতাংশ জমি কিনেছি। সেই জমির রাস্তা প্রশস্ত করতে গেলে চাচা আলাউদ্দিন বেপারী বাধা দেন। এরপর একাধিক সালিশি বৈঠক হয়। আজ স্থানীয় সালিশরা আমিন এনে মাপজরিপ করে আমাদের জমি বুঝিয়ে দেন।”

তাকে প্রশ্ন করা হয়, অভিযোগকারী চাচাকে বাদ দিয়ে সালিশ সম্পন্ন করা কতটা যৌক্তিক? জবাবে রাসেল হোসেন বলেন, “চাচাকে জানানো হয়েছিল, কিন্তু তিনি উপস্থিত হননি। আমাদের জমি আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, এতে দোষের কিছু দেখি না।”

এদিকে জানা যায়, সোহরাব বেপারী দীর্ঘদিন আদালতে মামলা পরিচালনার পর ২০২৪ সালে একতরফা রায় পান এবং নিজ নামে রেকর্ডভুক্ত করে স্ত্রীকে হেবা দলিল দেন। পরে ২০২৫ সালে তারা ওই সম্পত্তির ১৫ শতাংশ অংশ ভাতিজাদের কাছে বিক্রি করেন।

স্থানীয়রা বলেন, পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরেই বর্তমানে এই বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রতিবেদক: শিমুল হাছান,
৬ নভেম্বর ২০২৫