Home / উপজেলা সংবাদ / ফরিদগঞ্জ / ফরিদগঞ্জে সম্পত্তিগত বিরোধে জের ধরে হামলা আহত ৫
Faridganj-ফরিদগঞ্জ

ফরিদগঞ্জে সম্পত্তিগত বিরোধে জের ধরে হামলা আহত ৫

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে সম্পত্তি ক্রয় করে মাপজরিপ করে বুঝে নিতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন মোঃ তাফাজ্জল হোসেন গাজী (৬৫), রাসেল হোসেন (২৮), সোহাগ (৩৮), স্বপ্না আক্তার (৩২) ও মোঃ হাছান (৩৮)।

২৯ জুলাই শনিবার সকালে পৌর এলাকার পশ্চিম বড়ালি এলাকার বার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, ফরিদগঞ্জ বাজারে ব্যবসায়ী তাফাজ্জল হোসেন তাফু গাজী ৪-৫ মাস পূর্বে সেবা সমিতি থেকে ২২.৫০ শতাংশ জমি বায়না দলিল করেন। জমি সঠিক আছে কি না তা বুঝে নেওয়ার জন্য স্থানিয় সার্ভেয়ার (আমিন) নিয়ে শনিবার সকালে মাপজরিপ করেন। এসময় বার বাড়ির রুহুল আমিনের ছেলে সোহাগ, রুহুল আমিন, স্বপ্না বেগমসহ তাফাজ্জল হোসেনকে গালমন্দ করে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন এবং তাফাজ্জলের মাথায় আঘাত করলে মাথা ফেটে যায়। বাবার উপর হামলার কথা শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন তাফাজ্জল হোসেনের ছেলে রাসেল হোসেন, এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে।

বিরোধে

গুরুতর আহত ব্যবসায়ী তাফাজ্জল হোসেন গাজী

এ বিষয়ে রুহুল আমিন ও পরিবারের লোকজন জানান, এখানে আমাদের সম্পত্তি রয়েছে। আমাদের না জানিয়ে তাফাজ্জল হোসেন এই জমি ক্রয় করতে যাওয়ায় এবং আমাদের না জানিয়ে জমি মাপজরিপ করতে আসায় জিজ্ঞাসা করতে আসলে আমাদের সাথে ধাক্কা ধাক্কির ঘটনা ঘটে। ধাক্কা ধাক্কির এক পর্যায়ে পাশের ঘরের রুস্তম আলী শেখের ছেলে শহীদ ও হাছান জিআই পাইপ নিয়ে আমাদের এলোপাথাড়ি মারতে থাকে এসময় হয়তো তাফাজ্জলের মাথায় আঘাত লেগে মাথা ফেটে যায় এবং আমাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায়ও নিলা ফুলা হয়। তারা আরো জানায়, আমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে এসেছি।

হামলার ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী ওই সম্পত্তিতে কাজ করা রাজ মেস্ত্রি সেলিম হোসেন জানান, তাফাজ্জল হোসেন এখানে কাঠের টুকরো গোছাচ্ছিলেন । এসময় সোহাগ ও তার বাবা রুহুল আমিন গাল মন্দ করতে করতে এসেই তাফাজ্জল হোসেনকে মারধর করেন এবং তাৎক্ষনিক উভয়ের মাঝে হামলার ঘটনা ঘটে।

এবিষয়ে এই জমির মাপজরিপ করতে আসা আওয়ামী লীগ নেতা হাজী কামরুল হাসান সাউদ জানান, আমরা জমি মাপজরিপ করে ফরিদগঞ্জ বাজারে এসে হিসাব নিকাশ করার সময় তাফাজ্জল হোসেনের ছেলে রাসেল ফোন করে জানান, বাড়ির কাছে তার বাবাকে মারধর করছে। শুনেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। এতে আমিও কিছুটা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছি এবং তাফাজ্জল হোসেনকে উদ্ধার করে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

এ বিষয়ে তাফাজ্জল হোসেন জানান, আমি ৪-৫ মাস পূর্বে সেবা সমিতি থেকে ২২.৫০ শতাংশ জমি বায়না রেজিঃ করি। জমি পরিপূর্ণ আছে কি না তা জানার জন্য গন্যমান্য লোকজন ও সার্ভেয়ার মাসুদ আমিনকে নিয়ে মাপজরিপ করাই। এসময় এই সম্পত্তিতে ১৮ শতাংশ জমি বুঝে পাই। উনারা যায়গা থেকে মাপজরিপ করে চলে গেলে আমি ওই খানেই কাজ করতে থাকি। কোন ধরনের কারন ছাড়াই রুহুল আমিন তার ছেলে মেয়ে ও পরিবারের লোকজন নিয়ে এসে আমাকে গালমন্দ করে এবং এক পর্যায়ে মারধর করে। পরে আমার ছেলে রাসেল বাঁধা দিতে আসলে তাকেও বেদম মারধর করে। এসময় সোহেগের হাতে থাকা দেশিয় অস্ত্রের আঘাতে আমার মাথা ফেটে গিয়ে আমি গুরুতর আহত হই।

এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আবদুল মান্নান জানান, সম্পত্তিগত হামলার সংবাদ পেয়ে সকালেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং তাফাজ্জল হোসেন নামে একজন গুরতর আহত অবস্থায় চাঁদপুরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি মামলার প্রস্তুতি চলছে।

প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ২৯ জুলাই ২০২৩