চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে এনজিও সংস্থা সিদীপ’র শিসক স্কুল কার্যক্রমের শিক্ষককে মারধর ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, রূপসা উত্তর ইউনিয়নের পশ্চিম বদরপুর এলাকার দুই কিলোমিটারের মধ্যে কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট ইনোভেশন এন্ড প্র্যাকটিসেস (CDIP) এর শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচী (শিসক)’র আওতায় একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করে। স্কুল প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য একজন শিক্ষক নিয়োগ করে। নিয়োগ পরবর্তী সময়ে শিক্ষক হাফছা আক্তার তাদের বসতঘরে একই এলাকার মুন্সি বাড়িতে স্কুল কার্যক্রম শুরু করে। দুই ক্লাসে ২০ জন শিক্ষার্থী প্রতিদিন দুপুর ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত পড়াশোনা করে আসছে। কিন্তু ছাত্রী-ছাত্রীদের পড়ার শব্দে পার্শ্ববর্তী ঘরের মনির হোসেন (৪৫) ও তার স্ত্রী তাহমিনা বেগম (৩৮) এর ঘুমের ডিস্টার্ব হয় এমন অভিযোগে ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে আসতে নিষেধ করে দেয়। এনিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে না আসায় শিক্ষক হাফছা আক্তার গত ২৬ জানুয়ারী দুপুর পৌনে ৩টার দিকে ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়ি থেকে নিয়ে আসতে গেলে পথিমধ্যে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে হাফছাকে মারধর করে। তার ডাক-চিৎকারে তার পিতা মাহাবুব আলম, মা সেলিনা বেগম ও তার ছোট ভাই তাকে উদ্ধার করতে গেলে মনির গংরা তাদের ব্যাপক মারধর করে আহত করে এবং মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের তা অবহিত করেন। কিন্তু মনির গংরা ঘটনার সমাধান না করে গত ১১ ফেব্রুয়ারি মাহাবুব গংদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
এ নিয়ে শিক্ষক হাফছা আক্তার বলেন, আমার স্কুল পরিচালনায় তাদের ঘুমের ডিস্টার্ব হয় এমন অভিযোগে প্রতিনিয়ত আমাদের বকাবকি করে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের পড়তে আসতে বাঁধাগ্রস্ত করে। পরে ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়ি থেকে নিয়ে আসার প্রতিমধ্যে আমাকে মারধর করে। এ সময় আমার ডাক চিৎকারে আমার মা, বাবা ও ভাই আমাকে উদ্ধার করতে আসলে তাদেরকেও মারধর করে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করায় এবং আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ভাইয়ের করে।
এ বিষয়ে মনির হোসেনের স্ত্রী তাহমিনা বেগম দুপুরে তাদের ঘুমের ডিস্টার্ব হয় এ কথা স্বীকার করে বলেন, আমাদের সন্তানেরা খেলাধুলা করতে গেলে তারাও বাঁধা প্রদান করে সেজন্য আমি বাঁধা প্রশ্ন করেছি।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ইউনুস বলেন, আমি বহুবার সমাধানের চেষ্টা করেছি। কিন্তু মনির গংরা আমাকে উপেক্ষা মাহাবুব গংদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
‘সিদীপ’ ফরিদগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপক মো. পরশ মিয়া জানান, এ বিষয়ে আমি জেনেছি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।