চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের উপর অতর্কিত হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ওই স্কুলের গভর্নিং বডির সদস্য, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় জনগন।
৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়নের শোল্লা বাজারে প্রায় ঘন্টা ব্যাপী উক্ত মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আরিফুর রহমান, স্কুল ম্যানেজিং কমিটির দাতা সদস্য আবু হাসনাত নয়ন পাটওয়ারী, আবু জাফর খশরু মোল্লা, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আঃ মালেক মহন মোল্লা, দাতা সদস্য ও শোল্লা বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি সফিউল আজম শুকু পাটওয়ারী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ইউপি সদস্য সৈকত মোল্লা, দাতা সদস্য মোস্তফা কামাল সবুজ পাটওয়ারী, অভিভাবক সদস্য আব্দুল কুদ্দুস পাটওয়ারী, যুবলীগ নেতা জুলকার হোসেন আরিফ চৌধুরী প্রমূখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, খেলায় জয়-পরাজয় থাকবে এটাই স্বাভাবিক। বিজয় উল্লাস চলাকালে শিক্ষদের উস্কানিতে প্রকাশ্য দিবালোকে খেলার মাঠে শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং অভিযুক্ত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের শাস্তির দাবি জানাই।
উল্লেখ্যঃ ৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলার ফরিদগঞ্জে ফুটবল খেলায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের বেদম মারধর করেছে বিজিতরা। মারধরের শিকার হয়েছে উপজেলার শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা । এতে অন্তÍত ২১ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। গুরুতর আহত ১০ শিক্ষার্থীকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মারধরের সঙ্গে উপজেলা সদরের ফরিদগঞ্জ এ আর পাইলট মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জড়িত ছিল বলে শোল্লা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন একই দিন সন্ধ্যায়।
মঙ্গলবার বেলা আনুমানিক দেড় ঘটিকায় এ ঘটনা ঘটেছে ফরিদগঞ্জ এ আর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে।
অভিযোগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার ৪৯তম গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে আন্তঃস্কুল ফুটবল টুর্ণামেন্টের প্রথম খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে ফরিদগঞ্জ এ আর পাইলট মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় বনাম শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজের ৯ম ও ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অংশ গ্রহণ করে। নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে খেলা শেষ হয়। পরে, টাইব্রেকারে শোল্লা স্কুলের শিক্ষার্থীরা ৩-১ গোলে বিজয়ী হয়। এতে শোল্লা স্কুলের শিক্ষার্থীরা মাঠে দৌড়ে আনন্দ উল্লাস করছিল। ওই সময়ে, আনন্দ উল্লাস বন্ধ করে দ্রুত গাড়িতে উঠে মাঠ ত্যাগ করার জন্য কয়েকজন কিশোর ও তরুণ বিজয়ীদের নির্দেশ দেয় ও বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে বেশ কিছু সংখ্যক ছেলে শোল্লা স্কুলের শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়ে বেদম মারধর করে। এতে, অন্তত ১৫ জন আহত হয়। কারও শরীর কেটে যায় ও নির্যাতনের চিহ্ন ফুটে ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা হামলাকারীদের হাত থেকে শোল্লা স্কুলের শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে। পরে, চিকিৎসার জন্য তাদের চঁাদপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তিকৃত আহতরা হলেন, আরাফাত (১০ম শ্রেণি), নুরুন্নবী (৯ম শ্রেণি), হোসেন (১০ম শ্রেণি), সিফাত (১০ম শ্রেণি), মারুফ (১০ম শ্রেণি), হৃদয় (১০ম শ্রেণি), জিহাদ (১০ম শ্রেণি) ও নাঈম (৯ম শ্রেণি)। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।
শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আরিফুর রহমান নিজ স্কুলের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার জন্য ফরিদগঞ্জ এ আর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ক্রীড়া শিক্ষক সুলতানা রাজিয়াকে দায়ী করেছেন। ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা হকিস্টিক, রড, লাঠিসেঁাটা নিয়ে শোল্লা স্কুলের শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয় ও বেদম মারধর করে। তিনি এ ঘটনায় হতবাক হয়েছেন মন্তব্য করে বলেন, ন্যাক্কারজনক এ ঘটনাটি ইউএনওকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে সুপারিশ করেছেন ইউএনও। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ আর হাই স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক সুলতানা রাজিয়া মারপিটের সামনেই দঁাড়িয়েছিলেন। তিনি কোন ভূমিকা নেননি। উলটো, আমাদের ছেলেরা যখন মারধরের ভিডিও করছিল তখন সুলতানা রাজিয়া তাদের হাত থেকে দুটি ফোন কেড়ে নেয়।
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২