ফরিদগঞ্জে শিক্ষকের পুনরায় যোগদানকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ

ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত করার জেরে বহিস্কৃত শিক্ষক পুনরায় যোগদানের সংবাদে বিক্ষোভে পেটে পড়ে এলাকাবাসী। গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক বিপ্লব কান্তি সরকার স্কুলে পুনরায় যোগদান করতে গেলে তোপেরমুখে পড়েন।

১৯ অক্টোবর বুধবার দুপুরে গোয়াল ভাওর বাজারের পাঁচ শতাধিক মানুষ স্কুলের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় তারা দাবী করে ঐ শিক্ষক (বিপ্লব কান্তি) যাতে কোনোভাবে স্কুলে যোগদান করতে না পারে। সে বিদ্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে যেকোনো মূল্যে তাকে প্রতিরোধ করবে।

মুসল্লিদের শান্ত রাখতে না ফেরে প্রধান শিক্ষক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি জানান। পরবর্তিতে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এবং পুলিশ ফোর্স এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।

এ বিষয়ে গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কবির আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, তার পোস্ট নিয়ে যখন উপজেলা ব্যাপী উত্তপ্ত পরিবেশ বিরাজ করে, তখন ২ সেপ্টম্বর ২০১৯ সালে ফরিদগঞ্জ থানা বিপ্লব কান্তির মোবাইল ও সিম জব্ধ করে। সত্যতা যাচাই করার জন্য তা আইটি শাখাতে প্রেরন করে। পরদিন বিদ্যালয়ের সভাপতি হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী ওসির সাথে সরাসরি কথা বললে তিনি বিষয়টি সত্য বলে জানান। তারই আলোকে তিনি জরুরী সভা ডেকে বিপ্লব কান্তিকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। সেই সাথে সিদ্ধান্তটি বোর্ডকে জানানো হয়। কিন্তু বোর্ড গত ২৩/০৮/২২ তারিখে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ থেকে অবমুক্তি করে তাকে বিদ্যালয়ে পূনরায় যোগদানের সুপারিশ করা হয়। সে আলোকে তিনি গত ১৭ তারিখে স্কুলে আসেন। এবং আজ এই পরিস্থিতি ঘটে।

এ বিষয়ে স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী বলেন, তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এবং সেটা পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। তারপরও আমরা বোর্ডের প্রতি সম্মান জানিয়ে তাকে বার বার নোটিশ দিয়েছি প্রতিষ্ঠানে যোগদান করার জন্য কিন্তু সে করেনি। অথচ সে আমাদের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত বিপ্লব কান্তি সাংবাদিকদের বলেন, আমি বোর্ডের সম্মতিপত্র নিয়ে স্কুলে যাই। ১৮ অক্টোবর ছিলো আমার পুনরায় যোগদানের শেষ সময়। আমি ১৭ তারিখ স্কুলে গিয়ে বোর্ডের পেপার এবং অগ্রিম ৩দিনের ছুটির আবেদন করে আসছি।’

অপর এক প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, আমি আশঙ্কা করেছি সেখানে যোগদান করলে আমার উপর হামলা হবে। তাই থানায় জিডি করেছি।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ প্রতিনিধিকে জানান, ঘটনাটি আমি শুনেছি। এখনো লিখিত কিছু পাইনি। যদি পাই আমরা যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যবস্থা নিবো।’

ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। এবং বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সামাধান করার আহ্বান করি।’

প্রতিবেদক: শিমুল হাছান,১৯ অক্টোবর ২০২২

Share