শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ফরিদগঞ্জে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৪ ডিসেম্বর বুধবার সকালে ইউএনও তাসলিমুন নেসা‘র সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম রোমান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী।
এসময় অনান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জিএস তছলিম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজিজুন্নাহার, থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মান্নান, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমাণ্ডার সহিদুল্যাহ তপাদার, কৃষি কর্মকর্তা আশিক জামিল মাহমুদ, প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক আব্দুস ছোবহান লিটন, পৌর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমাণ্ডার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ, ৩নং সুবিদপুর পূর্ব ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন প্রমূখ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আালী জিন্নাহ, মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা আক্তার রুমা, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আমেনা বেগম, পল্লীবিদ্যুতের এজিএম নাজিরউল্যাহ, ১৬ নং রুপসা দক্ষিন ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শরিফ খান, গোবিন্দপুর দক্ষিন ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক আল আমিন, সাবেক প্যানেল মেয়র মো: খলিলুর রহমান, পৌর ছাত্রলীগের গাজী আলী নেওয়াজ, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পদক হৃদয় গাজী, অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা/কর্মচরী সংগঠনের নেতা আলহাজ¦ রিয়াজ উদ্দিন প্রমূখ।
এময় প্রধান অতিথি বলেন, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয়ের পুর্ব মূহূর্তে আমাদের জাতিকে মেধাশূন্য করতেই বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়। এর পিছনে রয়েছে স্বাধীনতা বিরোধী রাজকাকার আলবদর আলসামাসরা। তারাই বুদ্ধিজীবী ও বিচক্ষণ রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব , শিক্ষক, সাহিত্যিক , সাংস্কৃতিক ব্যক্তি এবং সাংবাদিকদের নির্মম ভাবে হত্যা করে। ভয়-ভীতির সৃষ্টি করে আমাদের স্বাধীনতাকে নস্রাৎ করতে হীন প্রচেষ্টা চালিয়েছিল।
তিনি আরোও বলেন, ফরিদগঞ্জের কুখ্যাত রাজাকার মাও. মান্নানের পরিবারের নামে থাকা স্কুল ও মাদ্রাসার নাম হাইকোর্টের রায়ে মুছে দেয়া সর্তেও অদ্যবদি কাগজপত্রে ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সাইন বোর্ডে সাঁটানো বহাল রয়েছে। আমি প্রশাসনকে অনুরোধ করবো যাতে এগুলো দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের কলংকমুক্ত করা হয়।
পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী একই ভাবে রাজাকার মাও: মান্নানের কঠোর সমালোচনা করেন। কেরোয়ার কুখ্যাত রাজাকার মাও: মান্নানের স্ত্রী হোশনেআরার নামে স্কুলের নাম কিভাবে থাকছে এমন প্রশ্নের পাশাপাশি প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহবান জানান তিনি।
বক্তাদের এমন বক্তব্যে সাধারণ মানুষ ব্যাপক সমালোচনার ঝড় তুলেছে। যারা এমন বক্তব্য রাখলেন তারাই কেরোয়া হোশনেআরা বেগম আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়কে বিপুল পরিমান ঢেউটিন দিয়ে ও ভবন বরাদ্দ পাইয়ে দেওয়ার তদবীর করে সফলতাও লাভ করেছেন। তাছাড়া এমপিও ভূক্তিও বর্তমান সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযুদ্ধা ও বিশিষ্ট সাংবাদিক নেতা মুহাম্মদ শফিকুর রহমানের সময়কালেই এমপিও ভূক্তি লাভ করতে সক্ষমতা অর্জন করেছে। তাছাড়া হাই কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে নাম পলক মুঁছে দিয়ে তৎকালিন নির্বাহী কর্মকর্তা কালো কালির লেফন দিয়ে আসেন। এ সংক্রান্ত রিপোর্ট তখন স্থানীয় ও জাতীয় প্রথম সারির পত্রিকা গুলোতেও রিপোর্ট ছাপানো হয়েছিল। বাস্তবতা হচ্ছে সম্পূর্ণ ভিন্ন, মুছে দেয়া পর্যন্তই দায়িত্ব পালন।
পরবর্তিতে পূবের্র নামেই নাম পলক সাঁটানো ও স্কুলের সকল কাজপত্রে ও বোর্ড / শিক্ষা অধিদপ্তরে কাজে হোসনেআরা বেগম আদর্শ বিদ্যালয়েই চলছে, তাতে কেই খবরদারী রাখেননি। এমনকি এমপিও ভূক্তিতেও সে নামেই অর্šÍভূক্তি পেয়েছে। এত শত রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের লোকজন থাকতে হাই কোর্টের রায়কে কি করে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে রাজাকারের স্ত্রীর নামে বহাল থাকলো প্রতিষ্ঠানটির নাম, এমনটাই প্রশ্ন সাধারণ ও সচেতন লোকজনের। এরই মাঝেতো অন্য মতের কোন সরকারও ক্ষমতায় আসেনি। তাছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতেও কোন পরিবর্তন আসেনি। তাহলে এমটা হয় কি করে? এখানে প্রশ্ন হচ্ছে, বিভিন্ন দিবসে বলার জন্যই কি এ সব বলা, নাকি কার্যকারীতার জন্য বলা ? এমন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে, মুক্তিযুদ্ধাসহ সাধারণ সচেতন মানুষজনদের মধ্যে। তাই আমাদের কথা কাজ ও করণিয় সঠিক ভাবে হওয়ার প্রয়োজন অতীব জরুরী। নচেৎ প্রজন্ম সঠিক ধারণা লাভ করতে ব্যর্থ হবে। তাছাড়া মহান স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখতে দেশ প্রেমে উজ্জীবীত হয়ে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। কারণ এ দেশের স্বাধীনতা ও ভাষার অধিকার রক্তে কেনা ।
আলোচনা শেষে দোয়া ও মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন, উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের ইমাম মাওঃ হাবিবুর রহমান।
প্রতিবেদক:শিমুল হাছান, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২