চাঁদপুর ফরিদগঞ্জের ১৬ নং দক্ষিন রূপসা ইউনিয়নের ১শ ১২ জন গরিব মানুষের সঞ্চিত মোট ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৬শ টাকা পাচ্ছে না স্থানীয় মহিলা অধিদপ্তর। ভিজিডি কার্ডের অনুকুলে বিনামূল্যে সরকারি চাল নিতে এসে গরিবের সঞ্চিত ওই অর্থের সব টাকা গ৩ ৪ মাসেও পাওয়া যায়নি। যে কারনে গরিবের প্রাপ্য ওই টাকা যথাসময়ে দিতে না পারায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে গরিব ও অসহায়রা।
গরিবের সঞ্চিত ওই টাকা পরিষোধ না করায় উক্ত ইউনিয়নের চেয়াম্যান এখন দোষছেন সাবেক ইউপি সচিব গোলাম মোস্তফা শামিমকে। আবার সচিব শামিম দোষছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ইসকান্দার আলীকে। এ নিয়ে যেন ,পাটায় পুতায় ঘষাঘষি, মরিচের দফা শেষ এমন অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গরিবের জন্য সরকারের ভিজিডি কার্ডের অনুকুলে প্রতিমাসে বিনামূল্যে ৩০ কেজি চাল নেয়ার সময় প্রত্যেকে সঞ্চিত হিসেবে ২শ টাকা দিয়ে চাল নিতে হয়। অর্থাৎ ওই টাকা প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ফরিদগঞ্জের মহিলা অধিদপ্তরে জমা দেয়ার নিয়ম রয়েছে। এই টাকা মহিলা অধিদপ্তর ও ইউএনও এর যৌথ একাউন্টে ব্যাংকে জমা রাখা হয়। দু বছর পর ব্যাংক থেকে গরিবের সঞ্চিত ওই টাকা তুলে প্রত্যেকের প্রাপ্য টাকা প্রদান করেন উপজেলা মহিলা অধিদপ্তর।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, ১৬ নং দক্ষিন রুপসা ইউনিয়নে গরিবের মাঝে বিনামূল্যে প্রতিমাসে ৩০ কেজি সরকারি চাল দিতে মোট ১১২ জনের নামে ভিজিডি কার্ড রয়েছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় কার্ডধারী প্রত্যেকে ২শ টাকা করে সঞ্চিত টাকার পরিমান গত দু বছরে মোট ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৬শ টাকা। এই টাকার মধ্যে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বুঝে পেয়েছে মহিলা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মাকছুদা আকতার। বাকী ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৬শ টাকা গত ৪ মাসেও বুঝে না পাওয়ায় গরিবের সঞ্চিত টাকা দিতে পারছে না মহিলা অধিদপ্তর। এই টাকা পেতে প্রতিনিয়ত অসহায় ও গরিব নারী পুরুষ কখনো ধর্না দেয় ইউনিয়ন পরিষদে আবার কখনো ফোন করে মহিলা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাকে।
এ নিয়ে সাবেক সচিব গোলাম মোস্তফা শামিম জানায়, গরিবের সঞ্চিত টাকার ব্যপারে চেয়ারম্যান বলতে পারবে। নিজের ছাড়পত্রের কাগজ দেখিয়ে বলেন,আমি চেয়াম্যানের কাছ থেকে ছাড়পত্র নিয়ে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিয়েছি।
বর্তমান সচিব রাবেয়া বশরী বলেন, এখানে আমি সচিব হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার সময় সাবেক সচিবের কাছ থেকে কোন কিছুই পাইনি। চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় অফিসের সচিবের দায়িত্ব নিতে আমাকে অনেক ঝামেলা ও হয়রানীর শিকার হতে হয়েছে।
১৬নং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ইসকান্দার আলী জানান, সাবেক সচিব গোলাম মোস্তফা শামিম আমার কাছ থেকে কোন ছাড়পত্রই নেয়নি। আমার কাছ থেকে তার ছাড়পত্র নেয়ার বিষয়টি মিথ্যাচার ও প্রতারনা । আমি এ বিষয়ে অচিরেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। যথাসময়ে গরিবের সঞ্চিত টাকা সাবেক সচিব শামিম দেয়নি। তবে এখন আমি গরিবের সঞ্চিত টাকা সহসাই প্রদান করবো।
ফরিদগঞ্জের মহিলা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মাকছুদা আকতার গত মঙগলবার বলেন, সকল ইউনিয়নের গরিবরে সঞ্চিত অর্থের টাকা গত জানুয়ারী মাসেই দিয়েছি। এখন শুধৃু ১৬ নং দক্ষিন রুপসা ইউনিয়ন পরিষদের কাছ থেকে গরিবের সঞ্চিত ৫লাখ ৩৭হাজার ৬শ টাকার মধ্যে এখনো ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৬শ টাকা দিচ্ছে না। এই টাকা পরিশোধের জন্য চেয়ারম্যানকে বারবার তাগাদা দিলে তিনি শুধু দেই দিচ্ছি বলে সময় নিচ্ছেন। বিষয়টি আমি মৌখিক ভাবে ইউএনও স্যারকে অবহিত করেছি।
স্টাফ করেসপন্ডেট
২৭ জুন ২০১৯