নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষনা না করলেও ফরিদগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। প্রচারে ব্যস্ত আওয়ামী লীগ, বিএনপি সহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও।
এবার ফরিদগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাএলীগের সাবেক নেত্রী সেলিনা আক্তার শেলী।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি পাশ শেলী ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ২য় অবস্থানে ছিলেন। এবার মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা জন্য তিনি ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বি সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে একমাত্র নারী প্রার্থী হচ্ছেন তিনি।
নব্বই দশকে ফরিদগঞ্জের তুখড় ছাত্রলীগ নেত্রী সেলিনা আক্তার শেলীর পৌরসভার মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। ছাত্রনেতৃত্ব প্রদানকালে প্রতিবাদী কন্ঠ ও সাহসীকতার জন্য সর্বমহলে তিনি সু-পরিচিতি অর্জন করেন। বিশেষ করে তার অতীত রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সামনে থেকে নেতৃত্ব প্রদানের যোগ্যতা, সততা ও শিক্ষা এই তিনটি বিষয় পৌরসভার ভোটারদের বিবেচনায় বেশ এগিয়ে রাখছে তাকে।
মেয়র পদে প্রার্থী হওয়া সর্ম্পকে সেলিনা আক্তার শেলী বলেন,‘৯০ দশকে দলের দুঃসময়ে আন্দোলন সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। সরকারি দলের নির্যাতন, নিপিড়নের শিকার হয়েছি। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দলের প্রয়োজনে যখন কাজ করেছি তখন কোন কিছু প্রত্যাশা করিনি। দেশ ও মানুষের কল্যাণে, গণতন্ত্রকামী মানুষের মুক্তির জন্যই ছিলো আমার সকল আন্দোলন সংগ্রাম।’
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, দল প্রায় একযুগ ক্ষমতায় থাকলেও দলীয় পদ-পদবী থেকে শুরু করে সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা থেকে আমি বঞ্চিত-অবহেলিত। দলের জন্য পরিশ্রম করেও মূল্যায়িত হয়নি। ফরিদগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে এখন পর্যন্ত আমি একমাত্র নারী প্রাথী। আমার অতীত রাজনৈতিক কর্মকান্ড মূল্যায়ন করে আমাকে নৌকা প্রীতিকে মনোনয়ন প্রদান করার জন্য আপনার প্রতি আকুল আবেদন জানাচ্ছি।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘পৌরবাসীর উন্নয়নে নারী শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্বপ্রদান করবো। বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া নারীরা যেনো সু-শিক্ষায় শিক্ষিত, স্বর্নিভর হয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারে সে বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করবো। সন্ত্রাস, মাদক, ইভটিজিং, বাল্যবিবাহ-সহ সামাজিক ব্যাধি দূর করে একটি সুখী-সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠা করাই আমার লক্ষ্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘পৌরসভায় প্রাপ্ত সরকারি বরাদ্দ সুষম বন্টন অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করবো। এক কথায় পৌরসভা থাকবে দুর্নীতি মুক্ত।
ভোটারদের কাছে সহযোগীতা চেয়ে তিনি আরো বলেন, আমি ফরিদগঞ্জ পৌরবাসীর দোয়া ও সহযোগীতা কামনা করছি।’
জানা যায়, ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজে ১৯৯২-১৯৯৬ সাল ও পরবর্তী ২০০২ সাল পর্যন্ত তিনি জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তার স্বামী প্রয়াত আ.স.ম ফয়সল ছিলেন একজন ত্যাগি ছাত্রলীগ নেতা। ১৯৯২ সালে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতা আ.স.ম ফয়সল বিএনপির হামলার শিকার হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন। তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফয়সলকে দেখতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপতালে যান। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেলির স্বামী ফয়সল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। শেলীর শ্বশুর মো.ছালেহ ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।
ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মরহুম আব্দুল গণির বড় মেয়ে সেলিনা আক্তার শেলী।
করেসপন্ডেট,২ সেপেটম্বর ২০২০