চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে হত্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে ভুক্তভোগীরা সংবাদ সম্মেলন করেছে। রোববার(৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের গোয়ালভাওড় বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি মঞ্জিল হোসেন বেপারী। এসময়ে মামলার আসামী হওয়া ভুক্তভোগী ৯টি পরিবারের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, ফরিদগঞ্জ গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নসহ পুরো উপজেলার গণ্ডি ছাড়িয়ে জেলায় আলোচিত নাম বাবু গাজী। সে একাধারে চোর, মাদক ব্যবাসায়ী এবং আন্ত:জেলা মোটর সাইকেল চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। তার নামে আমাদের জানামতে ১৪টি নিয়মিত মামলা রয়েছে। যার মধ্যে চুরি, মাদক, নারী নির্যাতন এবং মোটর সাইকেল চুরির মামলাও রয়েছে। পুরো এলাকা জুড়ে বাবু গাজী এক আতঙ্কের নাম। যতদিন সে জেলে বা এলাকার বাইরে থাকতো এলাকার মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতো। কিন্তু যখনই সে এলাকায় আসতো নিত্যদিন চুরির ঘটনা ঘটতো। ফলে সাধারণ মানুষ তার যন্ত্রণায় অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল। গত ১৩ নভেম্বর রাতে গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের চররাঘররায় গ্রামে বাবু গাজী চুরি করতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হয়। পরে থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায়। পরবর্তীতে সে গত ২৭ নভেম্বর বাবু চিকিৎসারত অবস্থায় ঢাকায় মৃত্যুবরণ করে। কিন্তু বাবু গাজীর স্ত্রী কুলছুমা তার স্বামীর মৃত্যুর পর তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে থানায় আমাদের ৯টি পরিবারের সদস্যদের নামে মিথ্যা মামলা করেছে। মামলায় আমাদের স্বজনরা তাকে পিটিয়েছে এবং ওই পিটুনির কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যা সত্যি নয়।
এই ঘটনার সাথে কোন ক্রমেই তারা জড়িত নন। তাই মামলা দিয়ে হয়রানি এবং অসৎ উদ্দেশ্য সাধনে তাদের আসামী করা হয়েছে। আমরা এই মামলার সঠিক তদন্ত দাবি করছি। যাতে প্রকৃত সত্য জনসমক্ষে উদঘাটিত হয়। ইতিমধ্যেই এলাকাবাসী এই বিষয়ে দুইশতাধিক লোকের স্বাক্ষরযুক্ত একটি গণস্বাক্ষর কতৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছে।
এ সময় সিনিয়র সাংবাদিক আবু হেনা প্রশ্ন করেন, ঘটনার দিন কার ঘরে চুরি করেছে। এর কোন সঠিক জবাব দিতে পারেনি সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণ কারিরা।
তিনি আরো প্রশ্ন করেন, রাতে কত ঘটিকায় পুলিশ বাবুকে উদ্ধার করেছে, তারা জানান, বাবুকে রাত প্রায় ৩ ঘটিকার সময় পুলিশ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। অথচ বাবুকে ওই রাতের প্রায় ১২টা নাগাদ ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ উদ্ধার করে।
সংবাদ সম্মেলনে এলাকাবাসী ও অভিযুক্ত স্বজনদের মধ্যে সোহেল বেপারী, ইউসুফ সর্দার, সুমন খান, মো. আলী, মাওলানা মোক্তার মিয়া, নাজমা বেগম,নুরজাহান বেগম, শারমিন বেগম প্রমুখ।
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪