চাঁদপুর ফরিদগঞ্জে সড়ক ও জনপদের রাস্তা সম্প্রসারনের স্বার্থে সরকারি গাছ কাটা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে চলছে মামলা।এক পক্ষ দাবি করছেন গাছগুলো সওজের অপরপক্ষ দাবি করছে বন বিভাগের।এ মামলা নিষ্পত্তি কিংবা প্রত্যাহার এখনো হয়নি। গেন মামলার প্রধান আসামি নাছির উদ্দীর হাজী ওরফে কাঠ নাছির।
সরকারি গাছ কাটার বিরুদ্ধে নাছিরের বিরুদ্ধে পুলিশ আদালতে চার্জশীট ও দিয়েছে। এমন পরিস্থিতি সেই নাছিরই আবার সরকারি গাছ কেটে নিচ্ছে। এতে করে পরিবেশের যেমন বিপর্য ঘটছে তেমনি মানুষের মধ্যে অসন্তুষ দেখা দিয়েছে।
খোজ নিয়ে জানা যায়, ফরিদগঞ্জ-রায়পুর সড়কে চোরা কামিন ডাক্তারের ব্রীজ থেকে বর্ডার বাজার পর্যন্ত সওজ থেকে গাছ কাটার অনুমতি নিয়ে গাছকাটতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন নাছির উদ্দীন হাজী।
শুধু তাই নয় অবৈধভাবে বন বিভাগের ওই সরকারি গাছ কাটার অভিযোগে থানায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি হিসেবে কাঠ নাছির জেল খেটে বর্তমানে জামিনে মুক্ত হয়ে এবারো বন বিভাগের সেই গাছগুলো কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে।
এ নিয়ে নাছিরের সোজাসাপ্টা বক্তব্য হলো আমাদের দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতেই ওই সব সরকারি গাছ কাটা হচ্ছে।
তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায়, বন বিভাগের উক্ত গাছ অবৈধ ভাবে কাটার অভিযোগে কাঠ নাছির উদ্দীনকে প্রধান আসামি করে ফরিদগঞ্জ থানার সাবেক ওসি শাহ আলম বাদী হয়ে ৪ আগষ্ট ফরিদগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
(মামলা নং ৬:তারিখ ৪.০৮.২০১৮ইং) বন বিভাগের ফরেষ্টার কামরুলের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ওই মামলা দায়ের করেন। এরপর সেই গাছ গুলো অপসরানোর জন্য নিলামে নেয় আবদুর রব সহ তিন ব্যক্তি। কিন্তু আবদুর রব সেই গাছ কাটতে এসে নাছিরের বাধার মুখে পড়ে।
এক পর্যায়ে তাকে নিয়ে দু’পক্ষের বৈঠক হয়। বনবিভাগের হস্তক্ষেপে দু’পক্ষের সমঝোতার পর নাছির উদ্দীন ওই গাছ কাটা শুরু করে। গত কয়েকদিন ধরে চলছে ওই গাছ কাটার মহাউৎসব। এসব গাছ কাটার বিরুদ্ধে স্থানীয় কয়জন নেতার বাধার মুখে পড়েন নাছির উদ্দীন। এক পর্যায়ে ঐ সব নেতাদের সাথে ও গোপন সমঝোতার বিনিময় করে নাছির সেই গাছ গুলো এখন পুরোদমে কেটে নিয়ে যাচ্ছে।
তবেে ঐ সব গাছের বিষয়ে দাবিদার ২৩ জন উপকার ভোগী থাকলেও গোপনে বিষয়টি সমঝোতা করার কারণে কেউ তা জানতে পারেনি।
উক্ত গাছ নিলামে পাওয়া আবদুর রব বলেন, ‘আমি সরকারি সব নিয়ম মেনে কুমিল্লা সামাজিক বনবিভাগ থেকে নিলামে নিয়েছি। কিন্তু স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন বাধার মুখে পড়ে আমি সরকারি গাছগুলো কাটতে না পেরে একটি পক্ষের হস্তক্ষেপে নাছির উদ্দীনের সাথে সমঝোতায় যেতে বাধ্য হয়েছি।’
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,‘তড়ি-ঘড়ি করে ফরিদগঞ্জ-রায়পুর সড়কের নারকেল তলা থেকে শুরু হয়েছে সরকারি গাছ কাটা।’
এ সময় নাছির উদ্দীনের জানায়,‘আমরা দুই পক্ষ সমঝোতা হয়ে গেছি। আজ কালের মধ্যেই বনবিভাগ আমার বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিবে বলেছে। এখন আর এই সরকারি গাছ কাটতে কোনো সমস্য নেই বলে নাছির দাবি করছেন।’
এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা ইসকান্দার আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,‘কাঠ নাছির কোন আইনে কোন ক্ষমতা বলে সরকারী গাছগুলো কেটে নিচ্ছে তা আমার বোধগম্য নয়। এই গাছ কাটার বিরুদ্ধে সে মামলার চার্জসিট ভুক্ত আসামি। এখন তো রাস্তা সম্প্রসারনের কাজ শেষ। তাহলে এই গাছগুলো কেনো কাটা হবে এমন প্রশ্ন তুলেন তিনি। এতে করে মানুষ যে তার বিশ্রামের জন্যে কিছুটা যে গাছের ছায়া পেতো তা থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে আমি মনে করি।’
এ নিয়ে বনবিভাগের স্থানীয় প্রতিনিধি মোঃ কাউছার বলেন, ‘বিষয়টি আমি মৌখিকভাবে ফরিদগঞ্জের ইউএনও ও বনবিভাগের জেলার কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি।’
বনবিভাগের জেলা কর্মকর্তা মোঃ তাজুল ইসলাম চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, বনবিভাগের গাছ কাটার বিরুদ্ধে নাছিরের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা মামলার গতিতেই চলবে। এখন গাছ তো আর বনবিভাগ নাছিরকে গাছ দেয় নি। নিলামডাকে যে পেয়েছে সে যদি কারো কাছে বিক্রি করে দেয় তাতে আমাদের করার কি আছে।
যে সব সরকারি গাছের মালিকানা নিয়ে দায়ের হওয়া মামলা নিষ্পত্তি কিংবা প্রত্যাহরের আগেই এখন সেই গাছ কাটার বৈধতা আছে কিনা?
এমন প্রশ্নের জবাবে কুমিল্লা সামাজিক বনবিভাগের কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, উক্ত বিষয়ে বিস্তারিত জেনে তিনি পরে নিশ্চিত তথ্য জানাতে পারবেন বলে জানিয়েছেন।
স্টাফ করেসপন্ডেট
১২ ফেব্রুয়ারি,২০১৯