চাঁদপুর ফরিদগঞ্জ চররামপুর মিঝি বাড়িতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সর্বস্বান্তহয়ে গেছে একটি পরিবার। সমস্ত জীবনের সঞ্চিত সম্পদসহ আগুনে পুড়ে সম্পূর্ণ ছাই হয়েছে দু’টি ঘর। পরিবারটি এখন দিশেহারা। অনবরত চলছে হায় মাতম।
অন্যের ঘরে আপাতত আশ্রয় নিলেও, কতদিন এভাবে তাদের জীবন কাটবে, এ প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। আশেপাশের লোকজন মন্তব্য করেছেন, মানুষের প্রত্যক্ষ সাহায্য ছাড়া পরিবারটির অন্তত আশ্রয়স্থল নির্মান করা সম্ভব না।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যা চররামপুর মিঝি বাড়িতে আনুমানিক সাতটার পর আগুনের সূচনা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, বসত ঘরের পাশে পাক ঘরের মাটির চুলা থেকে জ্বালানি কাঠে আগুন লাগে। কিছু বুঝে উঠার পূর্বেই সেখানে থাকা একটি গ্যাস সিলিন্ডার ব্রাস্ট হয়ে দাউ দাউ করে আগুনের লেলিহান শিখা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। দূর থেকে দেখে হাজারও মানুষ ছুটে গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে।
প্রায় এক ঘন্টা পর আগুর নিভলেও, অন্তত চার শতাংশ ভূমির ওপর থাকা বারান্দাসহ চৌচালা বসত ও পাকের ঘর, আসবাবপত্র, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা. কাপড় চোপড়, তৈজসপত্র সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে, অন্তত ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পরিবারের গৃহকর্তা আব্দুল খালেক মিজি একজন চা দোকানী। ঘটনার সময় বাড়ির অদূরে দোকানে ছিলেন তিনি। তার বৃদ্ধ মা, স্ত্রী, দুই কিশোরী কন্যা (১৪ ও ১২) ও একজন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী পুত্র (১০) ঘরের বারান্দায় ছিলেন। আগুনের শিখা দেখে তারা দৌড়ে বের হয়ে জীবন বাঁচাতে পারলেও, রক্ষা করতে পারেননি সম্পদ ও মাথা গোঁজার ঠাঁই।
ঘটনার আকস্মিকতায় বৃদ্ধ মা, স্ত্রী ও কন্যাদের অনবরত চিৎকারে উপস্থিত লোক জনকে চোখের মুছতে দেখা যায়। বাকরুদ্ধ গৃহকর্তা পড়ে ছিলেন পোড়া ঝাঁঝালো গন্ধে ভরা ও ছাইভস্ম হওয়া ঘরভিটির পাশে। লোকজনের কোনো শান্তনাতেই তার সম্বিত ফিরেনি।
এদিকে বাড়ির ও আশপাশের লোক জনের মন্তব্য, আব্দুল খালেক মিজির কোনো ফসলি জমি ও সঞ্চিত টাকা পয়সা নেই। চা বিস্কুটের দোকানের আয়েই তার পরিবার সদস্যরা খেয়েপড়ে চলছেন। মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে তাকে সাহায্য না করলে, মাথা গোঁজার ঠাই পুনরায় নির্মান করা তার পক্ষে সম্ভব না।
প্রতিবেদক- শিমূল হাছান
২৮ জুন ২০১৯