চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদরে ফ্যামিলি কেয়ার মেটারনিটি সেন্টারে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এবিষয়ে মৃত নবজাতকের পিতা পৌর এলাকার চরকুমিরা গ্রামের শ্রী সুমন চন্দ্র দাস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, শ্রী সুমন চন্দ্র দাসের স্ত্রী পূর্নিমা রাণী দাসের প্রসব ব্যাথা উঠলে ১৪ মার্চ সন্ধ্যায় তাকে ফ্যামিলি কেয়ার মেটারনিটি সেন্টারে নিয়ে আসে। ঐ ক্লিনিকের ডাঃ লিপিকা রাণী পাল প্রসুতিকে দেখে তিনি নিজেই আল্ট্রাসনোগ্রাম ও অন্যান্য পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ডেলিভারীর জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা করা হবে এবং একজন উপস্থিত থেকে সবাইকে বাড়ী ছলে যেতে বলে। ঐদিন রাত ২টায় মোবাইল ফোনে রুগীর অবস্থা ভালো না তাকে অপারেশন করতে হবে বলে জানান।
তাৎক্ষনিক তিনি ঐ ক্লিনিকে গেলে ডাঃ লিপিকা রাণী পাল তালে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন এবং আমার কাছ থেকে কাগজে স্বাক্ষর নেন। ঐ ডাক্তার নিজেই রুগীকে অজ্ঞান করে অপারেশন করে ভোর ৬ টায় অপারেশনের মাধ্যমে কন্যা শিশুর জন্ম হয়। শিশুর জন্মের পর শিশু রোগ বিশেজ্ঞ ডাক্তার দেখাবে বলে আমার কাছে ৫ হাজার টাকা দাবী করে। আমি দিতে না পারায় আবারও আমাকে গালমন্দ করে এবং আমার স্ত্রীকে মারধুর করে। পরে আমি ২ হাজার টাকা দেই কিন্তু কোন ডাক্তার দেখায় নি। ওই ডাক্তার নবজাতককে ও তার মাকে অন্য কক্ষে নিয়ে যায় এবং আমাকে ও আমার আত্মীয় স্বজনকে তাদের দেখতে দেয়নি। তাদের দেখতে চাইলে আমাদের গালমন্দ করে এবং আমার আত্মীয়কে চড় থাপ্পর মারে লাঞ্চিত করে। ১৫ মার্চ ৬ টায় হঠাৎ নবজাতক শিশুর অবস্থা খারাপ বলে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে রেপার করে। শিশুর অবস্থা বেগতিক দেখে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল থেকে গতকাল ১০ টায় কুমিল্লা মেডিক্যাল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরো জানান, ডাঃ লিপিকা রানী পালের আনাড়ী, খামখেয়ালীপনা ও ভুল চিকিৎসার জন্য আমার নবজাতক শিশুর মৃত্যু হয়। তাই ন্যায় বিচার ও মানুষের মূল্যবান রক্ষায় প্রশাসনের সকল প্রকার আইনী সহযোগীতা কামনা করছেন সুমন চন্দ্র দাস।
ঐ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী মামুন জানান, তার বোনের মেয়েকে একই অবস্থা চিকিৎসা দিয়েছিল অর্থলোভী ডাঃ লিপিকা রাণী পাল, পরে সাথে সাথে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করার পর আমার বোনের মেয়ে প্রানে রক্ষা পেয়েছে। ঐ হাসপাতালের পাশ্ববর্তী মেডিসিনের দোকানদার জানান, হাসপাতালে রোগী প্রবেশের পরপরই গেইটে তালা লাগিয়ে দেয় এবং তার হাসপাতালে ভিতর থেকে ঔষধ কিনতে রোগীদের বাধ্য করে।
এবিষয়ে ডাঃ লিপিকা রানী পাল বলেন, রায়পুরের ডাঃ ইয়াছিন এনে¯েতসিয়া (অজ্ঞান) ইনজেকশান দিয়েছে কিন্তু ডাঃ ইয়াছিন মোবাইল ফোনে জানান, তিনি ১ সপ্তাহ যাবত ফরিদগঞ্জে আসেন নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ জাহাঙ্গীর আলম সিপন বলেন, এই রকম একটি ঘটনা শুনেছি, অভিযোগ ফেলে তদšত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ফরিদগঞ্জ থানার ওসি (তদšত) হুমায়ুন কবির জানান, এবিষয়ে আমরা সরজমিনে তদšত করেছি ঘটনার সত্যতা পাওয়া গিয়াছে।
||আপডেট: ০৭:৩৭ অপরাহ্ন, ১৭ মার্চ ২০১৬, বৃহস্পতিবার
এমআরআর