চাঁদপুরে ফরিদগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসকের ‘ভুল অস্ত্রপাচারে’ এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত গাইনী চিকিৎসক ডা. মাহমুদাকে আসামী করে মৃত নবজাতকের নানী সাজেদা বেগম বাদী হয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
বর্তমানে ওই চিকিৎসক পলাতক রয়েছে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাসপাতালে কর্মরত এক চিকিৎসকসহ ৩ ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।
হাসপাতালে গিয়ে ঘটনার বিবরণে জানা যায়, (২২ মার্চ) বুধবার রাত ৮টার সময় ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৮নং পাইকপাড়া ইউনিয়নের আইয়ুব আলী পাটওয়ারী বাড়ির মালেয়শিয়া প্রবাসী মো. নাছির হোসেননের স্ত্রী খাদিজা বেগম(১৯)’র প্রসব ব্যাথা উঠলে তাকে সেন্ট্রাল হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও সাবেক ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিজিটর শামীমার কাছে নিয়ে যায়া হয়। পরবর্তীতে শামীমা তাকে রাতে ফরিদগঞ্জ সেন্ট্রাল হাসপতালে পাঠিয়ে দেয়। হাসাপাতালে ৪ বার আল্ট্রাসনোগ্রাম করার পর ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মাহমুদা রাত সাড়ে ১১টার সময় খাদিজা বেগমের অপারেশনের মাধ্যমে নবজাতককে বের করে আনেন এবং নবজাতক প্রতিবন্ধী ও বিকলাঙ্গ হয়েছে বলে প্যাকেট করে নবজাতকের অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করেন।
এ নিয়ে নবজাতকের খালা নাজমা বেগম এ চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘রাতে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ নবজতাক শিশুটিকে মৃত বলে আমাদেরকে বাড়িতে নিয়ে যেতে বাধ্য করে। এবং শিশুটি মৃত বিকলাঙ্গ হয়েছে বলে জানায়। কিন্তু কার্টুনে করে শিশুর মৃতদেহটি বাড়িতে নেয়ার পর লোকজন দেখতে পায় শিশুটির নাড়িভুড়ি বের হয়ে আছে এবং মৃতদেহের নাড়িভুড়ি পেছানো একটি কাছি পড়ে আছে। মূলত ডাক্তারের ভুল চিকিৎসা ও অবহেলার কারণে শিশুটির মায়ের পেট কাটার সাথে বাচ্চাটিরও পেট কেটে নাড়ি ভুঁড়ি বের করে ফেলা হয়েছে। শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. মাহমুদার বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ ও কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীমা মুঠোফোনে চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের ভুল হয়েছে, ব্যস্ত আছি’ মোবাইলের সংযোগ বিচ্ছিন সুইচ অফ করে দেন দেন।
এনিয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ও প্রসবকারী নারীর এনেসথেসিয়া (অচেতনকারী চিকিৎসক) ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম শিপন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘ওমপালোচেল হলো একটা দুর্লভ মেডিকেল কন্ডিশন। যেখানে বাচ্চার পেটের সামনের ওয়ালর মাংস পেশী জন্মগত কারণে গঠিত হয়নি। ফলে বাচ্চার নাড়িভুড়ি এবং লিভার একটা পাতলা আবরণ দ্বারা ঢাকা অবস্থায় পেটের বাইরে থাকে।’
অপরদিকে শিশু মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের জন্য চাঁদপুর পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার ওই হাসপাতাল ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলার জন্য উপস্থিত হন।
পুলিশ সুপার উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তের পর বিস্তারিত জানানো হবে।’
এছাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার ও পৌর সভার মেয়র মো. মাহফুজুল হক হাসপাতালে ঘটনা পরিদর্শনে গিয়েছেন।
আতাউর রহমান সোহাগ
:আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০১: ১৭ পিএম, ২৩ মার্চ ২০১৭, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ