চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ভাটিয়ালপুর চৌরাস্তা বাজারের এ প্রথম সরকারী তালিকা ভুক্ত করা হয়। তালিকাভুক্ত করার পর ইজারার জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী একাধিক নিলাম দাতা অংশগ্রহণ করেন। এরমধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে আব্দুল মতিনকে ইজারাদার ঘোষণা করেন পৌর কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, ভাটিয়ালপুর সরকারি ইজারা হওয়ার পর থেকেই মৎস্য আড়ৎদাররা শুরু করে টাল বাহানা। ইজারাদারের সাথে একাধিকবার বৈঠক করেন আড়ৎদাররা। এতে ইজারাদার সরকারি নিয়ম মোতাবেক শতকরা খাজনা দিতে অস্বীকৃতি প্রকাশ করেন। এরপর ইজারাদারের বিরুদ্ধে নিয়মবহির্ভূত উপজেলা প্রশাসন, পৌর প্রশাসক, উপজেলা ভূমি অফিস, থানা ও ফরিদগঞ্জে অবস্থানরত সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পৌর প্রশাসক ইজারাদার ও মৎস্য আড়ৎদারের সাথে বৈঠক করেন। পৌর প্রশাসক ও উপজেলা ভূমি সহকারী কমিশনার এআরএম জাহিদ হাসান। আড়ৎদারের জানিয়ে দেন ইজারাদারের বৈধতা রয়েছে শতকরা ২ শতাংশ টাকা তোলার। আপনারা ইজারাদারের সাথে আলোচনা করে সমঝোতায় করুন। এরপর সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার জিয়া উদ্দিন ও ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহ্ আলম দুই দফা বৈঠক করেন। এতে মৎস্য আড়ৎদার শতকরা সরকারি নিয়ম মোতাবেক পার্সেন্টটিস দিতে অস্বীকৃতি জানান। আড়ৎদাররা সাপ জানিয়ে দেন সরকারি খাজনা দিয়ে আমার ভাটিয়ালপুর আড়তের ব্যবসা করবো না।
ভাটিয়াপুর চৌরাস্তা বাজারের ইজারার বিষয়ে সচেতন মহল বলেন, নতুন করে একটি বাজার ইজারা বা সরকারি তালিকাভুক্ত করতে হলে ব্যাবসায়ীদের সাথে ইজারার সুবিধা অসুবিধা নিয়ে
আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। পৌর প্রশাসক কোন ধরনের আলোচনা না করে নতুন করে ইজাড়া দেওয়ায় এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। এখনো সময় আছে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নতা ঘটার পূর্বে পৌর প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট জনেরা ইজারাকৃত স্থানে গিয়ে আলোচনা করে সমাধান করার অনুরোধ জানান।
এদিকে ইজারাদার আব্দুল মতিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ভাটিয়াপুর চৌরাস্তায় মৎস্য আড়ৎদার শতকরা পাঁচ শতাংশ আড়ৎদারি নেয়। অথচ আমি শতকরা ০.৫০ পয়সা চেয়েছি সরকারি খাজনা দিতে। তাতেই আড়ৎদারদের আপত্তি শুরু হয়। তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগ দায়ের করেন।
তিনি আরো জানান, আমার সাথে খাজনা আদায়ের বিষয়ে ভাটিয়ালপুর এলাকার সাবেক কমিশনার নজরুল ইসলামের সাথে কথা হয়। তিনি আমাকে সমযতা করে খাজনা আদায় করতে বলেন। এখানে আড়ৎদারের সাথে যদিও আমার খাজনার সম্পর্ক না তাও নজরুল ভাইয়ের পরামর্শ অনুযায়ী কথা বলতে হয়েছে।
খাজনা ও আড়তের বিষয়ে সাবেক কমিশনার নজরুল ইসলাম জানান, ফরিদগঞ্জ উপজেলার মধ্যে অন্যতম মাছ বিক্রয় কেন্দ্র ভাটিয়ালপুর চৌরাস্তা। এ বাজারে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মাছ এনে বিক্রি করে আসছে। দির্ঘদিন ধরে এ বাজার চললেও কখনো ইজারা হয়নি। এই বছর নতুন ইজারা হওয়ার পর ইজারাদার আব্দুল মতিনকে ফোন করে মৎস্য আড়ৎদারের সাথে আলোচনা করতে অনুরোধ করি। আমার কথামতো একাধিকবার আলোচনায় বসলেও আড়ৎদাররা সরকারি নিয়ম মোতাবেক শতকরা ২ শতাংশ খাজনা দিয়ে ব্যবসা করবে না বলে জানায়। পরবর্তীতে আমি আড়ৎদারের পক্ষে ০.৫০ পয়সা করে খাজনা দিতে সিদ্ধান্ত দেই। মতিনও তা মেনে নেয়। আড়ৎদাররা তাও দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর আমি মতিনকে এককালিন একটা টাকা নিয়ে যেতে বলি। কিন্তু মতিনও এককালিন টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানায়।
একাধিক মাছ ব্যবসায়ী জানান, আমারা সকল জায়গায় বাজারের খাজনা দিয়ে মাছ বিক্রি করে থাকি।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ পৌর প্রশাসক এআরএম জাহিদ হাসান জানান, সরকারি বিধি মোতাবেক বৈধ প্রন্থায় ভাটিয়ালপু ইজারা সম্পন্ন হয়েছে। সর্বোচ্চ ডাক দাতা হিসেবে আব্দুল মতিন ইজারা পেয়েছে। ইজারা পাওয়ার পর স্থানীয় মৎস্য আড়ৎদারা একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের আলোকে উভয়কে ডেকে কথা বলেছি এবং আড়তদারদের বলেছি ইজারাদারের সাথে সমন্বয় করে নিতে। তার পর ও যদি খাজনা তুলতে কোন সমস্যা হয় এবং আইনশৃঙ্খলার বাহিনীতে ঘটে তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ৪ মে ২০২৫
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur