বিদ্যুত সংযোগ কিংবা চুলার অস্তিত্ব নেই ঘরটিতে। তবুও আগুণে পুড়ে ছাঁই হয়েছে ঘরটি। ভাইয়ে ভাইয়ে বিরোধের জের থেকেই যে এ আগুণের উৎপত্তি। সে বিষয়ে সন্দেহ নেই প্রতিবেশীদেরও। তবে এ আগুন কি প্রতিশোধের আগুণ। নাকি নিজের নাক কেটে অপরের যাত্রা ভঙ্গের চেষ্টা! সে বিষয়ে নিশ্চিত নন তারা। ঘটনার বিষয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছে।
৮ অক্টোবর মঙ্গলবার মধ্য রাতে অগ্নিকা ঘটনা ঘটে উপজেলার চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের পুঠিয়া গ্রামের মিজি বাড়ীর মাসুদ মিজির ঘরে। তিনি একজন প্রবাসী। ঘটনার দিন তার স্ত্রী রুনা বেগম বাড়িতে ছিলেন না। মাসুদের বোন রানু বেগম বলেন, আমার টাকার প্রয়োজন হওয়ায় আমি ঘরসহ জমিটি আমার বড় ভাই মাসুদের কাছে বিক্রি করে দেই। আমার মেঝো ভাই খোরশেদ আলম কাজল হুমকি দিয়ে বলেছিলেন কিভাবে জায়গা খেতে আসে আমি দেখে নিবো। মঙ্গলবার মধ্য রাতে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে ঘরে আগুণ লাগার বিষয়টি জানতে পারি। প্রতিদিন আমার ভাই কাজল তার মটর সাইকেলটি তার ভবনের সিড়ির নিচে রাখলেও মঙ্গলবার রাখেননি। তাছাড়া আগুণের বিষয়টি টের পেয়ে প্রতিবেশীরা আগুণ নিভাতে উদোম গায়ে ছুঁটে এলেও কাজলের গায়ে সন্ধ্যায় পরিহিত পাঞ্জাবী ছিলো। আমার ধারণা সে ই এই অগ্নিকান্ড ঘটিয়েছে।
ভুক্তভোগী মাসুদের স্ত্রী রুনা বেগম বলেন, আমার ননদ রানার কাছ থেকে ঘরসহ জমিটি ক্রয় করে আমার স্বামী মাসুদ মিজি। শুরু থেকেই আমাদেরকে এ ঘরে থাকতে দিবেনা বলে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছেন আমার ভাসুর খোরশেদ আলম কাজল। প্রবাস জীবনের শুরু থেকে দীর্ঘ সময় আমার স্বামী তার কাছে টাকা পয়সা পাঠিয়েছেন। অথচ আমার স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে উল্টো টাকা আদায় করেছে কাজল। বিভিন্ন সময়ে সে আমাকে মারধরও করেছে। এমনকি আমাকে মেরে ফেলার হুমকিও প্রদান করেছে। তার সাথে ছাড়া আর কারো সাথে আমাদের বিরোধ নেই। সেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
কাজলের ছোট ভাই মো. হোসেন বলেন, আমার দীর্ঘ ১৭ বছরের রুজি করে কাজলের কাছে টাকা পাঠিয়েছি। আমার এ ভাই আমার টাকাগুলো খেয়ে ফেলেছে। আমার ঘর সে দখল করে রেখেছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে সে আমার কাছে ৩০ লক্ষ টাকা দাবী করেছে। যখন আগুন লেখেছে সে একাই বাহিরে ছিলো এবং সেই প্রথম চিৎকার দিয়েছে। কেউ কি পাঞ্জাবী পরে ঘুমায়? আমি তাকেই দেখেছি প্রথম। প্রবাসে থেকে আমরা কি অপরাধ করেছি?
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাজলের মেয়ে বলেন, আমি নিজ চোখে দেখেছি আমার ছোট্ট আব্বু (মো. হোসেন) বালতি নিয়ে অন্ধকারে দৌড় দিয়েছেন। আমার ধারণা আমার বাবাকে ফাঁসাতে তিনিই আগুণ দিয়েছেন। বালতি দিয়ে আগুণ জ্বালায় নাকি নেভায়? এমন প্রশ্নের উত্তরের জবাব সে দেয়নি।
ঘটনার বিষয়ে কাজলের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি ক্যামেরার সামনে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মাসুদের স্ত্রী রুনা বেগম বাদী হয়ে দেবর খোরশেদ আলম কাজল ও শাশুড়ি সুফিয়া বেগমকে বিবাদী করে বুধবার ফরিদগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ১০ অক্টোবর ২০২৪