ফরিদগঞ্জে বাল্যবিয়ে ঠেকাতে প্রধান শিক্ষককে দরখাস্ত দিলেন ছাত্রী

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে বাল্যবিয়ের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। পরিবারের চাপে বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল—এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরাবর লিখিত দরখাস্ত দিয়ে বিয়ে বন্ধের অনুরোধ জানিয়েছে রুহি আক্তার (১৩) নামের ওই ছাত্রী।

রুহি ফরিদগঞ্জ উপজেলার কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার বাড়ি কড়ৈতলী গ্রামের গাজী বাড়িতে। বাবা প্রবাসী আব্দুর রশিদ এবং মা গৃহিণী সুমি বেগম।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রুহি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পংকজ শর্মার হাতে দরখাস্তটি তুলে দেয়। সেখানে সে উল্লেখ করে, তার জন্ম ২০১২ সালের ১৮ জুন। সে এখনো পড়াশোনা করছে এবং নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়েতে রাজি নয়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পংকজ শর্মা বলেন, “দরখাস্ত পাওয়ার পর বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা শিক্ষা অফিস এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনকেও অবহিত করা হয়েছে।”

রুহির মা সুমি বেগম বলেন, “পারিবারিকভাবে পাত্র দেখা হয়েছিল, তবে এখনো বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করা হয়নি। মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছুই করা হবে না। আর যদি ভুল করে বিয়ে দিই, তাহলে আমাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতেই পারেন।”

ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, “বিষয়টি আমাদের জানা আছে। বাল্যবিয়ের ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। আমরা প্রশাসনিক সহায়তা করি।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা রাজিয়া বলেন, “এই বয়সে এমন সাহসিকতা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। আমরা মেয়েটির পাশে আছি এবং যে কোনো মূল্যে বাল্যবিয়ে ঠেকানো হবে।”

প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ২৯ জুলাই ২০২৫