চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার পূর্ব বড়ালী গ্রামে শাহীন নামের এক কিশোরের বাবা মারা যায়। শাহীনের পরিবারের আয়ের একমাত্র উৎস ছিলো তার বাবা।
বাবার মৃত্যুর পর ৫ সদস্যের ওই পরিবারে নেমে আসে অভাব-অনটন ও দুঃখ-দুদর্শা। সে অভাব অনটনের পরিবারে স্বচ্ছলতা এসেছে নার্সারীতে সফলভাবে চারা উৎপাদনের মাধ্যমে। ফুল,ফল, সবজিও কাঠ গাছের চারা উৎপাদন করে যুবক শাহীন এখন স্বাবলম্বী।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, ফরিদগঞ্জ পৌরসভার রুদ্রগাঁও গ্রামে শাহীনের চারা উৎপাদনের নার্সারীগুলো অবস্থিত। বর্তমানে তার ১’শ ২৬ শতাংশ জায়গা জুড়ে ফুল-ফল, সবজি ও কাঠ গাছের চারা রয়েছে। যেগুলো পরিচর্যা করতে ৭-৮ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছে।
শাহীনের সাথে কথা হয় এ প্রতিনিধিরি। তিনি বলেন, বাবার মৃত্যুর পর সংসারে যখন অভাব অনটন নেমে আসে তখন পাশ^বর্তী ক’জনের পরামর্শে দুধের একটি গাভী ২৭ হাজার টাকা বিক্রি করে নার্সারীতে চারা উৎপাদন শুরু করি।
শুরুতে ৩৬ শতাংশ জমি ইজাড়া নিয়ে গাছের চারা উৎপাদন করি। ধীরে ধীরে এ চারা উৎপাদনের পরিমানণ বাড়তে থাকে। বর্তমানে আমার ১ একর ২৬ শতাংশ জমিতে প্রায় ৩০ হাজার গাছের চারা রয়েছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৬ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে আড়াই লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করে একটি নতুন চৌ-চালা ঘর। এ ছাড়া সামনের দিকে আরো ভালো কিছু করার ইচ্ছা রয়েছে। বর্তমানে তার আয়ের একমাত্র উৎস এ নার্সারী।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, নার্সারীতে বিভিন্ন জাতের ফুল যেমন: ইনকা, ছোট গাঁধা, জিনিয়া, ডালিয়া, গোলাপ, উন্নত জাতের সবজির চারা রয়েছে। এ গুলোর মধ্যে রয়েছে – তরী, চাল কুমড়া, শষা, কই, করলা, বরবটি, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, ঝিঙ্গা, মরিচ, পেঁপে ও বেগুন। ফলের চারা হলো – মন্ডল, লিচু, আম, কাজী পোয়ারা, মাল্টা, এলাচী লেবু, কাগজী, আপেল, সবেদা, সুপারি, জলপাই, কমলা, কামরাঙ্গা, ফজলি আম, চায়না কমলা, থাই জাম্বুরা, দেশি জাম্বুরা ও আমড়া। কাঠ গাছ যেমন: রেন্টি, মেহগনি ও লম্বু কাঠগাছ ইত্যাদি গাছের চারা পাওয়া যায়। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন বাজারে চারা বিক্রির জন্য একটি নচিমন, একটি ভ্যান গাড়ি ও দ’ুটি অটো ভ্যান ক্রয় করেছেন।
মো.শাহীন ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। তার একজন শিশু সন্তানের জনক । এছাড়াও মা, এক ভাই ও দু’বোন নিয়ে তিনি বেশ স্বাছন্দ্যেই জীবন যাপন করছেনবলে জানান।
প্রতিবেদক : আতাউর রহমান সোহাগ
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১০: ১১ পিএম, ১৭ মার্চ ২০১৭, শুক্রবার
এজি/ডিএইচ