চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে চলমান দাখিল পরীক্ষায় ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে মামলা দায়ের। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়নের এখলাশপুর মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাও. ইকরাম হোসাইন হামিদ ও মজিদিয়া কামিল মাদ্রাসার দুই চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ইসমাইল হোসেন (৩২) ও তারেকুল ইসলাম(৩০)কে আদালতে প্রেরণ করেছে থানা পুলিশ।
অভিযোগ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার (২৩ এপ্রিল) দাখিল পরীক্ষায় হাদিস বিষয়ে পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়নের এখলাশপুর মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাও. ইকরাম হোসাইন হামিদ কৈশলে ফরিদগঞ্জ মাজিদিয়া কামিল অফিস সহকারী তারেকুল ইসলামকে হাদিস বিষয়ের প্রশ্ন সংগ্রহ করে দিতে অনুরোধ করে। অফিস সহকারী তারেকুল মাদ্রাসার (পিয়ন) ইসমাইল হোসেনের সহযোগিতায় মাদ্রাসায় অবস্থিত দ্বিতীয় তলায় ১০ নং পরীক্ষার হল রুমে পাঠিয়ে মোবাইল দিয়ে ছবি তুলে আনতে বলেন। অফিস সহকারী তারেকুল কথা মতো ইসমাইল পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে পরীক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে মোবাইলে প্রশ্নের ছবি তুলে নিয়ে আসেন। এরপর অফিস কক্ষে গিয়ে তারেকের কাছে মোবাইল ফোন বুঝিয়ে দিয়ে আসেন। তারেকুল তাৎক্ষণিক একলাশপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপারের হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন পাঠিয়ে দেয়া। এরপর মাদ্রাসা সুপার পার্শ্ববর্তী একটি মসজিদে গিয়ে প্রশ্নের উত্তর পত্র তৈরি করেন। এদিকে মাজিদিয়া কামিল মাদরাসা দাখিল পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ উঠেছে যেই ১০ নং হলে দায়িত্বরত পরিদর্শকের বিরুদ্ধে।
প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি গোপন সূত্রে সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া মাদ্রাসার হল সুপার মাও. মফিজুর রহমান এবং অভিযুক্ত তিনজনকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এসময়ে এখলাশপুর মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাও. ইকরাম হোসাইন হামিদ এর হোয়াটসঅ্যাপে ডুকুমেন্ট আকারে ওই প্রশ্ন দেখতে পান। যা ইসমাইলের মুঠো ফোন থেকে তারেক পাঠায় বলে নিশ্চিত হন। যাচাই বাছাই করে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্তদের পুলিশের হাতে তুলে দেন।
এদিকে পরীক্ষা হলে দায়িত্ব অবহেলার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ফরিদগঞ্জ মাজিদিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি এইচ এম আনোয়ার মোল্লা।
প্রশ্নফাঁসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশিষ্টজনেরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সুনিশ্চিত সাজার বিধান থাকলেও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোবাইল কোর্ট পরিচালনা না করে প্রশ্নফাঁসে জড়িতদের থানা পুলিশে সোপর্দ করেন।
প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িত তিন জনকে নিয়মিত মামলায় আদালতে প্রেরণ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহ্ আলম।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুলতান রাজিয়া বলেন, প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করার জন্য নিয়মিত মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ২৪ এপ্রিল ২০২৫