ফরিদগঞ্জ

ফরিদগঞ্জে পুলিশের গুলিতে আহত রুবেল চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যু

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে গত তিন সপ্তাহ আগে পুলিশের গুলিতে আহত একাধিক মামলার আসামি রুবেল শাহ (৩০) মারা গেছেন।

২ এপ্রিল শুক্রবার সকালে রাজধানী ঢাকার মিরপুর সড়কের শ্যামলীর রে মেডি কেয়ার নামে বেসরকারি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত রুবেল শাহর ছোটভাই মুরাদ শাহ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ১২ মার্চ সন্ধ্যায় পুলিশের তালিকায় একাধিক মামলার আসামি রুবেল শাহ্কে গ্রেপ্তার করতে তার গ্রামের বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম লাড়ুয়ায় অভিযান চালায় একদল পুলিশ।

সে সময় পুলিশ দাবি করেছিল, আসামি রুবেল শাহ্কে গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশের ওপর চাকু নিয়ে হামলার চেষ্টা করেন তিনি। এতে আত্মরক্ষায় পুলিশ পিস্তলের গুলি ছুড়লে তাতে রুবেল শাহ্ আহত হন।

জানা গেছে, ফরিদগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম লাড়ুয়া গ্রামের নজরুল শাহ্র ছেলে মো. রুবেল (৩০), প্রকাশ রুবেল শাহ্‌র বিরুদ্ধে জেলার হাইমচরে বিগত ২০১৮ সালে সফরকালে প্রধানমন্ত্রীকে হুমকি প্রদানের ঘটনায় (জি আর ৭/১৮) এবং একই থানায় ডাকাতির ঘটনায় জি আর ৬৮/১৩, জি আর ৯৫/১৮, জি আর ২৪৯/১৮সহ মোট ছয়টি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। এসব মামলার প্রেক্ষিতে গত ১২ মার্চ গোপন সূত্রে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে রুবেল শাহ্কে ধরতে গেলে পুলিশের ওপর চাকু দিয়ে হামলা করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি।

এসময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পিস্তল থেকে গুলি ছোড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হন রুবেল শাহ্। তবে পুলিশের দাবি, আসামি রুবেল শাহ্‌ এর হামলায় এই অভিযানে অংশ নেওয়া এএসআই জামশেদ ও এএসআই শফিক নামে দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন।

পরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রুবেল শাহ্কে উদ্ধার করে প্রথমে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

সর্বশেষ গুরুতর আহত রুবেল শাহ্কে মিরপুর সড়কের শ্যামলী এলাকায় রেমেডি কেয়ার নামে বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে শুক্রবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

মৃত রুবেল শাহ্‌র ছোটভাই মুরাদ শাহ্ অভিযোগ করেন, তার ভাইকে বিনা কারণেই পুলিশ গুলি করেছিল। যে কারণে এখন ভাই মারা গেছেন।

তিনি আরো জানান, রুবেল শাহ্‌র পিঠের ডান পাশ দিয়ে গুলি ঢুকে বুকের সামনে দিকে বের হয়ে যায়। তার দাবি, রুবেল শাহ্’র বিরুদ্ধে প্রতিবেশী এক ব্যক্তির সঙ্গে পারিবারিক বিরোধ নিয়ে দুটি মামলা ছিল। সেগুলোও নিষ্পত্তি হয়। তবে অন্য মামলা সম্পর্কে মুরাদ শাহ্ কিছুই জানেন না বলে জানান।

এদিকে, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি ও পুলিশের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে আজই গ্রামের বাড়িতে মৃত রুবেল শাহ্‌র লাশ নিয়ে আসা হবে।

অন্যদিকে, ওই সময় পুলিশ রুবেল শাহ্কে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে কেনো গুলি ছুড়েছে- এসব বিষয় খতিয়ে দেখতে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) কাজী আব্দুর রহীম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। একই সঙ্গে অভিযানে অংশ নেওয়া পুলিশসহ আরো অনেকের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

সিনিয়র স্টাফ করেসপন্ডেট,শিমুল হাছান ২ এপ্রিল ২০২১

Share