Home / উপজেলা সংবাদ / ফরিদগঞ্জ / ফরিদগঞ্জে নদীর ওপর নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
নদীর

ফরিদগঞ্জে নদীর ওপর নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

ফরিদগঞ্জ উপজেলার অনেক জায়গায় সরকারি সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করেছে এক শ্রেণির অসাধু ও প্রভাবশালী লোকজন। কয়েক যুগ থেকে এমনতর দখল অব্যাহত রয়েছে। তা এখন পাহাড়সম হয়েছে। দখলের মধ্যে খাস ভূমি, নদী, খাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এলজিইডি, সড়ক ও জনপদ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি অন্যতম। এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলার গোয়াল ভাওর বাজারে নদীর ওপর রাতারাতি নির্মিত একটি দোকান ঘর ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে উচ্ছেদ অভিযানটি পরিচালনা করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গোয়াল ভাওর বাজারের পূর্ব পার্শ্বে বহমান ডাকাতিয়া নদীর শাখা। বাজারের দক্ষিণ প্রান্তে দু’দিনের মধ্যে নির্মাণ করা হয়েছিল একটি দোকান ঘর। পূর্বে নদীর তলদেশ থেকে আরসিসি বেইস ঢালাই দিয়ে ওঠানো কলামের ওপর ওই দোকান ঘরটি নির্মাণ করা হয়েছে। জানার জন্য, সংবাদকর্মীরা এ বিষয়ে যোগাযোগ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এসি (ল্যান্ড) এর সঙ্গে। তারা সন্ধ্যার সময়ই সেখানে সংশ্লিষ্ট অফিসের স্টাফ পাঠিয়ে সংবাদের সত্যতা খুঁজে পান এবং দোকান ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন।

সরজমিন রোববার সন্ধ্যায় দেখা যায়, ঘরের জন্য ফ্রেম প্রস্তুত করা হয়েছে। বেড়া ও ওপরে (চালায়) টিন লাগানো হয়নি। গণমাধ্যম কর্মীরা ছবি তুলে ও তথ্য সংগ্রহ করে ফিরে আসার পর, রাতভর দ্রুত গতিতে ঘরটির পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়া হয়।

সকালে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ও উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারসহ কর্মকর্তারা মাপ জরিপ করে দেখেন নির্মিত ঘরটি সরকারি এক নং খাস খতিয়ানভূক্ত। এতে, সেটি সরিয়ে নিতে ও নদী দখলমূক্ত করতে দোকান ঘর নির্মানের সঙ্গে জড়িত আলী আহমেদ ও সোহেল বেপারিকে বলা হয়। তারা সময় চান। এতে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে ও সেনা বাহিনীর সহায়তা চান। বিকেল চারটা নাগাদ ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ও পৃুলিশ ফোর্সসহ সবাই সেখানে উপস্থিত হয়ে অবৈধভাবে নির্মিত দোকান ঘরটি ভেঙ্গে দেন। ওই সময় কয়েক শত উৎসুক জনতা ভাঙ্গার দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেন। উপস্থিত জনতা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের পক্ষ থেকে গৃহীত উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এ বাজারের পাশে নদীর ওপর আরও অনেকগুলো স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। তারা সেগুলোও ভাঙ্গার জন্য আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আলী আহমেদ দাবী করে বলেন, আমাদের জমির ওপর দিয়ে রাস্তা হয়েছে। রাস্তার ওপাশে আমাদের জমি রয়ে গেছে। নদীর ওপর নির্মিত ঘরের ভূমি (ডাকাতিয়া নদী)’র মালিকানা আপনার কি না। এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সরকারি আইনানুযায়ী আমাদের না। অপর প্রশ্নে তিনি বলেন, আইন মোতাবেক ঘর ভাঙ্গা হয়েছে। এতে, আমার কোন আপত্তি নেই। তবে, ভবিষ্যতে আইনানুযায়ী বন্দোবস্ত পেলে ঘর নির্মাণ করবো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংক্ষিপ্ত জবাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুলতানা রাজিয়া বলেন, সরকাাির সম্পত্তি রক্ষায় আমাদের পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে। তিনি এ জন্য সমাজের সকল শ্রেণি পেশার লোক জনের সহায়তা ও সমর্থন চেয়ে এমনতর দখল থেকে বিরত ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশিল থাকার জন্য তিনি সকলকে আহ্বান জানান।

উচ্ছেদ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক এ.আর.এম. জাহিদ হাসান, থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহ্ আলম, সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার জিয়াউল হক, উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আবু বকর সিদ্দিক, পৌর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম পাটওয়ারী, গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা গুলশান ইয়াসমিনসহ পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

প্রতিবেদক: শিমুল হাছান,৩০ ডিসেম্বর ২০২৪