চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় ১ জন গুরুতর আহত হয়েছে।
২৩ আগষ্ট বুধবার দুপুরে ইউনিয়নের গজারিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত মাকসুদা আক্তার (২৫) গজারিয়া এলাকার মৃত আবুল কালামের মেয়ে।
জানা যায়, মাকসুদা আক্তারের পরিবারের সাথে পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে মৃত হাফেজ অলি উল্লার ছেলে হেফজুর রহমান গংদের সাথে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে একাধিক মামলা ও কতেকবার শালিসি বৈঠক হলেও তা সমাধান হয়নি। গত ২২ আগষ্ট মঙ্গলবার এ নিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে শালিসি বৈঠক বসলে হেফজুর রহমান গংরা শালিস চলমান অবস্থায় মাকসুদা আক্তারের গায়ে হাত তোলে এবং শালিসরা হেফজুর রহমানদের আচরনে ক্ষিপ্ত হয়ে শালিস অসমাপ্ত রেখেই চলে আসে। পরে হেফজুর রহমান গংরা মাকসুদা আক্তারের পরিবারকে হয়রানি করতে জরুরি সেবা ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিলে ফরিদগঞ্জ থানার উপ- পরিদর্শক মো. সেলিম মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পরে গত ২৩ আগষ্ট বুধবার দুপুরে মাকসুদা আক্তার তার স্বামীর বাড়ি গজারিয়া থেকে একই এলাকায় বাবার বাড়ি আসার প্রতিমধ্যে হেফজুর রহমানের বাড়ির সামনে আসলে ওতপেতে থাকা তার শ্যালক (রুপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের চরমঘুয়া) এলাকার শরীফ হোসেন (৩০) ও ভাতিজা আদনান ওমর (২৪) দেশীয় অস্রসস্র দিয়ে মাকসুদা আক্তারকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এ সময় হেফজুর রহমান, তার ভাই মোস্তফা কামাল, জামাই সাহেবগঞ্জ এলাকার সাধু মিয়ার ছেলে আবুল কাশেম ও হেফজুর রহমানের স্ত্রী জেসমিন বেগম লাঠি পেটাসহ কিল ঘুসি মারতে থাকে। এ সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে এবং গুরুতর আহতাবস্থায় চঁাদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়।
এ বিষয়ে স্থানীয় নুরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম, হারুন পাটওয়ারী ও এমরান হোসেন জানান, মাকসুদাদের পৈত্রিক সম্পত্তি হেফজুর রহমান গংরা জোরপূর্বক দখলের পায়তারা করেছে। বিভিন্ন সময় তারা মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে। শুধু তাই নয়, হেফজুর রহমানের শ্যালক শরীফ একটি রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে এলাকায় মারামারি, মাদকসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। গত ২২ আগষ্ট শালিসি বৈঠক অমান্য করে মাকসুদা আক্তারকে মারধর করায় শালিস অসমাপ্ত রেখেই শালিসগন চলে যায় এবং মিথ্যা ভাবে পুলিশে অভিযোগ করে। ২৩ আগষ্ট বুধবার মাকসুদা স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি আসার প্রতিমধ্যে শরীফ, আদনান, হেফজুর রহমানসহ কয়েকজন মিলে তাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্য এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম এবং লাঠি দিয়ে আঘাত করে ও কিল-ঘুষি দিয়ে গুরুতর আহত করে।
মাকসুদা আক্তারের মা পারভীন বেগম জানান, হেফজুর রহমান সম্পর্কে আমার ভাই হয়। তার সাথে পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে আমাদের বিবাদ চলে আসছিল। সে আমাদের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে। গত ২২ আগষ্ট এ জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে শালিসি বৈঠক বসলে তার শ্যালক বখাটে শরীফ হোসেন আমার মেয়ে মাকসুদা আক্তারের গায়ে হাত তোলে। এ সময় শালিসরা ক্ষিপ্ত হয়ে বৈঠক অসমাপ্ত রেখেই চলে যায় এবং তারা পুনঃরায় আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়। ২৩ আগষ্ট বুধবার দুপুরে মাকসুদা আক্তার তার স্বামীর বাড়ি গজারিয়া থেকে আমাদের বাড়ি আসার সময় হেফজুর রহমানের বাড়ির সামনে আসলে তার শ্যালক (রুপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের চরমঘুয়া) এলাকার শরীফ হোসেন ও ভাতিজা আদনান ওমর দেশীয় অস্রসস্র দিয়ে আমার মেয়েকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এ সময় হেফজুর রহমান, মোস্তফা কামাল, জামাই সাহেবগঞ্জ এলাকার সাধু মিয়ার ছেলে আবুল কাশেম ও হেফজুর রহমানের স্ত্রী জেসমিন বেগম লাঠি পেটাসহ কিল ঘুসি মারতে থাকে। এ সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে। পরে আমরা হাসপাতালে ভর্তি করাই এবং থানায় মামলা দায়ের করি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত হেফজুর রহমান এর শ্যালক শরীফ হোসেনের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও সে ফোনটি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার উপ- পুলিশ পরিদর্শক সেলিম মিয়া জানান, জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আমি উভয় পক্ষকে বলেছি তাদের কোন সমস্যা থাকলে থানা অথবা আদালতে যাওয়ার জন্য। তবে আমি ঘটনাস্থলে মারামারি হয়েছে এমন কিছুই পাইনি।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার উপ- পুলিশ পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন জানান, মাকসুদা আক্তারকে মারধরের ঘটনায় একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। সে আলোকে একজনকে আটক করে আদালতে সোপর্দকরেছি।
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান,২৭ আগস্ট ২০২৩