চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ছাত্রদলের পূর্ব নির্ধারিত প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কর্মসূচিতে হামলা করেছে ছাত্রলীগ। আধাঘণ্টা ধরে চলমান উভয় ছাত্রসংগঠনের সংর্ঘষে পুলিশসহ বিএনপি ও ছাত্রদলের ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) সকালে ফরিদগঞ্জ পৌর শহরের ওয়াপদার সামনে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলা ও পৌর ছাত্রদল ওয়াপদার সামনের রব প্লাজার ২য়তলায় ৩৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানে আয়োজন করে।
সকাল থেকে অনুষ্ঠান স্থলে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকে। সকাল সাড়ে ১০ টার সময় লাঠি হাতে ছাত্রলীগের একটি মিছিল দক্ষিণ দিক থেকে ফরিদগঞ্জ বাজারের দিকে আসতে থাকে। একই সময় ছাত্রদলের আরেকটি মিছিল বাজারের উত্তর দিক থেকে অনুষ্ঠান স্থলের দিকে আসতে থাকে। ওয়াপদা অতিক্রম করার সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের মিছিলে উপর চড়াও হয়। পুলিশ উভয় পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করে।
পরে আবারো ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে ওয়াপদার সামনে গিয়ে ছাত্রদলের অনুষ্ঠানে হামলা করে। এসময় ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাবেক এমপি ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি লায়ন মো. হারুনুর রশিদ, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফ মোহাম্মদ ইউনুছসহ বিএনপিও ছাত্রদলের শত শত নেতাকর্মী অনুষ্ঠান স্থলে ভবনের ২য়তলায় অবস্থান করছিলো।
এসময় পুনরায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠান স্থলে প্রবেশের চেষ্টা করলে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মো. শাহ আলমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিভৃত করার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার ও দলীয় নেতাকর্মীদের নিভৃত করার চেষ্টা চালান। কিন্তু ততক্ষণে উভয় পক্ষের মধ্যে শুরু হয় যায় ফিকেটিং। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ভবনের উপর থেকে ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পৌরসভার সামনে এবং সড়কের উপর থেকে অনুষ্ঠান স্থলে ইটপাটকেল ছুড়ে মারতে থাকে।
এসর্ম্পকে উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আয়ক সোহেল খাঁন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের পেটুয়া বাহিনী ছাত্রলীগ অর্তকিতভাবে হামলা চালিয়েছে।’
আহতদের সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘হামলায় উপজেলা যুবদলের দপ্তর সম্পাদক ওসমান শেখ, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল তালুকদার খোকন, ৩নং ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাসেল, ১৬নং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি শিবলু, ১নং ইউনিয়ন ছাত্রদলের আসিফ হোসেন জনি, ৬নং ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুজন শেখ, ১০নং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সুমন, পৌর ছাত্রদল নেতা রাজু, বিএনপি নেতা সবুর খাঁন রুবেল আহত হয়েছে। এরইমধ্যে গুরুতর আহত দুজনকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
বিনা উসকানিতে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় তিনি নিন্দা জানান।
অপরদিকে ফরিদগঞ্জ থানা সূত্রে জানা যায়, থানা পুলিশের এস আই মমিন, মো. রিপন, রুপন, আজাদ, মো. রিপন ও উভয় পক্ষের সংর্ঘষের ঘটনা থামাতে গিয়ে আহত হয়েছেন।
এছাড়া পুলিশ আরো জানিয়েছে সংর্ঘষ নিয়ন্ত্রণে শটগানের ৬ রাউন্ড গুলি নিক্ষেপ করা হয়েছে।
এসর্ম্পকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মাহাবুব আলম সোহাগ দাবি করেন, ‘ছাত্রদলের পোলাপাইন বাজারের নিরহ মানুষের উপর হামলা করেছে। জনগণকে নিরাপত্তাদান ও রক্ষার জন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চেষ্টা করেছে মাত্র।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকার সাংবাদিকদের জানান, ‘সংঘর্ষে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী আহত হয়নি। তবে কেন এই সংর্ঘষ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন উত্তর দেননি।’
এদিকে ঘটনার পর ঘটনাস্থেলের আসে পাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এই সংবাদ লেখা পর্যন্ত কারো বিরুদ্ধে কোন মামলা দায়েরর খবর পাওয়া যায়নি।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৫:১৩ পিএম, ৬ জানুয়ারি ২০১৮, শনিবার
ডিএইচ