আমার স্বামীর দোষ নাই, আমার স্বামী আমাকে অনেক মায়া করে, আমি সংসারের কোন কাজ করতে পারি না। আমার মাথার অশান্তিয়ে নিজের জিবন দিতেছি। আমার ছেলে-মেয়েদের দেখে রেখো স্বামী। আমারে কেউ কোন কিছু করে নাই, আমার লাশ পুলিশে দিয়েন না। চিরকুটে এ সব কথা লিখে নিজ ঘরের বাশের আঁড়ার সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ৪ সন্তানের জননী নাসিমা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূ।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের পূর্ব পোয়া গ্রামে ওই নিজ বসতঘর ৪ সন্তানের জননীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ সুরতহাল করার সময় চিরকুটটি পায় পুলিশ। নিহত গৃহবধূ নাছিমা বেগম একই গ্রামের মনা গাজী বাড়ীর দিনমজুর হিরন মিয়ার স্ত্রী।
মৃতের বোন হাসিনা বেগম বলেন, গত ২০ বছর পূর্বে আমার বোনের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিনপর আমার দুলাভাই বিদেশে চলে যায়। কয়েকটি দেশে বিদেশ করেও আমার দুলাভাই ভালো কিছু করতে না পেরে গত ৭ বছর পূর্বে দেশে চলে আসে। সে থেকে আমার বোনের মাথায় সমস্যা সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন চিকিৎকদের চিকিৎসা নিয়েও ভালো হয়নি। আমার বড় ভাগ্নির বিয়ে হয়েছে, বাকিদের নিয়ে সব সময় চিন্তা করতো আমার বোন। আমার দুলাভাই দিন মজুরের কাজ করে, কখনো অটোরিকশা চালায়, আবার কখনো কৃষি কাজ করে। হঠাৎ আজকে জানতে পারি আমার বোন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
মৃত ওই গৃহবধূর মেয়ে রাহেলা আক্তার (১০) বলেন, আমার মা অসুস্থ্য, আমি মাকে দুধ চা আর রুটি নিজ হাতে সকালে খাওয়াইছি। পরে দাদীর ঘরে গিয়েছি, সেখান থেকে ২ ঘন্টাপর ঘরে এসেছি আমি খাবার খাবো। তারপর দেখি আমার মা ফাঁসি দিয়েছে। এ দেখে আমি চিৎকার দিলে মানুষরা এসে পুলিশকে খবর দেয়।
হিরন মিয়া বলেন, আমি সকালে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়েছি। ধানুয়া এলাকায় যাওয়ার পর মোবাইলের খবর পেয়েছি আমার স্ত্রী ফাঁসি দিয়েছে। পরে বাড়িতে আসছি।
ফরিদগঞ্জ পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) প্রদীপ মন্ডল বলেন, গৃহবধূর আত্মহত্যার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক সিমটম দেখে এটিকে আত্মহত্যা বলেই মনে হয়েছে। তবুও মৃত্যুর সঠিক কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান,২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩