ফরিদগঞ্জে গরুর বর্জ্য পরিবেশ দূষণ

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের বালিথুবা গ্রামের রহমত উল্লাহ’র গরুর খামারের বজের্য পানি ও বায়ু দূষণের শিকার হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন আশেপাশের ৪ বাড়ির প্রায় ৫০ টি পরিবারের ৫ শতাধিক মানুষ। কৃষ্ণপুর- বালিথুবা দরবার শরীফ যাওয়ার পথে ও আশপাশের পুকুর, ডোবা, গড়েরর পানি দূষণের ফলে বিভিন্ন জীবাণুর সৃষ্টি হচ্ছে।

এলাকাবাসী খামার অপসারণের জন্য ইতোমধ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করলেও কাযর্যত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের বালিথুবা এলাকার অলি উল্যাহ উকিলের ছেলে ব্যবসায়ী রহমত উল্যাহ বাড়ির আঙ্গিনায় নাহার এগ্রো ফার্ম নামে গরুর খামার করেছেন। বজর্য অপসারনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করে খোলা স্থানে তিনি বজর্য অপসারণ করার ফলে আশেপাশের ৪টি বাড়ীতে সব সময় দুর্গন্ধের লেগে থাকছে। বজর্য খোলা স্থানে ফেলার কারণে বিভিন্ন জলাশয়ের পানি দূষণের ফলে বিভিন্ন জীবানুর সৃষ্টি হচ্ছে ও মশার জন্ম নিচ্ছে।

এছাড়া এ রাস্তায় চলাচলকারী সাধারন মানুষ ও মসজিদের মুসল্লীদের চলাচল ব্যহত এবং মুসল্লীদের জামা কাপড় নষ্ট হচ্ছে।

ফার্মের পাশের আয়েশা বেগম লিপি বলেন, রহমত উল্যাহ আমার বসত ঘরের পিছনে গরুর খামার গড়ে তুলেছেন। এখানে প্রায় শতাধিকের মত গরু-ছাগল লালন পালন করছেন। খামারের গরু-ছাগলের বজের্যর দুর্গন্ধ ঘরের মধ্যে সব সময় থাকে। গরুর বজের্যর গন্ধে আমরা ঘরে থাকতে পারি না, ঘুমাতে পারিনা, খেতে পারিনা এমনকি আমার সন্তানরা ঠিক মত পড়াশোনা করতে পারেনা।

মসজিদের মুসল্লী সহিদ উল্লাহ, আবুল হোসেন জানান, খামারের বজর্য দ্বারা দূষিণের ফলে ঠিক মত নামাজ, রোজা করতে পারি না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের একাধিকবার অবহিত করলেও তারা কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
তারা আরও জানান, রহমত উল্যাহ’র অনেক টাকা থাকার কারনে তার বিরুদ্ধে কেহই কথা বলেনা এবং জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীরা তার টাকার কাছে জিম্মি হয়ে আছেন। যে কেহই তার বিরুদ্ধে কথা বলে, টাকার বিনিময়ে তার মুখ বন্ধ করে রাখা হয়।

রাস্তায় চলাচলকারী স্থানীয় কয়েকজনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা বলেন, গত প্রায় বছর খানেক সময় ধরে রহমত উল্যাহকে বজর্য অপসারনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলে আসলেও তিনি কর্ণপাত করেননি। পরিবেশ আইনের তোয়াক্কা না করে খামার দেয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত। এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসন এবং সরকারের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

গরুর খামার দিয়ে পরিবেশ দূষনের বিষয় জানতে চাইলে খামারের মালিক রহমত উল্যাহ পরিবেশ দূষনের কথা স্বীকার করে বলেন, আমি অন্যত্র নতুন করে খামার তৈরি করছি এবং অচিরেই খামার স্থানান্তর করবো। বজর্য নিস্কাশনের কোন ব্যবস্থা না করে এবং স্থানীয়দের বসবাস অযোগ্য খামার তৈরির কেন করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি এ বিষয়ে কোন কথা বলতে পারবেননা বলে জানান।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এইচ এম হারুন অর-রশিদ জানান, এ বিষয়ে আমি রহমত উল্যাহকে বলেছি গরুর খামার অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া জন্য এবং তা অচিরেই সরিয়ে নেওয়া হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের স্যানিটারী ইন্সপেক্টর মো. নজরুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে আমি গত দুই দিন আগে জেনছি, আমি এ উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছি এবং সপ্তাহে একদিন দায়িত্ব পালন করছি। আগামী শনিবার আমি ঘটনাস্থলে যাবো।

প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

Share