Home / উপজেলা সংবাদ / ফরিদগঞ্জ / ফরিদগঞ্জে খেয়াঘাট দখল করে শৌচাগার নির্মাণ!
খেয়াঘাট

ফরিদগঞ্জে খেয়াঘাট দখল করে শৌচাগার নির্মাণ!

ডাকাতিয়া নদী দখল এবং দূষণ মুক্ত করতে যখন চাঁদপুর জেলা প্রশাসন আর ‘ডাকাতিয়া নদী ও খাল খনন সংগ্রাম কমিটি’ ব্যাপক তৎপর, ঠিক তখন ডাকাতিয়া নদীর জায়গা দখল করে শৌচাগার নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাজান পাটওয়ারীসহ একটি প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে। শৌচাগার নির্মাণ বন্ধের দাবী জানিয়ে সোহেল হোসেন ও মহিন উদ্দিন নামে দুই ব্যক্তি ভুক্তভোগী এলাকাবাসী ও গল্লাক বাজারের ঘর মালিকদের পক্ষে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন করেছেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার গুপ্টি ইউনিয়নের গল্লাক বাজারে ডাকাতিয়া নদীর একটি খেয়াঘাট রয়েছে। নদীর জৌলুস আগের মত না থাকায় ঘাটটি অনেকটাই পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। সম্প্রতি ইউপি চেয়রম্যান শাহাজান পাটওয়ারী খেয়াঘাটের স্থানে শৌচাগার নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। এতে নদীর দুই তীরস্থ কয়েক সহস্রাধিক অধিবাসী এবং ব্যবসায়ীরা নদী দূষণ ও স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কায় করছেন।

মেডিসিন, মা ও শিশু রোগে অভিজ্ঞ মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট মানিক লাল সাহা বলেন, আমার চেম্বারের পাশেই শৌচাগার তৈরী করা হচ্ছে। এই শৌচাগার হলে আমিই বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হবো।

স্থানীয় অধিবাসী মহিন গাজী বলেন, খেয়াঘাটটি শর্তবর্ষ পুরোনো। যাতায়াতে এবং পণ্য পরিবহনে এ ঘাটটিই ছিল প্রধান মাধ্যম। আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ঘাটটি আগের মত ব্যবহার হয়না। গল্লাক বাজারের গুটি কয়েক ব্যবসায়ী উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ঘাটে আবর্জনা ফেলে এটিকে গত কয়েক বছর ধরে পরিত্যক্ত হিসেবে গড়ে তোলেন। চেয়ারম্যানকে জানানো হলে তিনি এটি একাধিকবার পরিস্কার করেন। শৌচাগার নির্মাণের বহু জায়গা আছে, সেসব জায়গায় নির্মাণ করা হোক। অথবা বাজারের পুরোনো যে শৌচাগারগুলো সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগী করা হোক। আশেপাশের অনেকেই বিষয়টি নিয়ে ভয়ে মুখ খুলছেন না।

এলাকাবাসীর পক্ষে অপর একজন বলেন, এখানে গণশৌচাগার হলে আমরা যারা কাছাকাছি বসবাস করছি আমাদের সমস্যা হবে। শৌচাগারের বর্জ্য নদীতে বাহিত হবে এবং পানি দূষিত হয়ে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়বে। আমাদের পরিবারের সদস্যরা দৈনন্দিন কাজে নদীর পানির উপর নির্ভরশীল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান শাহাজান পাটওয়ারী বলেন, ২০১১ সালে আমি নির্বাচিত হয়ে আমার অর্থে স্কুলের জায়গায় একটি শৌচাগার নির্মাণ করেছিলাম। বাজারের কোন শৌচাগার নাই। বাজারের জায়গাও নাই। খেয়াঘাটটি দীর্ঘ সময় ধরে পরিত্যক্ত। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলে বরাদ্দ পেয়েছি। আধুনিক একটি শৌচাগার বাজারের ব্যবসায়ীদের আমি উপহার দিয়ে যাবো।

ঘটনার বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবো।

প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫