ফরিদগঞ্জে কৃষি জমির ‘টপ সয়েল’ কাটায় কমে যাচ্ছে ফসল উৎপাদন

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের একাধিক স্থানে কৃষি জমি থেকে ‘টপ সয়েল’ অর্থাৎ মাটির উপরিভাগের অংশ কেটে নিয়ে যাচ্ছে ইটভাটায়। এতে জমির উর্বরতা কমে যাওয়ায় কমছে ফসলের উৎপাদন। ইতিমধ্যে এই বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হলেও মাটি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করেনি প্রশাসন। কৃষকদের ভুল বুঝিয়ে অল্প দামে মাটি কেনেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। এতে কমে যাচ্ছে ফসলি জমির প্রয়োজনীয় জৈব সার।

সচেতন মহল মনে করছেন, জমির উপরি ভাগের মাটি কাটলে সেখানকার প্রায় ৫০-৬০ শতাংশ উর্বরতা নষ্ট হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত জমি আগের অবস্থায় ফিরতে সময় লাগে অন্তত পাঁচ থেকে ছয় বছর। উপজেলাজুড়ে চলতে থাকা ‘টপ সয়েল’ কাটা বন্ধ না হলে কৃষিতে বিপর্যয় নামার শঙ্কা করছেন তারা।

সরেজমিন উপজেলার বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের দেইচর, সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়নের লক্ষীপুর, গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের গুপ্টি এলাকাসহ উপজেলার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, ধানের জমি থেকে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। মাটি ব্যবসায়ীরা কৃষকদের অল্প টাকা দিয়ে জমির উপরিভাগের ২ থেকে ৩ ফুট পর্যন্ত কেটে অবৈধ ট্রাক্টরে করে নিয়ে যাচ্ছে। এ মাটি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ইটভাটাসহ ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হয়।

উপজেলার গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের একাধিক কৃষক বলেন, মাটি ব্যবসায়ীরা স্থানীয়দের বলে থাকেন, জমির উপরিভাগের মাটি কাটলে উর্বরতা বাড়ে। এ কথা মেনে অল্প টাকায় মাটি বিক্রি করছেন কৃষকরা। মাটি উত্তোলন বন্ধ না করলে উপজেলায় কৃষিতে উৎপাদন বিপুল পরিমাণ কমে যাবে।

এ বিষয়ে বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের ইউপি সদস্য বাহাউদ্দিন বাবলু বলেন, ফসলি জমির মাটিকাটার ফলে সাধারন কৃষক এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষতি কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশিক জামিল মাহমুদ বলেন, ফসল উৎপাদনে রাসায়নিক সারের তুলনায় জৈব সার বেশি কার্যকরী। জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নেওয়ায় জৈব সারের পরিমাণ কমে ও মাটির পুষ্টি নষ্ট হয়ে যায়। এতে করে ফসল উৎপাদনে বিপর্যয় নেমে যাওয়ার আগে এ মাটি কাটা বন্ধ করা জরুরি।

প্রতিবেদকঃ শিমুল হাছান,১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২

Share