কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে বাবা মারা গেছে প্রায় ৮ বছর পূর্বে। স্বার্নালী আক্তার তখন অবুঝ শিশু। মা তাছলিমা বেগম মেয়ের যেন কোন কষ্ট না হয় সে জন্য আর বিয়ে পর্যন্ত করেনি। তাছলিমা আক্তার একমাত্র মেয়েকে বুকে আগলে রেখে অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করতে থাকে। নিজের ভবিষ্যৎকে বিপন্ন করে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতে থেকেই কোন মতে জীবন জীবিকা চলে আসছিল। স্বপ্ন ছিল একমাত্র মেয়েকে সুশিক্ষিত করে গড়ে তুলবে। তাছলিমা আক্তারের স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই রয়ে গেল।
৩০ জুলাই রোববার দুপুরে ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সরকারী ডিগ্রী কলেজ থেকে বাড়ি ফিরেই আত্মহত্যা করে স্বর্নালী (১৯)। মায়ের সকল স্বপ্নকে অপূর্ণ রেখেই সৌদি প্রবাসী প্রেমিকের সাথে অভিমান করে ছোট মামা সাখাওয়াত হোসেনের বসত ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে স্বর্নালী।
আত্মহত্যার সংবাদ পেয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) প্রদীপ মন্ডল সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থল থেকে মৃত দেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
জানা যায়, স্বনার্লী উপজেলার ৮নং পাইকপাড়া ইউনিয়নের দায়ছারা গ্রামের মৃত আক্তার হোসেনের একমাত্র মেয়ে। স্বনার্লী আক্তার নানার বাড়ি উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের পশ্চিম রূপসা বেপারী বাড়িতে থেকেই পড়া লেখা করতো। স্বর্নালী ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সরকারী ডির্গ্রী কলেজে ব্যবসা বিভাগ থেকে এইবার এইচ এস সি পরীক্ষার্থী ছিল।
স্বর্ণালীর সহপাঠি রুনাসহ আরো কয়েজন জানান, গত ৩ বছর পূর্বে উপজেলা ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের কালির বাজার এলাকার সৌদি প্রবাসী আহসান সজিবের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। সজিব প্রবাসে থাকলেও তাদের প্রতিনিয়ত যোগাযোগ ছিল, কিন্তু ঘটনার দিন জানতে পারে সজিব তার ভাই ও মায়ের কথায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে খালাতো বোনকে বিয়ে করেছে বলে স্বর্নালীকে জানায় এবং স্বর্নালীর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে কলেজ থেকে ফিরেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) প্রদীপ মন্ডল বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ৩০ জুলাই ২০২৩