ফরিদগঞ্জ

ফরিদগঞ্জে এনজিও কর্মীদের বেপরোয়া আচরণ

দেশে চলমান করোনা মহামারিতে নানা পেশার শ্রমজীবী থেকে শুরু করে সাধারন ব্যবসায়ী ও দিনমজুর মানুষের মধ্যে চলছে এক প্রকার অভাবের হাহাকার। সাধারণ মানুষের হাতে যে জমানো মূলধন ছিল তা অনেক আগে খেয়ে বসে আছে। করোনাকালীন লকডাউন শেষ হলেও পূর্বের সেই কাজের মত আয় না থাকায় অনেকটা ব্যয়কাদায় পড়েছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষ।

এরই মধ্যে যেসব মানুষের কিস্তি রয়েছে তাদেরকে প্রতিনিহিত চাপ দিচ্ছে, গালিগালাজ করছে, হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ এনজিও কর্মীদের বিরুদ্ধে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফরিদগঞ্জের গল্লাক, শ্রীকালিয়া, সুবিদপুর, কামতা, আষ্টাসহ প্রায় ১০/১২টি গ্রামের শতাধিক গ্রাহকের অভিযোগ তিন এনজিওর বিরুদ্ধে। এরা হলেন, ব্র্যাক বাবুর হাট শাখা, সাজেদা ফাউন্ডেশণ গল্লাক শাখা ও চান্দ্রা শিক্ষিত বেকার সমবায় সমিতি মুন্সীর হাট শাখা।

এসব শাখার মাঠ কর্মীরা প্রতিনিহিত কিস্তির টাকার জন্য গ্রাহকদের মোবাইলে হুমকি, বাড়িতে গিয়ে ঘরে গালিগালাজ, ইজ্জত নিয়ে টানা হিছড়ার মত ঘটনার জন্ম দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

চলতি বছরের ২৩ জুন ২য় বারের মত সরকারের মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অর্থরিটির নির্বাহী পরিচালক লক্ষন চন্দ্র দেবনার্থ এর স্বাক্ষরিত পত্রে উল্লেখ, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত কোন ব্যাংক বা এনজিও গ্রাহকদের কাছ থেকে জোরপূর্বক কিস্তি নিতে পারবে না। কেউ যদি স-ইচ্ছায় দিতে সম্মত হয়, তাহলে কেবল নেওয়ার অনুমতি আছে।

সরকারের নির্দশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এ দুই এনজিও ও এক সমবায় সমিতির মাঠ কর্মীরা গ্রাহকদেরকে হয়রানি করে আসছে। তাদের বাড়িতে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থেকে বিরক্ত ও সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে আসছে। তাদের ভয়ে করোনাকালীন সময়ে কয়েকটা কিস্তি দিলেও এক দুই কিস্তির টাকার পুনরায় জমে গেলে চলে তাদের উপর মানুষিক অত্যাচার।

এসব প্রসঙ্গে সুবিদপুর মুন্সী বাড়ির দেলোয়ার হোসেন, একই গ্রামের জাকির হোসেন ও নুসরাত জাহান সুমী, গল্লাক বাজারের লিঠন কুরী, আলী হোসেন, আষ্টা বাজারের বাবলুসহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো প্রায় ১৫/২০ জন গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, এ অঞ্চলে সাজেদা ফাউন্ডেশন ও ব্র্যাক এনজিও এবং শিক্ষিত বেকার সমবায় সমিতির মাঠ কর্মীরা প্রতিনিহিত কিস্তির টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে। টাকার জন্য বিভিন্ন খারাপ ভাষায় গালিগালাজ থেকে শুরু করে হুমকি, উঠিয়ে নিয়ে যাবে, ঘর বিক্রি করবে, বাড়ির মহিলাদের ইজ্জত নিয়ে পর্যন্ত টানাটানি অবস্থা করে বসে।

গ্রাহকরা আরো বলেন, করোনার এ সময়টা খুবই খারাপ যাচ্ছে, তেমন কোন কাজ নেই, ব্যবসায় কোন উন্নতি নেই, হাতে কোন টাকা নেই। এদিকে কেউ নতুন কোন ঋণ না দেওয়ায় আয়ের পথ বাহির করার সুযোগ পাচ্ছি না।

এসব এনজিও কর্মীদের অশালীন গালিগালাজ বন্ধ করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার দাবি জানাই এবং চলতি বছরে বাকী দুই মাসে যেন কোন হয়রানী না করে এ জন্য প্রশাসন ও সরকারের কাছে জোরদাবি প্রত্যাশা কামনা করি।

এ বিষয়ে সাজেদা ফাউন্ডেশনের ফিল্ড অফিসার রতন মিয়া বলেন, নির্দশনা এখন কার্যকর নেই, যে কারনে আমাদের শতভাগ কিস্তি আদায় করতে হচ্ছে। গ্রাহকদের সাথে আমরা কেন খারাপ আচরণ করবো, টাকা পাই তা চাওয়াটা কোন অপরাধ নয়।

প্রতিবেদক:জহিরুল ইসলাম জয়,১৪ অক্টোবর ২০২০

Share