আজ ৩০ ডিসেম্বর রোববার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন।
আজ সকল কেন্দ্রে ব্যালট বাক্সসহ ভোটগ্রহণের সকল সরঞ্জামাদি প্ৗেছে যাবে। কেন্দ্রগুলো আজ রাত থেকেই কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনিতে থাকবে। নির্দিষ্ট সময় থেকেই যাতে ভোটাররা ভোট দিতে পারে সে প্রস্তুতি রাতের মধ্যেই শেষ করা হয়েছে।
চাঁদপুর জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুরের পাঁচটি আসনে মোট ভোট কেন্দ্র হচ্ছে ৬৭৮। এসব কেন্দ্রে বুথ তথা কক্ষ সংখ্যা হচ্ছে মোট ৩ হাজার ৪শ’ ৮১টি। জেলায় মোট ভোটার হচ্ছে ১৮ লাখ ৫ হাজার ৯শ’ ২৬ জন।
এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, জাকের পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট, ইসলামী ঐক্যজোট, বাসদ, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, তরিকত ফেডারেশন, মুসলিম লীগ এবং গণফোরাম মনোনীত প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী কয়েকটি আসনে পৃথকভাবে থাকলেও তারা ইতঃমধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
মহাজোট, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চাঁদপুর জেলার পাঁচটি আসন থেকে নির্বাচন করলেও অন্য দলগুলো সবগুলো আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে না। ইসলামী ফ্রন্ট তিনটি, জাকের পার্টি তিনটি ও বাসদ ২টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এছাড়া অন্য দলগুলো একটি করে আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। সব মিলিয়ে জেলার পাঁচটি আসনে মোট প্রার্থী হচ্ছে ৩৫ জন। এ ৩৫ প্রার্থীর মাঝে আগামীকাল হবে ভোটযুদ্ধ। সর্বশেষ কোন্ পাঁচজন জয়ের মালা পরবেন তা কাল রাতেই জানা যাবে।
নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করার জন্যে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনায় চাঁদপুরের প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। একই সাথে নির্বাচনকে বানচাল, প্রশ্নবিদ্ধ অথবা বিতর্কিত করতে যে কোনো মহলের ষড়যন্ত্র কিংবা নাশকতাকে নস্যাৎ ও মোকাবেলা করতে প্রশাসনসহ সরকারের সকল এজেন্সী সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থাসহ সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশকে সহযোগিতা করতে সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা সর্বদা তৎপর। র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনী জেলার পাঁচটি সংসদীয় এলাকায়ই টহল দেয়াসহ অবস্থান করছে। উদ্দেশ্য হচ্ছে- সাধারণ ভোটাররা যেনো নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে আর সন্ত্রাসী ও অপরাধীরা যাতে অসৎ উদ্দেশ্য পরিহার করে।
চাঁদপুরে জেলার ৫ নির্বাচনি আসনে ৮টি উপজেলা ,৭টি পৌরসভা ও ৮৯ টি ইউনিয়নে ৬’শ ৭৮ কেন্দ্রে ১৮ লাখ ৭ হাজার ৯ শ’ ৮৪ জন ভোটার রোববার (৩০ ডিসেম্বর) ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১ ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত হাল নাগাদ ভোটার পরিসংখ্যান অনুযায়ী চাঁদপুর জেলা নির্বাচন কমিশন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
প্রাপ্ততথ্য মতে, জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মতে ,জেলা প্রশাসকগণ রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও জেলার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রতি কেন্দ্রে ১ জন প্রিজাইডিং, প্রতি কক্ষে ১ জন সহকারী প্রিজাইডিং ও ২ জন পোলিং অফিসার ভোট গ্রহণের কাজে নিয়োজিত থাকবেন। ফলে চাঁদপুরের ৫ আসনে ৬শ৭৮ টি কেন্দ্র , ৩ হাজার ৪ শ’ ৮১ টি কক্ষ বা বুথ রয়েছে।
পুলিশ বিভাগের প্রতি কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ ও আনসার বিডিপি সদস্যগণ কেন্দ্র নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও মোবাইল টিমে সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ড ও পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের সদস্যগণ দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা যায়।
চাঁদপুর -১ (কচুয়া) আসনে ১্র টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নে ১’শ৮টি ভোট কেন্দ্র ও ৪’শ ৯৬টি ভোট কক্ষ রয়েছে। ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৬৫ হাজার ৯’শ ৬৬ জন। পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৩৪ হাজার ২’শ ৯২ জন এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬’শ ৭৪ জন। ফলে ১’শ ৮ জন প্রিজাইডিং ,সহকারী প্রিজাইডিং ৪’শ ৯৬ জন ও ৯’শ ৯২ জন পোলিং অফিসার ভোট গ্রহণের দায়িত্ব পালন করবেন। প্রার্থীর সংখ্যা ৭ জন।
চাঁদপুর -২ (মতলব উত্তর-দক্ষিণ) আসনে ২ টি পৌরসভা ও ২০টি ইউনিয়নে ১’শ ৫৪ টি ভোট কেন্দ্র ও ৭’শ ১৯ টি ভোট কক্ষ রয়েছে। ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৯’শ ৪৬ জন। পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৯৮ হাজার ৬’শ ১৮ জন এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৯৪ হাজার ৭’শ ২৮ জন।ফলে ১’শ ৫৪জন প্রিজাইডিং , সহকারী প্রিজাইডিং ৭’শ ১৯ জন ও ১ হাজার ৪’শ ৩৮ জন পোলিং অফিসার ভোট গ্রহণের দায়িত্ব পালন করবেন। প্রার্থীর সংখ্যা ৬ জন।
চাঁদপুর – ৩ (সদর-হাইমচর) আসনে ১টি পৌরসভা ও ২০টি ইউনিয়নে ১’শ৫৭টি ভোট কেন্দ্র ও ৮’শ ৬৭ টি ভোট কক্ষ রয়েছে। ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৩০হাজার ৪’শ জন।পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ২২ হাজার ৯৬ জন এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৮ হাজার ৩’শ ৪ জন।ফলে ১’শ ৫৭জন প্রিজাইডিং,সহকারী প্রিজাইডিং ৮’শ ৬৭ জন ও ১হাজার ৭’শ ৩৪ জন পোলিং অফিসার ভোট গ্রহণের দায়িত্ব পালন করবেন। প্রার্থীর সংখ্যা ৭ জন।
চাঁদপুর -৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে ১টি পৌরসভা ও ১৫টি ইউনিয়নে ১’শ ১৮টি ভোট কেন্দ্র ও ৬’শ ১৪ টি ভোট কক্ষ রয়েছে। ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৯ হাজার ৭’শ ৭৬ জন। পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৫৭ হাজার ৮’শ ৮ জন এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৫১ হাজার ৯’শ ৬৮ জন। ফলে ১’শ ১৮জন প্রিজাইডিং ,সহকারী প্রিজাইডিং ৬’শ ১৪ জন ও ১২’শ ২৮জন পোলিং অফিসার ভোট গ্রহণের দায়িত্ব পালন করবেন। প্রার্থীর সংখ্যা ৯ জন।
চাঁদপুর -৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) আসনে ২ টি পৌরসভা ও ২২টি ইউনিয়নে ১’শ ৪১ টি ভোট কেন্দ্র ও ৭’শ ৮৫ টি ভোট কক্ষ রয়েছে। ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮ হাজার ৪’শ ৯৬ জন।পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ৫ হাজার ২’শ ৫০ জন এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৩ হাজার ২’শ ৪৬ জন। ফলে ১’শ ৪১ জন প্রিজাইডিং ,সহকারী প্রিজাইডিং ৭’শ ৮৫ জন ও ১ হাজার ৫’শ ৭০ জন পোলিং অফিসার ভোট গ্রহণের দায়িত্ব পালন করবেন। প্রার্থীর সংখ্যা ৬ জন।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮