চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে বেড়ীবাঁধের বাহিরে অবৈধ ট্রাক্টর দিয়ে ফসলি জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কেটে নিচ্ছে এলাকার প্রভাবশালীরা। ফসলি জমিতে ডেকো মেশিন বসিয়ে অবৈধ ট্রাক্টর এর মাধ্যমে মাটি কেটে নেওয়ায় এসব জমির বিভিন্নস্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।মাটি কেটে নেয়া ওইসব জমিতে এবার ফসল ফলাতে পারছেন না স্থানীয় কৃষকরা । সেই সাথে বেড়ীবাঁধের বাহিরের রাস্তাগুলো অবৈধ ট্রাক্টর চলাচলে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে।
সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা যায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৩নং ও ৪নং সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়নের উভারামপুর ও নূরপুর, ভূলাচোঁ গ্রামের কৃষি মাঠে।
জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে টোরামুন্সীর হাটে ইউ এন বি, বি জে কে, এম এন্ড বি ঝিকঝাক ও হাবিব ইট ভাটাসহ প্রায় ১০ টি ভাটায় ইট তৈরির কাজে এসব কৃষি মাঠ থেকে একাধারে অবৈধ ট্রাক্টরের মাধ্যমে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব অবৈধ ট্রাক্টর মালিক সাচনমেগের খোরশেদ, জাহাঙ্গীর মজুমদার, কাইতড়া গ্রামের কামাল, সাইফুল, নূরপুর সালাউদ্দিন, উভারামপুরের আলমগীর হোসেন।
ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিক ইউসুফ, হারুন, মাসুদ ও রফিকসহ কয়েকজন কৃষক বলেন, ‘মুন্সীর হাটের ইট ভাটার মালিক ফরিদ হোসেন, হান্নান মিয়া, সুমন মিয়াসহ এক দল দালাল ভেকো মেশিন দিয়ে তাদের জমি থেকে মাটি উত্তোলন করে নিচ্ছে।
আর এতে করে কৃষি মাঠের জমির চাষাবাদ করতে না পেরে বাধ্য হয়ে তাদের কাছে মাটি বিক্রি করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।
ইতিপূর্বে জমির কয়েকজন মালিক মাটি উত্তোলন বন্ধ করতে বললে ভূমিদস্যুরা তাদেরকে হুমকি প্রদান করেছে। এ বিষয়ে তারা গত বছরে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও কোন সুরাহ পাইনি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তারা আরো বলেন, ‘এসব ভূমিদস্যুদের অবৈধ ট্রাক্টর গ্রামীন রাস্তা দিয়ে প্রতিনিহিত চলাচলের ফলে এলাকা সাইটের জমি ও রাস্তা-ঘাট ভেঙ্গে যাওয়ার পরিণত হয়েছে। কিন্তু ভূমিদস্যুরা গত মাসখানেক ধরে ফসলি জমির মাটি কেটে পুরো এলাকায় পুকুরে পরিণত করে ফেলেছে। তাই জরুরী ভিত্তিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য সংশিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাাসী।
সরেজমিন গিয়ে আরো দেখা যায়, দৈনিক উভারামপুর, নূরপুর, ভূলাচোঁ এলাকায় প্রায় ১০/১২ টি অবৈধ ট্রাক্টর মাটি উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এসব অবৈধ ট্রাক্টর চালক মাহাবুব, খলিল, কামাল, রুবেল, পিন্টু ও জাহাঙ্গীর মাঝির অত্যাচারে এলাকার সাধারন পথযাত্রী অতিষ্ট হয়ে পড়েছে।
গ্রামীন রাস্তা দিয়ে যখন এসব দানব ট্রাক চলাচল করে তখন পেছনের দিক ধুলা বালিতে আস-পাশের বসবাসরত ঘর-বাড়ি, দোকান পাট, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ পথযাত্রীদের চেহারা যেন বুজার উপায় থাকে না। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন ভুক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শহিদ হোসেন বলেন, বিষয়টি নজরে এসেছে আমরা অবশ্যই অবৈধ ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো। সেই সাথে যদি মোবাইল কোর্টের ব্যবস্থা করা যেত তাহলে আইনের ব্যত্যয় ঘটবে না।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিউলী হরি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক বা ভুক্তভোগীদের মাধ্যমে লিখিত অভিযোগ পেলে ভাল হতো, তার পরেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।
প্রতিবেদকঃ জহিরুল ইসলাম জয়, ১৩ জানুয়ারি ২০২২