আমার বাবা মো: নাছির উদ্দিন (এফএফ) ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে ২ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন। জীবন বাজি রেখে এ দেশের যে দামাল সন্তানেরা স্বাধীনতা এনেছেন, তিনি তাদের একজন; কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার ৪৫ বছর পরও মুক্তিযোদ্ধা সনদ অর্জনে ব্যর্থ হয়েছেন।
পাকিস্তানি হানাদারদের পরাজিত করে স্বাধীনতার লাল-সবুজ পতাকা হাতে মায়ের কোলে ফিরে ছিলেন তিনি। পরে প্রবাসে পাড়ি জমান। একসময়ে দেশে ফিরে একটি চাকরি নিলেও অল্প আয়ে পরিবারের ব্যয় বহন এখন তার জন্য কষ্টসাধ্য। অনেক কষ্টের মধ্যে তবুও ছেলেমেয়েদের গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। সংসারে অনটন থাকায় সময়ের অভাবে যুদ্ধকালীন সাথীদের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারেননি। তিনি চাকরি শেষ করে অবসরে রয়েছেন।
তিনি অনেকবার মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন দফতরে যোগাযোগ করেও সফল হননি। সরকারের মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট নেয়ার জন্য তাকে বিভিন্ন দফতরে ধরনা দিতে হচ্ছে। অন্য দিকে তার সহযোদ্ধারা সবাই সার্টিফিকেট পেয়েছেন। তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের কাছে আকুতি জানিয়েছেন, শেষ বয়সে তাকে যেন মুক্তিযোদ্ধার সম্মানটুকু দেয়া হয়। এতে তিনি মরেও শান্তি পাবেন। তার মুক্তিযুদ্ধের সনদসহ সব কাগজপত্র ও প্রমাণ সংরক্ষিত আছে।
মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাইটার্সের (এফএফ) পরিচয়পত্র মো: নাছির উদ্দিনের আছে, যা ইস্যু করেছিলেন ফরিদগঞ্জ থানা এফএফ অধিনায়ক।
২০১১ সালের ১২ আগস্ট চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৬ নম্বর গুপ্পি (পশ্চিম) ইউনিয়ন ইউনিট কমান্ড তাকে প্রত্যয়নপত্র দিয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে। সর্বোপরি তার রয়েছে মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনীর অধিনায়ক জেনারেল মুহাম্মদ আতাউল গনি ওসমানী স্বাক্ষরিত সনদপত্র। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, মো: নাছির উদ্দিন ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর সৈনিক। তিনি ২ নম্বর সেক্টরে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তার অবদান চির উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।’
নিবেদক,
মো: সাইফ উদ্দিন
ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর।
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০২:০০ পিএম, ৩০ জুলাই ২০১৬, শনিবার
ডিএইচ