বিশেষ সংবাদ

ফরিদগঞ্জের রূপসা উচ্চ বিদ্যালয়টি একটি ‘ শিক্ষার বাতিঘর ’

ফরিদগঞ্জের রূপসা গ্রামে অবস্থিত রূপসা আহম্মদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ১শ’৪ বছর ধরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে চলছে। বিদ্যালয়টি শিক্ষা,সংস্কৃতি,স্কাউটিং ও ক্রীড়াসহ সকল ক্ষেত্রেই সাফল্য লাভে পরিচিতি পেয়েছে। তৎকালীন সময়ের মেঘনা নদীর পূর্ব পাড়ে ঐতিহ্যবাহী জমিদার বংশের প্রয়াত আহম্মদ চৌধুরী,আ.লতিফ চৌধুরী ও আ.হাই চৌধুরীর যৌথ উদ্যোগে বিদ্যালয়টি ১৯১৩ সনে ৫ একর ৪০ শতক ভূমির ওপর প্রতিষ্ঠিত করেন।

পরবর্তীতে ১৯১৫ সনে বিদ্যালয়টি স্বীকৃতি লাভ করে। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধানশিক্ষক ছিলেন শ্রী রাজেন্দ্র বাবু । এ পর্যন্ত ১৫ জন প্রধানশিক্ষক দায়িত্ব পালন করেন। তন্মধ্যে ৩৫ বছর যাবত দায়িত্বে ছিলেন প্রধানশিক্ষক নূরুল ইসলাম ভূঁইয়া। গাজী মজিবুর রহমান ১২ বছর স্কুলটির প্রধানশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং সার্বিক উন্নতিকরণে প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন।

বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ৩ টি ভবনে ১৪টি শ্রেণি কক্ষে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। সহ¯্রাধিক ছাত্র-ছাত্রী ও ১৭ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে জমিদার বংশের উত্তরসূরি ছৈয়দ নসরুল্যাহ চৌধুরী ৩ যুগ ধরে একটানা সমালোচনার ঊর্ধে থেকে সুষ্ঠু ও সুচারুভাবে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

বিদ্যালয়টি জেএসসি ও এসএসসিতে ফি-বছর সন্তোষজনক ফলাফলের পাশাপাশি ২০১০ সনে কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে ১০ম মেধা তালিকার গৌরব অর্জন করে।

জ্ঞান ও শিক্ষা বিস্তারের বাতিঘর হিসেবে পরিচিত বিদ্যালয়টির বিশেষ কিছু বিশেষত্ব দিক রয়েছে । সেগুলো হলো শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে -স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে ডিজিটাল হাজিরা পদ্ধতি,শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব,শিক্ষার্থীদের জন্যে রয়েছে আর্নিং ও লার্নিং ব্যবস্থা,নিয়মিত প্রজেক্টরের মাধ্যমে ডিজিটাল পাঠদান ,ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের জন্যে মনোরম পরিবেশের ক্যান্টিন ,বিজ্ঞানাগার ও উপজেলার সর্ববৃহৎ দৃষ্টিনন্দন খেলার মাঠ।

এ বিদ্যালয় থেকে শিক্ষালাভ করে এলাকার অনেকেই দেশ ও জাতির সেবায় ব্রত হয়েছেন। বর্তমানে যাঁরা বিভিন্ন পর্যায়ে আছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বাসদের কেন্দ্রীয় সভাপতি খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া,কবি ও লেখক মো.কামরুজ্জামান ভূঁইয়া,সাবেক উপ-সচিব বদিউল আলম,বাংলাদেশ ব্যাংকের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা হিসেবে আবুল কালাম,আনিছুর রহমান ,বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মো.কবির হোসেন প্রমুখ। এ দিকে বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত রয়েছেন সিজান অভি ও জান্নাতুল রাফেয়া ।

উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধানশিক্ষকের গৌরব অর্জনকারী বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধানশিক্ষক মো. বশির আহমদ বিএসসি’র সাথে বিদ্যালয়টির সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে কথা হলে তিনি জানান, ‘ দাতা সদস্য রূপসা জমিদার পরিবারের সদস্য ও তরুণ সমাজসেবক ছৈয়দ মেহেদী হাসান চৌধুরীর অনুপ্রেরণায় ও দক্ষ ম্যানেজিং কমিটির তত্ত্বাবধানে বিদ্যালয়টি একটি শিক্ষা কমপ্লেক্্র হিসেবে সফলতার পথে এগিয়ে চলছে।

বিদ্যালয়ের বর্তমানে একাডেমিক শ্রেণি কক্ষের সমস্যা,একটি বহুতল ভবন এবং প্রতিষ্ঠাকালীন শতবর্ষী টিন শেড ভবনটি পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ হওয়ায় ঝুঁকির মধ্যে পাঠদান কার্যক্রম চলছে। এ ছাড়াও একটি অডিটরিয়াম ও একটি মসজিদের প্রয়োজন। ’

তিনি আরো জানান, শিক্ষার পাশা-পাশি খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক,স্কাউটিং ও জাতীয় দিবসগুলোর কর্মকান্ডে উপজেলা পর্যায়ে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ দায়িত্ব পালনে অত্যন্ত যতœশীল ও আন্তরিক। শিক্ষক-শিক্ষার্থী,অভিভাবক ও এলাকার সকল শ্রেণিপেশার মানুষের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি এলাকায় ‘ শিক্ষার আলোর বাতিঘর ’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করছে ।

প্রতিবেদক : সফিউল আলম
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৭ : ২৫ পিএম, ১৩ মে ২০১৭, শনিবার
এজি

Share