আওয়ামী লীগের রাজনীতির সুবাদে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ বছরের দ্বন্ধ সংঘাত নিয়ে ফরিদগঞ্জে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী দুই নেতা এসেছেন বর্ধিত সভায়। অবশেষে উপজেলা আওয়ামী লীগের শনিকার অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় দুই নেতা উপস্থিত হওয়ায় বর্ধিত সভাটি প্রানবন্ত হতে দেখা গিয়েছে। এই দুই নেতা হলেন ফরিদগঞ্জের সাংসদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহম্মদ শফিকুর রহমান এবং সাবেক সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ড: মোহাম্মদ শামছুল হক ভুঁইয়া।
এ নিয়ে দলের নেতাকর্মী ও স্থানীয়া প্রশ্ন তুলে বলছে ওই ২ প্রভাবশালী নেতা কি অবশেষে দলের স্বার্থে কি ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন ?
তবে উক্তত সভায় উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এডভোকেট জাহিদুল ইসলাম পবিত্র হজ্ব পালনের উদ্দেশ্য ব্যক্তিগত ব্যস্ততা ও বর্তমানে শারীরিক অসুস্থতার কারনে বর্ধিত সভায় উপস্থিত হতে পারেনি বলে তার সমর্থীরা জানিয়েছেন।
এদিকে বর্ধিত সভায় সাঁটানো ব্যানারে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক ছাড়াও অতিথি হিসেবে বর্তমান সাংসদ ও সাবেক সাংসদের নাম উল্লেখ না থাকায় দলীয় নেতাকর্মীরা এই ব্যানারের পক্ষে বিপক্ষে তাদের নানা মত প্রকাশ করছেন। তবে আয়োজকরা বলেছে, জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের দিক নির্দেশনা নিয়েই ব্যানার তৈরী করা হয়েছে। দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যের স্বার্থে শান্তিপূর্ন ভাবে বর্ধিত সভাটি সম্পন্ন করতে পারায় অনেকেই এখন স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারীর ডানে আর বামে বর্তমান সাংসদ ও সাবেক সাংসদ বসা ছিলেন। বক্তব্য দিয়েছেন দুজনই। উভয়ের বক্তব্যকেই কেউ কারো বিরুদ্ধে তেমন বিষেদাগার মূলক বক্তব্য না দিয়ে শুধু দলের ঐক্যের স্বার্থে সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। ওই দুই নেতাকে পাশাপাশি বসতে দেখা গেলেও কেউ কারো সাথে কথা বলতে দেখা যায়নি। সভার শুরুর আগে প্রথমে আসেন সাবেক সাংসদ ড: শামছুল হক ভুঁইয়া এর কিছুটা সময় পরই আসেন ফরিদগঞ্জের সাংসদ মুহম্মদ শফিকুর রহমান।
দুই নেতার উপস্থিত হওয়ার পরই উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় প্রাংগনে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন শেষে শুরু হয় সভার কাজ। সকাল ১১ টায় শুরু হওয়া সভাটি চলে একটানা বিকেল ৪ পর্যন্ত। নির্ধারিত সদস্যদের জন্য ছিল দুপুরের ভূরি ভোজের আয়োজন। সভা শেষে প্রথমে সাংসদ শফিকুর রহমান তার দলবল নিয়ে বিদায় নিয়ে বের হওয়ার পর সাবেক সাংসদ ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভুইয়াও তার দলবল নিয়ে বিদায় নিয়ে যান।
অপরদিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক প্রার্থী খাজে আহম্মেদ মজুমদারের নের্তৃত্বে একটি বিশাল মিছিল নিয়ে আসেন দলীয় কার্যালয়ের সামনে। ওই প্রভাবশালী দুই নেতারই অনুসারীরা দলবদ্ধ হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
বর্ধিত সভাটি শান্তিপূর্ন ভাবে সম্পন্ন করার স্বার্থে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শহীদ হোসেনের নের্তৃত্বে একদল পুলিশ অতন্ত্র প্রহরীর ন্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের পাশ্বেই অবস্থান করতে দেখা গেছে।
সবমিলে শান্তিপূর্ন ভাবে ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভাটি সম্পন্ন হওয়ায় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেখা দিয়েছে।
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ১৯ জুন ২০২২