তিনি রাজনীতিবিদ নয়। রাজনীতি করার ইচ্ছে ও নেই। রাজনীতির সুবাদে এমপি কিংবা মন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছে ও কখনোই পোষন করেন না । শুধু দেশ ও মানুষের কল্যানে নীরবে কাজ করে ব্যস্থ থাকেন তিনি। প্রচার বিমূখ এই মানুষটির বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার সাধারন মানুষ ও শিক্ষার্থীরা নানা সেবা গ্রহন করে যাচ্ছেন। সৎ ও মানবিক গুনাবলী সম্পন্ন ওই মানুষটি হলো দুদকের চেয়ারম্যান চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে চরহোগলা গ্রামের ইকবাল মাহমুদ।
দেশ ও মানুষের কল্যানের স্বার্থে নিরলস ভাবে কাজ করে আশা দুদকের চেয়ারম্যান বর্তমানে দূর্নীতিবাজদের কাছে মূর্তিমান এক আতংক হলেও সৎ ও সাধারন মানুষের কাছে তিনি প্রিয় ভাজন ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত।
নীরবে সেবা দেওয়া ইকবাল মাহমুদের শৈশব কেটেছে যে গ্রামে। তার গ্রামে শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের স্বার্থে ইকবাল মাহমুদের উদ্যেগে তার বাবা মৌলভী আবদুল লতিফ ২০১৩ সালে পাঠাগারটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছেন । শুধু তাই নয়, তার নানার বাড়ি একই উপজেলার ১৬ নং (দক্ষিন) রুপসা ইউনিয়নের আদর্শ সাহেবগঞ্জ গ্রামে ইকবাল মাহমুদের মামা খালা ও মা মোসাম্মৎ মাহফুজা বেগমের দান করা ৩৩ শতাংশ জায়গায় সরকারী ভাবে উপ স্থাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপনের জন্য স্থাপন করার সুযোগ করে দিয়ে সমাজ সেবায় বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন দুদুকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
সরেজমিনে খোজ নিয়ে জানা গেছে, এ উপজেলার পৌর এলাকায় চরহোগলা গ্রামে আসন আলী পাটওয়ারী বাড়ির মৌলভী আব্দুল লতিফের ৫ ছেলে ২ মেয়ের মধ্যে ইকবাল মাহমুদ দ্বিতীয় সন্তান। তার প্রয়াত দাদা ও বাবার নামে ওই গ্রামে প্রতিষ্টিত করেছেন ইয়াকুব-লতিফ পাঠাগার। ইকবাল মাহমুদের পৈত্রিক সম্পত্তি প্রায় ৯ শতাংশ জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করা ইয়াকুব-লতিফ পাঠাগারটি নির্মান হয়েছে। এর প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সাজাতে পারিবারিক সদস্যদের ব্যক্তিগত অর্থায়ানে পাঠাগারটি স্থাপিত হয়েছে। ইকবাল মাহমুদের ব্যক্তিগত উদ্যেগে প্রতিষ্ঠিত পাঠাগারটি নিজের বাড়ি ও পুরো গ্রামের এক অলংকার হয়ে আছে। পাঠাগারটিতে রয়েছে বিভিন্ন নামী দামী লেখকের প্রায় ৪ হাজার বই। দ্বি- তলা বিশিষ্ট ডুপ্লেক্স বাড়ির নীচ তলায় পাঠাগার আর দ্বিতীয় তলায় রয়েছে একটি ড্রয়িং রুম ও একটি রেষ্ট রুম। কম্পিউটার শিক্ষার জন্য পাঠাগারে একটি কম্পিউটারও রয়েছে। প্রতিদিনই বই পড়তে বিভিন্ন বয়সের শিক্ষার্থী ও এলাকার লোকজন যাচ্ছেন সেই পাঠাগারে।
শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মনোরম পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত ইয়াকুব-লতিফ পাঠাগারটি আংগিনায় রয়েছে বিভিন্ন ফুলের গাছ। কয়েকটি ফুল গাছে ফুটন্ত ফুল যেন হাত ছানি দিয়ে আগতদেরকে স্বাগত জানাচ্ছে। পাঠাগারটি ভেতরে প্রবেশ করেই দেখা গেলো দেয়ালের চারিদিকে সাাঁটানো জনগুরুত্বপূর্ন বিভিন্ন বাক্য। দেয়ালে সাঁটানো বাক্যেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ উক্তিগুলো হলো সবার উপরে দেশ এবং সবশেষে আমার অস্তিত্ব। পাঠাগারে সময় ব্যয় এবং বই পড়ে কেউ দেউলিয়া হয়ে যায় না। পিতামাতাকে ভক্তি করি। শিক্ষাকাল দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত। দেশের কাছে আমাদের ঋন আছে। জ্ঞান ই শক্তি।
Honesty is the best policy (সততাই সেরা নীতি) ইয়াকুব-লতিফ পাঠাগারটি পরিচালনার জন্য গঠিত কমিটির সভাপতি আবদুল আউয়াল ও সাধারন সম্পাদক মোঃ ফরিদুল আলম বলেন, দেশ ও মানুষের কল্যানের স্বার্থে নিরলস ভাবে কাজ করা দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের শত ব্যস্থতার মধ্যে থেকেও নিজের গ্রামে পাঠাগার প্রতিষ্ঠিত করে সমাজ সেবায় যে বিরল দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন তা সমাজ সেবায় এক অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে আজীবন। প্রতিদিন বিকেলে ৩ টা থেকে ৬ টা পর্যন্ত পাঠাগারটি খোলা থাকে। সাপ্তহিক বন্ধ থাকে মঙ্গলবার।
এ নিয়ে পৌর সভার মেয়র মাহফুজুল হক বলেন, এই ফরিদগঞ্জে দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ যেভাবে নীরবে নিভৃতে দেশ ও মানুষের কল্যানে যে ভাবে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তা এই ফরিদগঞ্জের কৃতি সন্তান হিসেবে আমরা গর্ব বোধ করি।
উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড জাহিদুল ইসলাম রোমান বলেন, দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ শুধু ফরিদগঞ্জের কৃতি সন্তান হলেও তিনি মূলত দেশের কৃতি সন্তান হিসেবে দেশের স্বার্থে যে অনন্য অবদান রেখে যাচ্ছেন তা সবার মধ্যেই এক অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত বলে আমি মনে করি। মহান এই ব্যক্তিটিকে নিয়ে আমরা সর্বদা সবাই গর্ববোধ করি।
গত কয়েকমাস পূর্বে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খাঁন পাঠাগারটি পরিদর্শন শেষে দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের মহৎ এই উদ্যেগের প্রশংসা করেছেন।
শিমুল হাছান