ফরাক্কাবাদ ডিগ্রি কলেজে ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার উদ্বোধন

চাঁদপুর সদর উপজেলার ফরাক্কাবাদ ডিগ্রি কলেজে ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার উদ্বোধন এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

১৩ আগস্ট শনিবার বিকেলে কলেজ মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।

ফরাক্কাবাদ ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যান সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মো.মিলন মাহমুদ। কলেজের সহকারি অধ্যাপক হাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় আমন্ত্রিত অতিথিদের ধন্যবাদজ্ঞাপন করেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ চন্দ্র দাস।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন,‘বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্ম থেকে তোমাদের অনেক কিছু শেখার রয়েছে। পরাধীন ভূখন্ড থেকে আজকের এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ বিনির্মাণে তিনি নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। আমি মনে করি, বাংলাদেশকে জানতে হলে বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে।’

জেলা প্রশাসক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য বলেন,‘তোমাদের কেবল শিক্ষা থাকলেই হবে না। দক্ষতা থাকতে হবে। বিশ্ব এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের পথে। এই চতুর্থ শিল্পবিপ্লব সম্পর্কে তোমাদের জানতে হবে। আমাদের দেশের কর্মজীবী মানুষদের বড় একটা অংশ প্রবাসে শ্রম দেন। বর্তমানে দেশের রেমিটেন্স আয়ে চাঁদপুর জেলা চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু অপ্রিয় সত্য হলো এ রেমিটেন্স যোদ্ধাদের বেশিরভাগ শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। অথচ আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারত দক্ষ জনশক্তি রফতানি করছে। তাই আমাদেরও দক্ষ জনশক্তি প্রয়োজন। আমাদের দক্ষতাকে সেই পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে।’

তিনি বলেন,‘তোমাদের মধ্যে এখন তারুণ্যের আবেগ রয়েছে। এই আবেগের বেগকে ধরে রাখতে হলে পড়ালেখা করতে হবে। কারণ, আমার দক্ষতা আমার সম্পদ। আর আমাদের সবার দক্ষতা দেশের সম্পদ। শোককে শক্তিতে পরিনত করতে হবে। বঙ্গবন্ধু যে স্নপ্ন দেখিয়েছেন, তা বাস্তবায়ন করতে হবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার মিলন মাহুমদ বলেন,‘বঙ্গবন্ধু ছাত্রজীবন থেকেই প্রচন্ড মেধাবী এবং প্রতিবাদি ছিলেন। তিনি নিজেকে গড়ে তুলেছেন সৎ এবং আদর্শবান হিসেবে। বঙ্গবন্ধুর জীবনে কখনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করেনি। তিনি সব সময় নীতি এবং আদর্শের প্রতি অবিচল ছিলেন। আজকের এ দিনে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে এই মহান মানুষটিকে স্মরণ করছি।’

সভাপতির বক্তব্যে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যান সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন,‘ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় নিজেকে উৎসর্গ করে গেছেন। তিনি একটি উন্নত সমৃদ্ধ এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্নপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি সেটি চায়নি। আর চায়নি বলেই তারা বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তারা শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেতে চায়নি, তারা চেয়েছিলো বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং এদেশের সার্বভৌমত্বকে হত্যা করতে।’

সুজিত রায় নন্দী আরো বলেন,‘ আজকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায তাঁরই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দিচ্ছেন। একটি উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে তিনিও নিজের জীবনবে বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছেন। তোমরা যারা নতুন প্রজন্ম তাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। তোমাদের সোনার মানুষ হতে হবে। ভালো মানুষ হতে হবে। তবেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবে।’

ফরাক্কাবাদ ডিগ্রি কলেজের বিষয়ে তিনি বলেন,‘এ প্রতিষ্ঠানটি চাঁদপুর জেলার একটি অন্যতম আলোকিত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠান নিয়ে যারা চক্রান্ত করছে,তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা কোন অন্যায়ের কাছে মাথা নত করার মত না। তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছি।’

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসিফ মহিউদ্দিন, চাঁদপুর এনআসআই এর ডিডি শেখ আরমান আহমেদ, চাঁদপুর জেণা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়র আব্দু্র রব ভুইয়া, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাড.জহিরুল ইসলাম, চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রশীদ, কলেজের বিদ্যোৎসাহী সদসৌ বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল হক মজুমদার, বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল্যা পাটোয়ারি, ফরাক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক মো.হান্নান মিয়াজী, সাবেক হিতৈষী সদস্য হারুন আর রশিদ তালুকদার, সাকেক অভিভাবক সদস্য সেলিম পাটোয়ারি।

আশিক বিন রহিম
১৩ আগস্ট ২০২২
এজি

Share